ইতালিতে ক্যাথলিক পুরোহিতদের হাতে গত পাঁচ বছরে অন্তত চার হাজার ৪০০ জন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২০২০ সাল থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল (শুক্রবার) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই অভিযোগ জানিয়েছে ভুক্তভোগীদের সংগঠন রেতে এল আবুজো। খবরটি জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ফ্রান্সেস্কো জানার্দি বলেন, ভুক্তভোগীদের বয়ান, বিচার বিভাগীয় সূত্র ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এই হিসাব তৈরি করা হয়েছে। তবে নির্যাতনের সঠিক সময়কাল স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। ইতালির বিশপ সম্মেলন (সিইআই) এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
গত সপ্তাহে ভ্যাটিকানের শিশু সুরক্ষা কমিশন সিইআইয়ের ব্যাপক সমালোচনা করেছে। ক্যাথলিক চার্চের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী শিশু নির্যাতনের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। তবুও ইতালির স্থানীয় চার্চ নেতারা এ বিষয়ে তুলনামূলকভাবে কম উদ্যোগী ছিলেন। চলতি সপ্তাহে প্রথমবারের মতো পোপ লিও ধর্মযাজকদের হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। নতুন বিশপদের উদ্দেশে তিনি অভিযোগ গোপন না করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস ১২ বছর দায়িত্বকালীন সময়ে এই অপরাধ দমনকে অগ্রাধিকার হিসেবে রেখেছিলেন। তবে তার কার্যক্রমে ফলাফল ছিল মিশ্র। ভ্যাটিকানের শিশু সুরক্ষা কমিশনের ১৬ অক্টোবরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতালির ২২৬টি ডায়োসিসের মধ্যে মাত্র ৮১টি শিশু সুরক্ষা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। এটি চার্চের নিষ্ক্রিয়তার ইঙ্গিত দেয়।
রেতে এল আবুজো তথ্য অনুযায়ী, তারা এক হাজার ২৫০টি সন্দেহভাজন নির্যাতনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। এর মধ্যে এক হাজার ১০৬টি ঘটনা ক্যাথলিক পুরোহিতদের বিরুদ্ধে। বাকিগুলিতে জড়িত ছিলেন সন্ন্যাসিনী, ধর্মীয় শিক্ষক, সাধারণ স্বেচ্ছাসেবক, শিক্ষাবিদ ও স্কাউট সদস্যরা। মোট ভুক্তভোগীর সংখ্যা চার হাজার ৬২৫। তাদের মধ্যে চার হাজার ৩৯৫ জনের নির্যাতনকারী ক্যাথলিক পুরোহিত। চার হাজার ৪৫১ জন ভুক্তভোগীর বয়স ছিল ১৮ বছরের নিচে। প্রায় সমসংখ্যক চার হাজার ১০৮ জন ভুক্তভোগী পুরুষ।
এক হাজার ১০৬ জন সন্দেহভাজন ক্যাথলিক পুরোহিতের মধ্যে মাত্র ৭৬ জনের বিরুদ্ধে চার্চ আদালতে বিচার হয়েছে। ১৭ জনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সাতজনকে অন্য গির্জায় স্থানান্তর করা হয়েছে। ১৮ জনকে পদ থেকে সরানো হয়েছে বা তারা পদত্যাগ করেছেন। সংগঠনটি জানায়, আরও পাঁচজন অভিযুক্ত আত্মহত্যা করেছেন।

