আমদানি-রপ্তানি দেখিয়ে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে এলসির বিপরীতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা আত্মসাত ও পাচারের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি, শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, তার ভাই ও জনতা ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচ মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মামলাগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্থার মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তিনি জানান, অনুমোদিত পাঁচ মামলায় ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মোট এক হাজার ৯৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা আত্মসাত ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। অনুসন্ধান প্রতিবেদনের সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা জনতা ব্যাংক পিএলসির স্থানীয় অফিস থেকে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন। আত্মসাৎকৃত অর্থের মধ্যে রয়েছে—
- পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেড: ৫ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২.২৫ মার্কিন ডলার
 - প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেড: ১ কোটি ৮৮ লাখ ৩ হাজার ৬৫৮.৯১ ডলার
 - কাঁচপুর এপারেলস লিমিটেড: ৮ কোটি ৪০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৭.৪৫ ডলার
 - স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেড: ১ কোটি ৪৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৪০ ডলার
 - ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড: ৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৮২.৪৬ ডলার
 
সবমিলিয়ে মোট ২১ কোটি ৫৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০১ ডলার বা এক হাজার ৯৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন:
- বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, ভাই ও ভাইস চেয়ারম্যান এ.এস.এফ. রহমান
 - দুই ছেলে: আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান ও আহমেদ শাহরিয়ার রহমান
 - বেক্সিমকোর পরিচালকগণ: ইকবাল আহমেদ, এ.বি. সিদ্দিকুর রহমান, মাসুদ ইকরামুল্লাহ খান, শাহ মঞ্জুরুল হক, রীম এইচ. শামসুদ্দোহা
 - স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেড: এমডি আনোয়ারুল বাশার ও পরিচালক নাসরিন আহমেদ
 - ক্রিসেন্ট এক্সেসরিজ: এমডি আবু নাঈম মাহমুদ সালেহিন ও পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তানভীর
 - প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেড: এমডি মোহাম্মদ আলিফ ইবনে জুলফিকার ও পরিচালক মোসা. নুসরাত হায়দার
 - পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেড: এমডি ওয়াসীউর রহমান ও পরিচালক রিজিয়া আক্তার
 - নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড: এমডি সালাউদ্দিন খান মজলিস ও পরিচালক আব্দুর রউফ
 - কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেড: এমডি মাহফুজুর রহমান খান ও পরিচালক সৈয়দ তানবির এলাহী আফেন্দী
 
জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন:
সাবেক এমডি আব্দুছ ছালাম আজাদ ও আব্দুল জব্বার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুর রহিম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. শহিদুল হক, ডিজিএম (অব.) মমতাজুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক মো. সালেহ আহম্মেদ, অবসরপ্রাপ্ত সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক এজিএম (রপ্তানি) মোহাম্মদ শাজাহান, ব্যবস্থাপক ও অবসরপ্রাপ্ত এজিএম (রপ্তানি) মো. হুমায়ুন কবির ঢালী এবং প্রিন্সিপাল অফিসার শ. ম. মাহাতাব হোসাইন বাদশা। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

