চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এলাকায় কোটি কোটি টাকার হোল্ডিং ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী নথি ঘষামাজা করে ট্যাক্সের পরিমাণ কমিয়ে দেখিয়েছেন।
সাম্প্রতিক তদন্তে দুইটি বড় ধরনের জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে। দুটি হোল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে দুইটি ‘২’ মুছে ফেলে ৪০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় দুই কর কর্মকর্তাকে বরখাস্ত এবং তিন হিসাব সহকারীকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে দুদক চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়, টাইগারপাসে অভিযান চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি জব্দ করেছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, নথিতে ঘষামাজা করা হয়েছে। দুদক জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানের মালিকেরও যোগসাজশ থাকতে পারে। তদন্তে সিগনেচার পরীক্ষা এবং ব্যাংকিং হিসাব যাচাই করা হবে।
তদন্তে জানা গেছে, চসিকের ৮ নম্বর রাজস্ব সার্কেলের আওতাধীন দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহরের ‘এছাক ব্রাদার্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ ২০ কোটি টাকার হোল্ডিং ট্যাক্সে জালিয়াতি করেছে। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বার্ষিক কর মূল্যায়ন ছিল ২৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা। কিন্তু ফিল্ডবুকের তথ্য ঘষামাজা করে ট্যাক্স মাত্র ৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা দেখানো হয়।
একই কর্মকর্তারা একই সার্কেলের ‘ইন-কন্ট্রেড লিমিটেড’ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের হোল্ডিং ট্যাক্সেও একই কৌশল ব্যবহার করেন। ২৫ কোটি ৬৭ লাখ ৪ হাজার ৫০ টাকার মূল্যায়নকে কমিয়ে দেখানো হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন কর কর্মকর্তা নুরুল আলম, উপকর কর্মকর্তা আবদুল কাদের, কর আদায়কারী ভবতোষ চৌধুরী, উচ্চমান সহকারী সমীর দত্ত, দবীর আলম চৌধুরী, রূপসী রাণী দেবসহ অনেকে। চসিক ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।
দুই কর্মকর্তা বরখাস্ত করা হয়েছে। তিন হিসাব সহকারীকে অব্যাহতি দিয়ে সচিবালয় সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকৃত মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে পুনরায় আপিল রিভিউ বোর্ডে শুনানি করে চূড়ান্ত মূল্যায়ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চসিকের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বুধবার চারটি অফিস আদেশে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। চসিকের সচিব আশরাফুল আমিন দাপ্তরিক পত্রে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তাকে।

