আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরের শাসনামলে রাজবাড়ী জেলায় বিরোধী দল-মতের মানুষের ওপর ব্যাপক নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। এই সময়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা গুম-খুন ও হামলার শিকার হয়েছেন। বিএনপির দুই নেতা খুন এবং একজনকে গুম করা হয়।
বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, ক্ষমতাসীনরা আইন-আদালতকে কুক্ষিগত করে বিরোধীদের দমন করেছে। গায়েবি ও মিথ্যা মামলার মাধ্যমে শত শত নেতাকর্মীকে হয়রানি করা হয়েছে। অনেকে জেল খেটেছেন, আবার অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দলীয় কার্যালয় দখলের ঘটনাও ঘটেছে। বিশেষ করে রাতের ভোট ও কথিত ‘ডামি নির্বাচন’ নির্বিঘ্ন করতে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের জীবনে নেমে আসে দুর্বিষহ সময়।
মানবাধিকার উপেক্ষিত ছিল বলেও তাদের দাবি। ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির বাউনি গ্রামের সাদ্দাম শেখ (২৪) গুম হন। তার বড় ভাই তুহিন আহমেদ জানান, তারা বিএনপি পরিবারের সদস্য হওয়ায় এলাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সঙ্গে প্রায়ই দ্বন্দ্ব হতো। ওই দিন বিকেল ৪টার দিকে সাদ্দাম বাড়ির পাশে চামতা বাজারে গেলে আর ফেরেননি। আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি ও বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। নিখোঁজের ১০ বছর পার হলেও আজও তার কোনো খোঁজ মেলেনি।
রাজবাড়ীর রাজনৈতিক সহিংসতার ইতিহাসে খুন-গুম হয়ে থাকা মানুষের পরিবারের বেদনা আজও শেষ হয়নি। নিখোঁজদের স্বজনরা এখনও প্রহর গুনছেন, কেউ ফিরে আসবে—এই আশায়। গুম হওয়া সাদ্দাম শেখের মা শাহরিমা বেগমের জীবন কাটছে অপেক্ষায়। তিনি বিশ্বাস করেন, একদিন ছেলে ফিরে আসবে। কিন্তু এই বিশ্বাসের ভেতরেও লুকিয়ে আছে আতঙ্ক। বড় ছেলে নিয়েও তিনি সবসময় শঙ্কায় থাকেন, যদি তাকেও গুম করা হয়।
রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় খুনের ঘটনা ঘটেছে প্রকাশ্যে। ২০১৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি মোহন মণ্ডলের ছেলে, বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া সাইফুল ইসলাম রিপনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মোহন মণ্ডলের দাবি, তরুণ বয়সেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা রিপনকে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ অঙ্কুরেই শেষ করতে চেয়েছিল। তার অভিযোগ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরু মণ্ডলের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা রিপনকে বাড়ি থেকে কৌশলে পতিতাপল্লিতে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় ফরিদ নামে আরেকজন বিএনপি কর্মী আহত হন।
মোহন মণ্ডল বলেন, নুরু মণ্ডল এতটাই প্রভাবশালী ছিলেন যে মামলায় তার নাম থাকলেও আওয়ামী লীগের তৎকালীন সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীর প্রত্যক্ষ তদবিরে তা বাদ দেওয়া হয়। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে মামলার রায় হয় ২০২৩ সালের ৬ আগস্ট। প্রধান আসামি জামাল পত্তনদার ওরফে কুদ্দুস রহিম শেখের ফাঁসির আদেশ হয়, কিন্তু তিনি বহু আগে ভারতে পালিয়ে যান। অভিযোগ আছে, কেরামত আলীর প্রভাবে দলীয় কর্মীরা খালাস পান। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়েছে। এরও আগে ২০১২ সালের ৩ এপ্রিল নিহত হন পাংশার মাছপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সবুর খান (৫০)। পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করে মাঠে ফেলে রাখা হয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত সন্ত্রাসীরা। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা সাইফুল ইসলাম বুড়োর চাপে পরিবার মামলা করতে পারেনি। পরবর্তীতে তিনি পাংশা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। তবে জুলাই বিপ্লবের পর একটি মামলায় তিনি এখন কারাগারে আছেন।
রাজবাড়ীর এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিরোধীদের জন্য কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল। পরিবারগুলো আজও বিচারহীনতা আর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। বালিয়াকান্দি স্টেডিয়ামের উত্তর পাশে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আগমন স্মরণে ১৯৮০ সালে একটি স্থায়ী মঞ্চ নির্মিত হয়। এটি পরিচিতি পায় “জিয়া সরণি” নামে। তবে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সেই স্মৃতিচিহ্ন ভেঙে ফেলে। চার বছর পর, ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে আওয়ামী লীগের ৪৪ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।
