মুন্সীগঞ্জের মেঘনা নদী থেকে বেআইনিভাবে বালি উত্তোলন বন্ধ এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে (ডিসি) লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সোলায়মান তুষারের মাধ্যমে। নোটিশে বলা হয়েছে, পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে হাইকোর্টে রিট দায়েরসহ অন্যান্য আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি অনুমোদিত বালুমহালের সীমানা অমান্য করে ইজারাদাররা কালিরচর মৌজার ফসলি জমি এবং বসতবাড়ির কাছে বালি উত্তোলন করছেন। গ্রামবাসী জানান, “আমরা গরিব মানুষ। যদি আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে যায়, কোথায় থাকব? বালি কাটছে বড়লোকেরা, আমাদের কথা শোনার কেউ নেই।”
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ও মেঘনা নদী বর্তমানে অবৈধ অস্ত্র প্রশিক্ষণ এবং বালি সন্ত্রাসীদের আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো শত শত খননকারীর কার্যক্রমে ঝড়ের মতো কাঁপছে। ফসলি জমি, মসজিদ, মাদ্রাসা এবং ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে।
স্থানীয়দের মতে, ‘স্বর্ণ প্রাসাদ’ নামে পরিচিত এই বালু প্রাসাদটি সশস্ত্র প্রহরীদের দ্বারা সুরক্ষিত। প্রতিবাদকারীরা প্রাণহানির হুমকির মুখে পড়ছেন। এর ফলে নদী ভাঙন, জলজ জীববৈচিত্র্যের ক্ষয় এবং প্রাকৃতিক প্রবাহে বিঘ্ন ঘটছে। ক্রমবর্ধমান ভাঙন এবং বন্যার ঝুঁকি এলাকার কৃষিজমি, বসতবাড়ি ও অবকাঠামোর জন্য বড় হুমকি তৈরি করছে।
লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, বালুমহাল ও মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। বেআইনি কার্যকলাপে জড়িতদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সোলায়মান তুষার জানান, “পরিবেশ সংরক্ষণ আইন এবং বাংলাদেশ পরিবেশ আদালত আইন-২০১০ অনুসারে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা আশা করি, জেলা প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে এবং মেঘনা নদীর পরিবেশ ও নদী তীরবর্তী এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।”