বান্দরবান জেলা পরিষদে ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে ৭২০ কোটি টাকার খাদ্যশস্য আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানিয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত দীর্ঘ ১৬ বছরে এই অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে। ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টন চাল এবং ৮০ হাজার টন গম।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এই দুর্নীতির সঙ্গে পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা এবং তিন কর্মকর্তার সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত কর্মকর্তারা হলেন-নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমান, উপসহকারী প্রকৌশলী থোয়াই চ মং এবং হিসাবরক্ষক উসাজাই মারমা।
দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. সুবেল আহমেদ জানিয়েছেন, কমিশনের নির্দেশ পাওয়ার পরপরই আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অনুসন্ধানের জন্য গত ৯ জানুয়ারি দুদকের পক্ষ থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। এ চিঠিতে কমিশনের পক্ষে উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান স্বাক্ষর করেন।
চিঠি অনুযায়ী, ১৫ জানুয়ারি দুদক দুই সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করে। টিমের প্রধান হিসেবে দায়িত্বে আছেন মো. সুবেল আহমেদ। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, খাদ্যশস্য প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন উন্নয়নকাজের নামে ভুয়া প্রকল্প দেখানো হয়েছে।
জেলা পরিষদের অধীনে লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ঠান্ডাঝিরি রাস্তা সংস্কার, ডলুঝিরি থেকে রাবার বাগান রাস্তা সংস্কার, মরুঝিরি বাঁধ সংস্কার, ডেসটিনি বাগান থেকে লম্বাশিয়া রাস্তা সংস্কারসহ বিভিন্ন কাজের প্রকল্প দেখানো হয়। এছাড়া ২ নম্বর ওয়ার্ডের দুস্থ মহিলাদের মাঝে হাঁস-মুরগি ও ছাগল বিতরণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বাস্তবে এসব কাজের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে সাবেক চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা এবং নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে দুদক কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
এই ঘটনা শুধু দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেনি বরং সরকারি সম্পদের অপব্যবহার কতটা গভীর হতে পারে, তা স্পষ্ট করেছে। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহল।