সরকার জমির মালিকদের জন্য ‘ভূমি মালিকানা সনদ’ (Certificate of Land Ownership–CLO) চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এটি কিউআর কোড বা ইউনিক নম্বরযুক্ত ‘ভূমি স্মার্ট কার্ড’ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। নতুন ব্যবস্থায় এই সনদই হবে জমির চূড়ান্ত মালিকানার দলিল। একই সঙ্গে ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা পরিশোধেও এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে।
প্রস্তাবিত নতুন আইনে খাজনা পরিশোধে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। টানা তিন বছর ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করলে সংশ্লিষ্ট জমি বাজেয়াপ্ত হয়ে খাস সম্পত্তিতে পরিণত হবে।
আইনে জমি সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রেও কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। জমি নিয়ে জালিয়াতি বা অবৈধ দখলের প্রমাণ মিললে সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (আইন) মো. খলিলুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জমির মালিকানা নির্ধারণে ভূমি মালিকানা সনদই হবে একমাত্র চূড়ান্ত দলিল। মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর আইনটি কার্যকর হবে।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, জমির মালিকানা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই সনদ হালনাগাদ করতে হবে। জমি হস্তান্তরের পর নিয়ম অনুযায়ী নামজারি সম্পন্ন করতে হবে এবং ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ নিশ্চিত করতে হবে।
নতুন খসড়া আইনে কৃষিজমি সুরক্ষার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। দুই বা তিন ফসলি কৃষিজমি অধিগ্রহণ করা যাবে না। তবে জনস্বার্থে প্রয়োজন হলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে অধিগ্রহণ সম্ভব হবে। একই সঙ্গে সরকারি অনুমতি ছাড়া ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আইনের প্রস্তাবিত গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে—ভূমি মালিকদের জন্য স্মার্ট কার্ড চালু, তিন বছর খাজনা না দিলে জমি বাজেয়াপ্ত, অবৈধ দখলে কঠোর শাস্তি এবং কৃষিজমি অধিগ্রহণে কঠোর বিধিনিষেধ। নতুন এই আইন বাস্তবায়িত হলে ভূমি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল শৃঙ্খলা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জমি সংরক্ষণ ও মালিকানা নির্ধারণে স্বচ্ছতা বাড়বে।

