চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) প্রায় ৪০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত নোটিশে তাকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, চসিকের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের ৫১৫/এ/৫৯৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বার্ষিক মূল্যায়নে ফিল্ড বুকে ঘষামাজা করে ২৫ কোটি ৬৭ লাখ ৪ হাজার ৭৫০ টাকার জায়গায় ৫ কোটি ৬৭ লাখ ৪ হাজার ৭৫০ টাকা দেখানো হয়। পরে রিভিউ অ্যাসেসমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে তা মাত্র ৫৮ লাখ টাকায় চূড়ান্ত করা হয়।
একইভাবে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৩১৮/৩৩১ নম্বর হোল্ডিংয়ের মূল্যায়নে ঘষামাজার মাধ্যমে ২৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা থেকে ২০ কোটি টাকা কমিয়ে ৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা দেখানো হয়। পরবর্তীতে রিভিউ বোর্ডের সিদ্ধান্তে এটি ২ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। এইভাবে দুটি হোল্ডিংয়ে কারসাজির মাধ্যমে করপোরেশন প্রায় ৪০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২৩ সালের ২৮ মে অভিযোগ উত্থাপনের পরও ২০২৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তিনি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল, দোষী শনাক্তকরণ বা কর পুনঃনির্ধারণে কোনো পদক্ষেপ নেননি। এতে করপোরেশনের রাজস্বে বড় ধরনের ক্ষতি হয়।
নোটিশে বলা হয়, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ৬২(২) ধারার আলোকে এটি দায়িত্বে অবহেলার সুস্পষ্ট প্রমাণ। আরও উল্লেখ করা হয়, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ৬ সেপ্টেম্বর প্রশিক্ষণের জন্য কর্মস্থল ত্যাগের পর কর্তৃপক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় এবং পুনরায় কর নির্ধারণের নির্দেশ দেয়। দীর্ঘ সময় কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে রাজস্ব ক্ষতি হওয়ায় তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার সময় আমি দায়িত্বে ছিলাম না। বিষয়টি নজরে আসার পর অতিরিক্ত জেলা জজ পদমর্যাদার একজন আইন কর্মকর্তাকে প্রধান করে কমিটি গঠন করি। কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দিতে বারবার তাগাদা দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন না দেওয়ার কারণে যদি কাউকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়, তা হলে আগে কমিটির প্রধানকে দেওয়া উচিত ছিল। আমাকে কেন দেওয়া হলো তা বোধগম্য নয়।”

