চট্টগ্রামের পটিয়ায় ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরিচ্যুতি ইস্যু ঘিরে এক বিরল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রবিবার (১০ আগস্ট) সকাল থেকে চাকরিচ্যুতরা একযোগে পটিয়া উপজেলার সরকারি ও বেসরকারি ২০টি ব্যাংকের প্রধান প্রবেশপথে তালা ঝুলিয়ে দেন, ফলে সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
ভোর ৭টার দিকে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শত শত চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়ো হন। সেখান থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল করে বিভিন্ন ব্যাংকের সামনে গিয়ে মূল ফটক বন্ধ করে দেন। সকাল ৯টার পর থেকে ব্যাংক কর্মকর্তা, কর্মচারী এমনকি গ্রাহকরাও ভিতরে প্রবেশ করতে পারেননি।
শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে রবিবার গ্রাহকের ভিড় ছিল বেশি। কিন্তু আন্দোলনের কারণে লেনদেন বন্ধ হয়ে পড়ায় সেবা নিতে এসে অনেকে বিপাকে পড়েন। জনতা ব্যাংকের পটিয়া শাখা ব্যবস্থাপক নাজিম উদ্দিন বলেন, “আজ গ্রাহকের চাপ বেশি ছিল। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে লেনদেন বন্ধ হয়ে গেছে।”
বিক্ষোভকারীদের দাবি, গত বছরের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ৭ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিনা নোটিশে ও অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। এর বেশিরভাগই পটিয়ার বাসিন্দা।
আন্দোলনকারী মফিজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, তারা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছেন এবং চাকরি পুনর্বহাল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আরেক বিক্ষোভকারী শিবলু আলম বলেন, “কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, ফলে আমি চরম অসহায় অবস্থায় আছি।”
পটিয়া থানার ওসি মো. নূরুজ্জামান জানান, পুলিশ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করছে এবং ব্যাংক খুলে দেওয়ার জন্য তাদের অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে জনগণের ভোগান্তি কিছুটা কমে।
এই পরিস্থিতিতে পটিয়ার ব্যাংকগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়েছে, আর গ্রাহক থেকে শুরু করে কর্মকর্তা—সবারই চোখ এখন সমাধানের অপেক্ষায়।