কালুখালীর চাঁদপুর এলাকায় বিএনপি কর্মী মোসলেমের মুদি দোকান উচ্ছেদ করে সেখানে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় নির্মাণের অভিযোগও রয়েছে। তৎকালীন প্রভাবশালী নেতা মিজানুর রহমান মজনু এ ঘটনার মূল ভূমিকা পালন করেন বলে জানা যায়। পরে তিনি মদাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং জেলা পরিষদ সদস্য হন। স্থানীয়দের দাবি, সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় তিনি এসব ‘পুরস্কার’ পান। বর্তমানে তিনি পলাতক।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রাণ হারানো তিনজন:
রাজবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন তিনজন। সাগর আহম্মেদ বালিয়াকান্দির বিলটাকাপোড়া গ্রামের বাসিন্দা। বাবা মো. তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে সাগর ঢাকার বাঙলা কলেজের অনার্স শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে আন্দোলনে শহীদ হন। কুরমান শেখ (৪৯) কালুখালীর রতনদিয়ার বাগমারা গ্রামের বাসিন্দা। শারীরিক প্রতিবন্ধী কুরমান সাভার বাজারে মুরগির ব্যবসা করতেন। ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। স্ত্রী শিল্পী খাতুনের অভিযোগ, “একজন প্রতিবন্ধী মানুষকেও যারা গুলি করতে পারে, তারা মানুষ নয়। পলাতক শেখ হাসিনার পুলিশ আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।” দুই সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে, কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর তাদের পড়ালেখা চালানো এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।
রাজবাড়ীর সদর উপজেলার চর খানখানাপুর নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুল গনি শেখ ছিলেন হোটেল কর্মচারী। জীবিকার তাগিদে ঢাকায় কাজ করতেন। জুলাই বিপ্লবের সময় বাড্ডা শাহজাদপুর বাঁশতলা ক্যামব্রিয়ান স্কুলের সামনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। তার স্ত্রী লাকী আক্তার জানান, দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি এখন দুঃসহ সময় পার করছেন। বড় ছেলে বাবার কর্মস্থলেই চাকরি করছে, আর ছোট মেয়ে নার্সারিতে পড়ে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রাণহানি ও আহতরা:
রাজবাড়ীর তিন শহীদের পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জেলায় আহত হয়েছেন অন্তত ৮২ জন। তাদের মধ্যে আনোয়ার নামে একজনকে গুরুতর অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড পাঠানো হয়। শরীরের নিচের অংশে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি আজও স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারেন না। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত ১৫ বছরে রাজবাড়ীর বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে শতাধিক মামলা হয়েছে। আসামির সংখ্যা তিন হাজারের কাছাকাছি। এসব মামলার কারণে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। যদিও অনেক গায়েবি মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে, তবু ২০২৪ সাল পর্যন্ত ২৮টি মামলা চলমান ছিল।
২০২৩ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মের নেতৃত্বে এক বড় শোডাউন হয়। মিছিলটি শহরের বড়পুল এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ লাঠিচার্জ ও শটগানের গুলি ছুড়ে সমাবেশ ভাঙচুর করে। এ সময় শ্রমিক দলের জেলা সভাপতি আব্দুল গফুর মণ্ডল গুরুতর আহত হন। তার শরীর শটগানের গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যায়। একই ঘটনায় মহিউদ্দিন আহমেদ গিটার ও হিটু মাস্টারসহ কয়েকজন নেতাকর্মীও নির্যাতনের শিকার হন। পরে পুলিশ আলী নেওয়াজ খৈয়মকে ১ নম্বর আসামি করে মামলা করে। এতে ১৫৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ২ হাজার ৭০০ জনকে। রাজবাড়ীর এসব ঘটনা দেখায়—রাজনীতি কেবল প্রতিযোগিতা নয়, বরং বিরোধী দলের জন্য হয়ে উঠেছিল জীবন-মরণের লড়াই। পরিবারগুলো আজও এই সহিংসতা, বিচারহীনতা আর মামলার বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে।
