রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে বাবাকে গ্রেপ্তারের সময় পাশে কাঁদতে থাকা সাত-আট বছরের এক শিশুর গালে চড় মারার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। মানবিকভাবে বেদনাদায়ক এই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর নিন্দার ঝড় উঠেছে অনলাইনে।
ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি গ্রেপ্তারের সময় তার ছোট মেয়ে কান্নাজড়িত অবস্থায় বাবাকে আঁকড়ে ধরেছে। হঠাৎ উপস্থিত একজন শিশুটির গালে চড় মারলে সে আরো জোরে কেঁদে ওঠে। এরপর মেয়েটিকে জোর করে বাবার কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারকারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়।
অনেকেই ফেসবুকে লিখেছেন, “একটি শিশুর সঙ্গে এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।” কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, “যে ব্যক্তি শিশুটিকে চড় মেরেছে, সে নিশ্চয়ই কোনো সন্তানের বাবা নয়।”
অন্যদিকে, কিছু আওয়ামী লীগপন্থী ফেসবুক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, “গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি আওয়ামী লীগের কর্মী এবং শিশুটিকে চড় মেরেছিল পুলিশ সদস্য”। আবার কেউ বলছে, “মব-সন্ত্রাসীদের কাছে দেশের শিশুরাও নিরাপদ নয়”।
তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসায়ী দুই পক্ষের সংঘর্ষে মো. জাহিদ নামে এক তরুণ নিহত হন। ওই ঘটনায় রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করে। নিহত জাহিদের হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার হন রুস্তম নামের এক ব্যক্তি— যিনি ভিডিওতে দেখা শিশুটির বাবা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও বিভাগের সহকারী উপকমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা বলেন, “ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। গ্রেপ্তারের সময় শিশুটি বাবার কাছে চলে আসে, তখন কেউ একজন তাকে চড় মারে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি।”
ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয়ভাবে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, শিশুর প্রতি এ ধরনের আচরণ শুধু অনৈতিকই নয়, বরং আইনি দিক থেকেও প্রশ্নবিদ্ধ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্রমবর্ধমান জনঅসন্তোষের প্রেক্ষাপটে পুলিশ ইতোমধ্যেই ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

