দেশের ভূমি ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনার লক্ষ্য নিয়ে প্রণীত হচ্ছে ‘ভূমি ব্যবহার স্বত্ব আইন’ ও ‘ভূমি অপরাধ, প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’। নতুন আইনের আওতায় সাত ধরনের দলিল অকার্যকর ঘোষণা করা হবে। এতে রয়েছে রেজিস্ট্রিবিহীন দলিল, অবৈধ দলিল এবং সিল–সাক্ষরবিহীন দলিলসহ অন্যান্য দলিল। ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব দলিল আইনের দৃষ্টিতে বৈধ নয় এবং সরকারকে কোনো রাজস্ব দেয় না। তাই নতুন আইন কার্যকালে এগুলো অকার্যকর হবে।
আইন অনুযায়ী, জমি ক্রয়-বিক্রয়, হেবা বা দান, বন্ধক, উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে বাটোয়ারা—সব ধরনের দলিল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রি করা বাধ্যতামূলক। রেজিস্ট্রি ছাড়া কোনো দলিল বৈধ হবে না। বায়না দলিলের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। রেজিস্ট্রি করতে জমির বিস্তারিত বিবরণ, মালিকানা ইতিহাস, সীমানা, নকশা, দাতা-গ্রহীতার তথ্য এবং প্রয়োজনীয় হলফনামা থাকতে হবে। সঙ্গে রেজিস্ট্রি ফি, কর, ভ্যাট ও আয়করসহ সব সরকারি চার্জ পরিশোধও বাধ্যতামূলক।
নতুন আইনে জাল খতিয়ান ও জাল দলিল তৈরি করে জমি দখলের প্রচলিত দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। খাস জমি জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করা হলে সেই দলিল বাতিল হবে। একইভাবে, ওয়ারিশদের অধিকার বঞ্চিত করে সম্পত্তি বিক্রি করা হলে সেটিও অকার্যকর হবে।
আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দ্রুত বিচার ও শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। দলিল জালিয়াতি, অবৈধ দখল ও প্রতারণার জন্য শাস্তি হিসেবে রয়েছে তিন মাস থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড। ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইন কার্যকর হলে দেশের ভূমি ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বাড়বে, জালিয়াতি কমবে এবং প্রকৃত মালিকানা সুরক্ষিত থাকবে।

