Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Thu, Nov 6, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বানিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • শিক্ষা
      • স্বাস্থ্য
      • প্রযুক্তি
      • ধর্ম
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে থামছেই না বিতর্ক
    অপরাধ

    সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে থামছেই না বিতর্ক

    নাহিদSeptember 22, 2025Updated:September 22, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মাহবুবা আইরিনের স্বাক্ষরে ১৪ সেপ্টেম্বর একটি সরকারি আদেশ (জিও) জারি হয়েছে। এতে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ফারুক হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সহকারী প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল) মোহাম্মদ নুরুজ্জামান এবং উপসহকারী প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল) মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে চীন ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সফরের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত, অথবা ছুটি শুরু হওয়ার তারিখ থেকে সাত দিনের জন্য।

    এ ভ্রমণের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, পাঁচটি নতুন মোবাইল টয়লেট (ভিআইপি) সরবরাহের বিপরীতে কর্মকর্তারা সেগুলো পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেবেন। ভ্রমণকে দায়িত্বের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং সব ব্যয় বহন করবে উৎপাদক প্রতিষ্ঠান শ্যাংডং কিউয়ানবাই ইন্টেলিজেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড।

    কিন্তু সরকারি কর্মকর্তাদের ঠিকাদার বা সরবরাহকারীর অর্থে বিদেশ ভ্রমণ না করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করেই এ সফরের অনুমতি দেওয়া হলো। সংশ্লিষ্টদের মতে, এটি শুধু সরকারি নীতিমালার ব্যত্যয় নয় বরং অনৈতিক ও স্বার্থের সংঘাত তৈরি করে।

    সরকারি আদেশগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, শুধু মোবাইল টয়লেট নয়—স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টের যন্ত্রপাতি, ট্রেইলার, চেইন ডোজার, স্ক্র্যাপার ব্রিজ ক্রয় কিংবা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের নকশা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের অজুহাতে বিদেশ ভ্রমণের অনুমোদন পেয়েছেন অনেক কর্মকর্তা।

    ডলার সংকট এবং সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতির কারণে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে বিদেশ ভ্রমণে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ছিল। গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরও এ বিধিনিষেধ বহাল ছিল। চলতি বছরের মার্চে আবারও বিদেশ সফরসংক্রান্ত বেশকিছু বিধিনিষেধ জারি হয়। তবুও সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশ ভ্রমণ বেড়েছে।

    আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, আইএলও ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার অর্থায়নে কিছু সফরের অনুমোদন মিলেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের অর্থায়নেও কর্মকর্তারা বিদেশ গেছেন। একইভাবে ঠিকাদার ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের খরচেও অনেক ভ্রমণ হয়েছে।

    শুধু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এবং পরিকল্পনা কমিশনের মোট ৩৫ কর্মকর্তাকে ঠিকাদার ও সরবরাহকারীর অর্থে বিদেশ সফরের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

    প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় গত বছরের ৯ ডিসেম্বর এক নির্দেশনায় জানিয়েছিল, অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থ ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ করা যাবে না। এমনকি সচিব, অধিদপ্তর বা সংস্থাপ্রধানদের একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। পাশাপাশি সরকারি অর্থে কম প্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছিল।

    তবুও বারবার সেই নির্দেশনা অমান্য করে বিদেশ ভ্রমণ অব্যাহত থাকায় প্রশ্ন উঠছে, সরকারি কর্মকর্তাদের এ সফর আসলেই কতটা প্রয়োজনীয়, আর কতটা স্বার্থসংক্রান্ত।

    নির্দেশনা অমান্য করে বাড়ছে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর

    সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় একাধিকবার নির্দেশনা জারি করেছে। তবুও নানা অজুহাতে বিদেশ সফর বেড়েই চলেছে।

    গত বছরের ৯ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জারি হওয়া নির্দেশনায় বলা হয়েছিল—কেনাকাটা, প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন বা ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপটেন্স টেস্টের ক্ষেত্রে শুধু সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞকেই পাঠানো হবে। পাশাপাশি, দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষণ ছুটি পরিহার এবং প্রস্তাব পাঠানোর সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পূর্ববর্তী এক বছরের বিদেশ সফরের তথ্য সংযুক্ত করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল।

    পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৩ মার্চ আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়। মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়ার স্বাক্ষরিত ওই পরিপত্রে স্পষ্ট বলা হয়—ঠিকাদার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে বিদেশ ভ্রমণ অবশ্যই পরিহার করতে হবে। উপদেষ্টা, সিনিয়র সচিব বা সচিবদের সঙ্গে তাদের একান্ত সচিব বা সহকারী একান্ত সচিবকে সহযাত্রী হিসেবে পাঠানো যাবে না। সরকারিভাবে বিদেশ ভ্রমণের সময় স্ত্রী-স্বামী বা সন্তানকেও সফরসঙ্গী করা যাবে না।

    কিন্তু এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করেই সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বহু কর্মকর্তার বিদেশ ভ্রমণের অনুমোদন মিলেছে।

    স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব আশফিকুন নাহার স্বাক্ষরিত ১২ আগস্টের এক আদেশে তিন কর্মকর্তাকে জার্মানি ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়। তারা হলেন—উপসচিব মো. রবিউল ইসলাম, ঢাকা ওয়াসার দাশেরকান্দি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মমতাজুর রহমান এবং ঢাকা ওয়াসার উপসচিব শাহিদা কানিজ। আদেশে বলা হয়, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি যেমন—পাম্প, মোটর, স্ক্রু পাম্পের স্ট্যাটর ও রোটর, পিএলসি এবং স্ক্যাডা সিস্টেমের স্পেয়ার পার্টস কেনার ক্ষেত্রে স্বশরীরে পরিদর্শন ও পারফরম্যান্স টেস্টে অংশ নেবেন তারা। দাপ্তরিক দায়িত্ব হিসেবে নির্ধারিত এ সফরের সব ব্যয় বহন করেছে টেক-স্ট্রেইট এনার্জি সার্ভিসেস। যদিও সফরটি অনুষ্ঠিত হয় গত জুনে, তবে এ-সংক্রান্ত জিও জারি হয় দুই মাস পর আগস্টে।

    ৯ সেপ্টেম্বর জারি হওয়া আরেকটি আদেশে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এর অধীন পাঁচ কর্মকর্তাকে জাপান ভ্রমণের অনুমোদন দেওয়া হয়। তারা হলেন—যুগ্ম সচিব মো. আবুল হাসান, এলজিইডির সুপারিনটেনডিং প্রকৌশলী মো. গোলাম ইয়াজদানি, এলজিইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের সুপারিনটেনডিং প্রকৌশলী এবিএম নাজমুল করিম, আইপিসিপি প্রকল্পের পরিচালক মো. ফজলে হাবিব ও উপপ্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আল ইমরান। তাদের পাঁচ দিনের সফরে অ্যাডভান্সড টেকনোলজি কনসোর্টিয়াম লিমিটেড আয়োজিত অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স ট্রেনিংয়ে অংশ নেওয়ার কথা বলা হলেও, নির্দিষ্ট করে কী বিষয়ে প্রশিক্ষণ হবে তা উল্লেখ করা হয়নি। এ সফরের সব ব্যয়ও বহন করছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান।

    একইভাবে, নতুন লো-বেড ট্রেইলার সরবরাহের বিপরীতে প্রশিক্ষণের অজুহাতে থাইল্যান্ড ভ্রমণের অনুমোদন পান স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ডিএসসিসির তিন কর্মকর্তা। ১৪ সেপ্টেম্বর জারি হওয়া জিওতে দেখা যায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান, ডিএসসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল) মো. শাহ আলম ভূঁইয়া এবং উপসহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলামকে ২০ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর অথবা ছুটির শুরু থেকে সাত দিনের জন্য বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাদের ভ্রমণের সব ব্যয় বহন করছে উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল সেলস অ্যান্ড ট্রাকস এশিয়া।

    নানা বিধিনিষেধ সত্ত্বেও বিদেশ সফরের এমন ধারাবাহিকতা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে প্রশ্ন তুলেছে। তারা বলছেন, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ঠিকাদার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থে কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ কেবল নীতিমালার ব্যত্যয় নয় বরং এতে স্বার্থের সংঘাত ও নৈতিক সংকটও তৈরি হয়।

