বাংলাদেশের গণমাধ্যম অঙ্গনে আবারও উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি এবং তার বাবা নাসির উদ্দিন সাথীর বিরুদ্ধে প্রতারণা, নির্যাতন ও জোরপূর্বক দখলের নানা অভিযোগ তুলে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ক্রাইম এডিশন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নাসির উদ্দিন সাথী মূলত মাই টিভির একজন কর্মচারী ছিলেন। কিন্তু সময়ের সাথে কৌশলে এবং প্রভাব খাটিয়ে তিনি নিজেকে টিভি চ্যানেলের চেয়ারম্যান দাবি করতে শুরু করেন। অথচ প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বিলকিস বেগম নামের এক নারী।
বিলকিস বেগম জানান, নাসির প্রথমদিকে সিডি সরবরাহের কাজ করতেন। ধীরে ধীরে আস্থার সুযোগ নিয়ে তিনি মাই টিভির ভেতরে অবস্থান তৈরি করেন। একসময় প্রভাব খাটিয়ে টিভির মালিকানা নিজের নামে দাবি করে বসেন। বিলকিস অভিযোগ করেন, “আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়, এমনকি রাস্তায় বের হতে দিলেও লোকজন হামলা চালায়। মাই টিভি থেকে আমাকে দূরে রাখতে নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে।”
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমানে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া সাথীর উত্থান মূলত প্রতারণা আর জবরদখলের ওপর দাঁড়িয়ে। শুধু মাই টিভি নয়, রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় বহু মানুষের জমি-বাড়ি দখল করে সেখানে মাই টিভির সাইনবোর্ড টাঙানোর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এক ভুক্তভোগী আইনজীবী কিবরিয়া জানান, তার পারিবারিক জায়গাও ২০১২ সালে নাসির সাথী দখলে নিয়েছিলেন। থানায় অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি তিনি। অন্য এক ভুক্তভোগী আলী হোসেন হাওলাদারও একই ধরনের অভিযোগ করেন।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো—প্রশাসনের নাকের ডগায় এত বড় দখলবাজি ও প্রতারণার ঘটনা ঘটলেও রাষ্ট্রীয় কোনো সংস্থার কার্যকর ভূমিকা এখনো দেখা যায়নি। এমনকি সাংবাদিকরা যখন মাই টিভির বর্তমান ভবনের ভিডিও ধারণ করতে যান, তখনও সাথীর বাহিনী তাদের আটকে রাখার চেষ্টা করে।
এমন ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে—একটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান দখল হয়ে গেলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন নিরব থাকে?