আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে র্যাবের টিএফআই সেলে বিরোধী মতাদর্শের লোকদের গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি করছে প্রসিকিউশন।
তবে পলাতক শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া জেডআই খান পান্না প্রথমে হাজির ছিলেন না। ট্রাইব্যুনাল তাঁকে তলব করলে মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে হুইলচেয়ারে করে উপস্থিত হন।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টা থেকে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্যানেলে শুনানি শুরু হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানি পরিচালনা করেন।
ট্রাইব্যুনাল প্রথমেই জিজ্ঞেস করেন, কেন তিনি আগেই হাজির হননি। জেডআই খান পান্না জানান, তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাজির হতে পারেননি, তবে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে লিখিতভাবে অনুপস্থিত থাকার কারণ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। পরে তিনি ট্রাইব্যুনালে আনকনডিশনালি ক্ষমা চেয়েছেন।
শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল বলেন, যেহেতু আপনার ক্লায়েন্ট হাজির হবেন না, তাই আপনি নিজেও আদালতে উপস্থিত থাকবেন না। এছাড়া জেডআই খান পান্না এক ভিডিও বার্তায় মন্তব্য করেছিলেন যে, তাঁর ক্লায়েন্ট আদালতকে মানেন না। এ মন্তব্যের প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল জিজ্ঞেস করলে তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন।
পরবর্তীতে, শেখ হাসিনার পক্ষে লড়াই চালানোর জন্য ট্রাইব্যুনাল নতুন আইনজীবী নিয়োগের পরামর্শ চায়। শেষ পর্যন্ত মো. আমির হোসেনকে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, যিনি এর আগেও শেখ হাসিনার পক্ষে আইনি লড়াই করেছেন।
মামলায় গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তা হলেন র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
পলাতক আসামিরা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও র্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।

