রাজধানীর গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, বিদ্যালয়টির চতুর্থ ও পঞ্চম তলার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না করেই সরকারি তহবিল থেকে কোটি টাকার বেশি অর্থ তুলে নেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলাও করেছে। কিন্তু তবুও ঢাকা জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ বাচ্চু মিয়া এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। নিয়মিত অফিস না করলেও তাঁর বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে জনমনে প্রশ্ন ও গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।
দুদকের এজাহার সূত্রে জানা যায়, নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ বাচ্চু মিয়া, সিনিয়র প্রকৌশলী ছাবের আলী, উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শামস জাভেদ এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নির্মাণ প্রকৌশলীর মালিক আবু সাইদ খান পরস্পর যোগসাজশে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।
তারা গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ তলার কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন করেন। এতে মোট ১ কোটি ২২ লাখ ১৯ হাজার ৮০৬ টাকা আত্মসাৎ হয়। এই অপরাধ দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।
অভিযোগের সত্যতা মেলায় দুদকের সহকারী পরিচালক স্বপন কুমার রায় গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি করা হয়েছে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে।
ঢাকা জেলা এলজিইডির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“নির্বাহী প্রকৌশলী বাচ্চু স্যারের অনেক প্রভাব। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে। তাই কেউ তাঁকে কিছু বলতে পারে না।”
তিনি আরও জানান, মামলার পর প্রথম দিকে বাচ্চু মিয়া অফিসে আসতেন না। এখন তিনি সন্ধ্যার পর থেকে রাত পর্যন্ত অফিসে থাকেন।
আরেক কর্মকর্তা বলেন,
“মামলার পর থেকে আমরা তাঁর অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করছি না। এতে তিনি আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রায়ই অফিসে খারাপ আচরণ করছেন।”
অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
একইভাবে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী জাবেদ করিমের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হলেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, নির্বাহী প্রকৌশলী বাচ্চু মিয়ার বিরুদ্ধে এর আগেও আর্থিক অনিয়ম, চাঁদাবাজি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং প্রকল্পের কাজে স্থবিরতা তৈরির মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

