চুয়াডাঙ্গার ভিক্টোরিয়া জুবিলি (ভি.জে.) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয়তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ৮ কোটি ৯৪ লাখ ১৮ হাজার ৬০০ টাকা বরাদ্দকৃত এ প্রকল্পে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে স্টিলের বদলে বাঁশ ও কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে শাটারিংয়ের কাজে। এতে ভবনের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, পাশাপাশি ব্যস্ত স্কুল পরিবেশে দুর্ঘটনার শঙ্কা বাড়িয়েছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নির্মাণকাজের দায়িত্বে রয়েছে ঢাকার মিরপুরের প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিরন এন্টারপ্রাইজ। তবে কাজটি স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদার বাস্তবায়ন করছেন। ইতিমধ্যে ভবনের ভিত, সিঁড়ি ও প্রথম তলার ছাদ ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে। টেন্ডার অনুযায়ী ছয়তলা ভিতবিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের পাশাপাশি স্যানিটারি, পানি সরবরাহ ও বৈদ্যুতিককরণও সম্পন্ন করার কথা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রথম তলার ছাদ, বিম ও পিলারের শাটারিংয়ে স্টিল ব্যবহার না করে বড় অংশে বাঁশ ও নিম্নমানের কাঠ ব্যবহার হয়েছে। বিদ্যালয় খোলা থাকা অবস্থায়ই কাজ চলছে, কিন্তু নির্মাণ এলাকা ঘিরে কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই। এতে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক বলেন, এটি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে প্রতিদিন দুই শিফটে ক্লাস হয়। শিশুরা পাশে খেলাধুলা করে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটলে দায়ভার কে নেবে? তাদের অভিযোগ, বাঁশের শাটারিং খুলে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেসমিন আরা খাতুন স্বীকার করেছেন, শাটারিংয়ে বাঁশ ও কাঠ ব্যবহার হয়েছে। তিনি বলেন, “শিডিউল অনুযায়ী স্টিল ব্যবহারের কথা। আমি দেখার পর ইঞ্জিনিয়ারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাময়িকভাবে এসব ব্যবহার করা হয়েছে, ঢালাইয়ের সময় তুলে নেওয়া হবে। কিন্তু তারা তা করেননি।”
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আশরাফুল আলম রুবেল কোনো অনিয়মের কথা স্বীকার করেননি। তার বক্তব্য, “কাজে কোনো সমস্যা নেই, আপনার সমস্যা কী?”
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন বলেন, “ভবন নির্মাণের কাজ চলমান। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না। আমরা সতর্ক আছি। জেলা প্রশাসকের নজরেও বিষয়টি এসেছে, তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।”