    ঠিকাদারের টাকায় বিদেশ ভ্রমণ: সরকারি নির্দেশনা অমান্যের অভিযোগ

    পাঁচটি চেইন ডোজার কেনার আগে অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স প্রশিক্ষণের জন্য চীন ভ্রমণের অনুমোদন পেয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তিন কর্মকর্তা। তারা হলেন—সহকারী সচিব মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন, ডিএসসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল) মোহাম্মদ মাহবুব আলম এবং উপসহকারী প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল) তন্ময় কুমার সাহা। যাত্রা শুরুর তারিখ থেকে আট দিনের সফরের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সব ব্যয় বহন করছে উৎপাদক প্রতিষ্ঠান সিনেওয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল (সাংহাই) কোম্পানি লিমিটেড এবং এইচটিএমএস।

    একইভাবে, ক্র্যাপার ব্রিজ সংগ্রহের ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপটেন্স টেস্টে অংশ নিতে ফ্রান্স ভ্রমণের অনুমতি পেয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মনিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম ওয়াসার সুপারিনটেনডিং প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম এবং মড সার্কেলের সুপারিনটেনডিং প্রকৌশলী মোহাম্মদ নুরুল আমিন। ১২ আগস্ট জারি হওয়া আদেশে বলা হয়, সাত দিনের এই সফরের সব ব্যয় বহন করবে দক্ষিণ কোরিয়ার তাইইউং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।

    সরকারি নির্দেশনা স্পষ্টভাবে বলছে, ঠিকাদার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থে কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর পরিহার করতে হবে। তবুও এসব সফরের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ এ বিষয়ে বলেন, “আমি এ বিষয়ে অবগত নই। তবে এতটুকু বলতে পারি, রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে যারা আছেন তাদের নিয়ম মেনে চলা উচিত।”

    শুধু স্থানীয় সরকার বিভাগই নয়, অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারাও একইভাবে ঠিকাদার বা সরবরাহকারীর অর্থে বিদেশ ভ্রমণের অনুমোদন পেয়েছেন। এর মধ্যে ২৭ আগস্ট বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাজমুল হামিদ রেজার স্বাক্ষরে জারি হওয়া এক আদেশে ১৫ জন কর্মকর্তাকে বিদেশ সফরের অনুমতি দেওয়া হয়।

    তাদের মধ্যে আছেন—ইআরডির উপসচিব আইরিন পারভীন, আইএমইডির উপপরিচালক মাহফুজুল আলম মাসুম, পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সহকারী প্রধান মো. আজিজুর রহমান, বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাজমুল হামিদ রেজা, বিপিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী অমর্ত্য রায়, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নিজামুল ইসলাম মজুমদার, সহকারী প্রকৌশলী সালমা নাসরিন, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওমর ফারুক, নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. হাসিব উল্লাহ, আখতার জাহান, মো. আর রাফী সরকার, সহকারী প্রকৌশলী মারিয়া আক্তার ও মো. আদিল-উজ-জামান।

    এই সফরের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ দিন। কর্মকর্তারা চীনে গিয়ে সৈয়দপুর ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের পরিকল্পনা ও নকশা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ নেবেন। সব ব্যয় বহন করছে চীনের ডংফেং ইলেকট্রিক ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন (ডিইসি)।

    সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঠিকাদার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। আগে নানা ফাঁকফোকর ব্যবহার করে এগুলো করা হতো। এখনো সেই ধারা অব্যাহত। তাদের মতে, এসব ভ্রমণ কেবল বিধিবহির্ভূত নয়, বরং অনৈতিকও।

    কারণ, কোনো প্রতিষ্ঠান কর্মকর্তাদের নিজের খরচে বিদেশ ভ্রমণে পাঠালে এর প্রভাব পড়ে পরবর্তী কাজে। নিম্নমানের মালপত্র সরবরাহ, প্রকল্পের গুণগত মান কমানো কিংবা সুবিধা আদায়ে চাপ প্রয়োগ—এসব ঝুঁকি থেকে যায়। একইসঙ্গে ভ্রমণ শেষে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতি কর্মকর্তাদের এক ধরনের দুর্বলতাও তৈরি হয়, যা সুশাসনের জন্য বড় হুমকি।

    সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে এনবিআর কর্মকর্তার অস্ট্রেলিয়া যাত্রা

    সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বিদেশ ভ্রমণের ঘটনা আবারও সামনে এসেছে। এবারে আলোচনায় এনবিআরের সদস্য বেলাল হোসেন চৌধুরী। ইন্দোনেশিয়ায় প্রশিক্ষণের অনুমোদন নিয়েও তিনি গেছেন অস্ট্রেলিয়ায়।

    সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা এ বিষয়ে বণিক বার্তাকে বলেন, “বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনা মানা বাধ্যতামূলক। এটি অমান্য করা চাকরিবিধির পরিপন্থী।”

    তদন্তে জানা গেছে, বেলাল হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আগেই রয়েছে। এবার বিদেশ ভ্রমণকেও তিনি ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করেছেন।

    অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব বিভীষণ কান্তি দাস স্বাক্ষরিত ১১ সেপ্টেম্বরের এক আদেশে ইন্দোনেশিয়ায় “ডাটা সেন্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিপোর্টিং” শীর্ষক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে বেলাল চৌধুরীসহ আরও ১০ জনকে অনুমোদন দেওয়া হয়। পুরো ব্যয় বহন করছে স্টার টেক অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।

    কিন্তু ভ্রমণ নথি অনুযায়ী, বেলাল চৌধুরী গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করেন সিডনির উদ্দেশে। অথচ তিনি অনুমোদন পেয়েছিলেন ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার। একই জিওতে থাকা অন্য কর্মকর্তারা শনিবার সকালে ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

    ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “সরকার ব্যয় সংকোচনের অংশ হিসেবে বিদেশ ভ্রমণ কমানোর নির্দেশ দিয়েছিল। এর ব্যত্যয় প্রমাণ করে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করা এখন প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরও অনৈতিক হচ্ছে, ভ্রমণের অর্থায়ন করছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা দান করছে না, বরং খরচের অংশ হিসেবেই তা যোগ করছে। পৃথিবীর কোনো প্রতিষ্ঠান নিজেদের পকেট থেকে ব্যয় করে না।”

    তিনি আরও বলেন, “সরবরাহকারীদের অর্থে ভ্রমণ কর্মকর্তাদের মধ্যে বাধ্যবাধকতা ও আনুগত্য তৈরি করে। অথচ তাদের দায়িত্ব মানসম্মত পণ্য ও সেবা নিশ্চিত করা। এই ধরণের ভ্রমণ স্বার্থের সংঘাত সৃষ্টি করে এবং সরকারি নির্দেশনার স্পষ্ট লঙ্ঘন।”

    ড. ইফতেখারুজ্জামান মনে করিয়ে দেন, অতীতে উন্নয়নের নামে বিদেশ ভ্রমণের সংস্কৃতি দীর্ঘদিন ধরে ছিল। ২০২৩ সালের আগস্টের পর সেই অবস্থার পরিবর্তন হবে বলে প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু বাস্তবে পরিবর্তন হয়নি। তার ভাষায়, “অনেক কর্মকর্তা ভাবছেন, ১৬ বছর সুযোগ পাইনি, এখন আমাদের সময়। তাই অনৈতিক উপায়ে বিদেশ ভ্রমণ করছে। প্রশিক্ষণ বা কর্মসূচির নামে আসলে তারা প্লেজার ট্রিপ করছে।”

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    অর্থনীতি

    টানা তিন মাস ধরে কমছে পোশাক রপ্তানি

    November 5, 2025
    শিক্ষা

    বিশ্বে বইপড়ায় শীর্ষে আমেরিকানরা, তলানিতে বাংলাদেশ

    November 5, 2025
    অপরাধ

    শিক্ষা সহকারী সচিবের শুধু ব্যাংকেই লেনদেন ১৭ কোটি!

    November 5, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত

    আইন আদালত October 7, 2025

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.