যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর আংশিক সম্পদ বিক্রির অর্থ থেকে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার ফেরত চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)।
যুক্তরাজ্যের সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান গ্রান্ট থর্নটনকে পাঠানো চিঠিতে ব্যাংকটি অর্থ ফেরতের অনুরোধ জানিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, আদায় ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ইউসিবি একটি ফরেনসিক অডিট পরিচালনা করছে। এটি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত আগের পরিচালনা পর্ষদের সময়ে অনুমোদিত ও বিতরণ করা ঋণ নিয়ে করা হচ্ছে।
ইউসিবি জানিয়েছে, ওই সময়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী রুখমিলা জামান এবং কয়েকজন সহযোগী প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছেন। ব্যাংকের দৃঢ় বিশ্বাস, যুক্তরাজ্যের প্রপার্টি কোম্পানিগুলোও এই অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত।
ইউসিবি সাইফুজ্জামান, তার স্ত্রী এবং যুক্তরাজ্যের প্রপার্টি কোম্পানিগুলোর ব্যক্তিগত সম্পদের বিরুদ্ধে দাবি জানিয়েছে। ব্যাংক গ্রান্ট থর্নটনের অংশীদারদের সহায়তা করছে, যাতে যুক্তরাজ্যের বাকি প্রপার্টি কোম্পানিগুলো—বিশেষ করে অ্যারামিট প্রপার্টিজ লিমিটেড, রুখসমিলা প্রপার্টিজ লিমিটেড, জেডটিএস প্রপার্টিজ লিমিটেড ও নিউ ভেঞ্চারস (লন্ডন) লিমিটেডে প্রশাসক নিয়োগের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া যায়। প্রয়োজন হলে সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পদের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যের কিছু সম্পদ বিক্রি করে ঋণ পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছেন। গ্রান্ট থর্নটনের নিযুক্ত প্রশাসকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার কিছু আবাসিক সম্পত্তি বিক্রির, যার মধ্যে লন্ডন ও দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের বিভিন্ন শহরের বাড়ি রয়েছে। বিক্রির অর্থ দিয়ে ঋণদাতাদের পাওনা শোধ করা হবে। ঋণদাতাদের মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক ডিবিএস ব্যাংক ও ব্রিটিশ আরাব কমার্শিয়াল ব্যাংক।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন ছয়টি আবাসন কোম্পানি ইতোমধ্যেই প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় গেছে। এসব কোম্পানির মাধ্যমে দেশে তার বিভিন্ন সম্পদ পরিচালিত হতো। দ্য টেলিগ্রাফ জানাচ্ছে, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করার পর যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের সম্পদের তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। তার প্রপার্টির সংখ্যা তিন শতাধিক, যার মধ্যে বাড়ি, ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে। মোট মূল্য প্রায় ১৭ কোটি পাউন্ড। অভিযোগ রয়েছে, ব্রিটেনে অর্থ পাচার করে এসব সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের আবেদনের পর, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) গত জুনে সাইফুজ্জামানের কিছু সম্পদ জব্দ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে নর্থ লন্ডনের সেন্ট জনস উড এলাকায় ১১ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের বিলাসবহুল বাড়ি এবং সেন্ট্রাল লন্ডনের ফিটসরোভিয়া এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট।