রাজবাড়ী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. নাসিরুল হক সাবু, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ আলী খান, শওকত সরদার, হাবিবুর রহমান রাজাসহ শীর্ষ নেতারা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারতেন না। মামলা ও হামলার কারণে তারা সবসময় আতঙ্কে থাকতেন। ২০১২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়। কিছু মিথ্যা মামলা সাক্ষীর অভাবে খারিজ হলেও ২৮টি মামলা দীর্ঘদিন চলমান ছিল। পরে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এসব মামলা রাজনৈতিক ও মিথ্যা হিসেবে প্রত্যাহার করা হয়।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী জানান, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের আমলে পরিস্থিতি এমন ছিল যে, বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে সবসময় পুলিশের গাড়ি রাখা হতো। কেন্দ্রীয় কোনো কর্মসূচি পালন করতে গেলে অফিসের প্রবেশপথ ব্লকেড দিয়ে রাখা হতো। নেতাকর্মীরা পেছনের গলি দিয়ে ব্যানার-ফেস্টুন হাতে অফিসে ঢুকলেও মিছিল নিয়ে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হতো ধরপাকড় ও লাঠিচার্জ।
সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম ২০১৮ সালের নির্বাচনে রাজবাড়ী-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। তিনি জানান, নির্বাচনের তিন দিন আগে থেকেই গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তার পোলিং এজেন্টদের তালিকা সংগ্রহ করে। তালিকা ধরে শুরু হয় গ্রেপ্তার অভিযান। পুলিশ এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভীতি সৃষ্টি করে এবং কেন্দ্র না যেতে হুমকি দেয়।
যারা সাহস নিয়ে দায়িত্ব পালনের কথা বলেছিলেন, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। নির্বাচনের আগের দিন বিকেল থেকে খৈয়মের বাড়ির সব প্রবেশপথ পুলিশ বন্ধ করে দেয়। এমনকি সাংবাদিকদেরও বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। নির্বাচনের তিন-চার দিন আগে থেকেই নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়। খৈয়ম সেই দিনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, এটি ছিল “হাসিনা মডেল” নির্বাচনের বীভৎস উদাহরণ।
জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশীদ জানান, তাকে ছাড়াও পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী উপজেলায় অসংখ্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছিল পাংশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ আলী খান, পৌর বিএনপির সভাপতি বাহারাম সরদার, সাধারণ সম্পাদক রইচ উদ্দিন খান, বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার ভূঁইয়া, ছাত্রদল সভাপতি শামীম আহমেদ রুবেল এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব তুহিনুর রহমান তুহিনকে।
কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বলেন, “ফ্যাসিস্ট হাসিনার ১৫ বছরে শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি।” তিনি জানান, গোয়ালন্দ মোড়ে আন্দোলনের সময় বহু নেতাকর্মী আহত ও কারাগারে বন্দি হয়েছিলেন। সেইসব পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হয়েছে তাকে।
রাজবাড়ী জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য নূরুল ইসলাম জানান, গত ১৫ বছরে তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২০০টির বেশি মামলা হয়, যেখানে আসামি ছিলেন হাজারের বেশি। এ মামলায় কারাভোগ করেছেন পৌর আমির মো. হাফিজুর রহমান, পাংশার আমির হারুন অর রশিদ, ফরহাদ জামিল, গোয়ালন্দের আমির মো. গোলাম আজম, নায়েবে আমির মঞ্জুর রহমান, পৌর আমির আব্দুল হালিম, বালিয়াকান্দির সেক্রেটারি আব্দুর রাজ্জাক ও মনির আজম মুন্নুসহ শত শত কর্মী।
তিনি আরও জানান, “অনেক সময় পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে জেলার বাইরে গিয়ে আত্মগোপনে থাকতে হয়েছে।” স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে জামায়াত নেতা ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী রাজু আহমেদের চোখ নষ্ট হয়ে যায়। তিনি এখন অন্ধত্বের অভিশাপে জীবন কাটাচ্ছেন। নূরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, রাজবাড়ী শহরের আজাদি ময়দানে তাদের দলীয় কার্যালয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দখল করে অন্যের কাছে ভাড়া দেয়। একইভাবে গোয়ালন্দ উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ও দখল করে রাখে আওয়ামী লীগপন্থীরা।
রাজবাড়ীর সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলা প্রত্যাহারের আবেদন আদালতে দাখিল করা হয়েছিল। এতে বিএনপি-জামায়াতের প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মী হয়রানিমূলক ও গায়েবি মামলা থেকে অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন।

