Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Tue, Nov 25, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাণিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • শিক্ষা
      • স্বাস্থ্য
      • প্রযুক্তি
      • ধর্ম
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » আইনি রায়ের আগেই জনতার রায়ে পরাজিত হাসিনা
    অপরাধ

    আইনি রায়ের আগেই জনতার রায়ে পরাজিত হাসিনা

    মনিরুজ্জামানNovember 24, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) বিচারে শক্তিশালী অংশ বা দুর্বলতা কী—সেগুলো নিয়ে আইন বিশেষজ্ঞরা আলোচনা করবেন। আমাদের আলোচনার বিষয় হলো, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক পতন এবং জনগণের, বিশেষত তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে তিনি ‘দোষী সাব্যস্ত’ হয়েছে অনেক আগে—২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সেই অভ্যুত্থানের দিনগুলোতেই।

    বর্তমানে তার খ্যাতি ভেঙেচুরে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক জীবন দাফন হয়েছে অহংকার, আত্মম্ভরিতা, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা এবং পুলিশ-প্রশাসনকে মাথায় তুলে রাখার সংস্কৃতির নিচে। হাসিনার পতনের কারণ হিসেবে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের যে ব্যাখ্যা দেয় আওয়ামী লীগ, বাস্তবে আইসিটি ঘোষিত ‘মৃত্যুদণ্ড’ মূলত তিনি নিজেই ডেকে এনেছিলেন। রাজনৈতিক ভিন্নমতকে নিষ্ঠুরভাবে দমন, আইনের অপব্যবহার, দুর্নীতি, দলীয়করণের মাধ্যমে প্রশাসন পরিচালনা, ব্যাংক লুট, অর্থপাচার, স্বাধীন গণমাধ্যম দমন এবং অনুগতদের দুর্নীতিতে প্রলুব্ধ করা—এসবই তার শাসনামলের চিহ্ন। শেষ দিকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য শিশুসহ অন্তত ১ হাজার ৪০০ নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে। বছরের পর বছর চলা গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড তার শাসনামলের পরিচায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। হ্যাঁ, কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি এবং সামাজিক সূচকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে কিন্তু গণতন্ত্র ধ্বংস করা ও অপ্রতিরোধ্য স্বৈরাচারী শাসনের কারণে এসব কৃতিত্ব সম্পূর্ণভাবে ঢেকে গেছে।

    শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের কাছে শেখ হাসিনার গ্রহণযোগ্যতা একেবারে ধসে পড়ে। সাধারণ মানুষের মধ্যে তার প্রতি ঘৃণা আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে। একই সঙ্গে, বহু আগে থেকেই জনগণের আদালতে তার ‘মৃত্যুদণ্ড’ ঘোষিত হয়েছিল সাধারণ মানুষ হত্যার কারণে। অনেক স্বৈরশাসক ও একনায়কের তুলনায় হাসিনার শাসনামলের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, অল্প সময়ে এত বিপুলসংখ্যক নিরস্ত্র প্রতিবাদকারীকে হত্যা করার নজির খুব কমই আছে।

    হাসিনার কৃতিত্ব হিসেবে দেখা যায়, ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার পর তিনি দলকে পুনর্গঠিত ও পুনরুজ্জীবিত করে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী করেছিলেন। প্রথম মেয়াদে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি (যা তিনি নিজেই কার্যকর করেননি) এবং গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি আওয়ামী লীগের জন্য নতুন যুগের সূচনা করেছিল।

    কিন্তু বছর ঘিরে তিনি কার্যত নিজের দলকেই ধ্বংস করে দেন। তিনি পুলিশ, প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থাকেও ধ্বংস করেছেন। দলকে রূপান্তরিত করেছেন এক রাজনৈতিক শক্তিকেন্দ্র থেকে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও সহিংসতার যন্ত্রে। আদর্শের জায়গায় তোষামোদ, নীতির জায়গায় নেতার প্রশস্তি, জনগণের সেবা করার পরিবর্তে স্বার্থসিদ্ধির পথে দল পরিচালিত হয়েছে। প্রতিটি মনোনয়ন বিক্রি করা হয়েছে, পদোন্নতি হয়েছে ঘুষের বিনিময়ে এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকে নিজেদের সম্পত্তির মতো ব্যবহার করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনও হত্যায় লিপ্ত এক দলে পরিণত হয়েছিল। তার অকাট্য প্রমাণ হলো বুয়েট শিক্ষার্থী আবরারের ওপর ছাত্রলীগের নির্যাতন ও হত্যা।

    ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয় শেখ হাসিনা মেনে নিতে পারেননি। তার বিশ্বাস, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ কখনো হারতে পারে না; হারে শুধু তখনই, যখন কারচুপির মাধ্যমে ফলাফল পরিবর্তন করা হয়। সে সময় তিনি ‘সূক্ষ্ম কারচুপি’ হয়েছে দাবি করে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করেন। এখান থেকেই শুরু হয় তার অহংকার ও সংকীর্ণতা, যা তাকে সত্যকে অগ্রাহ্য করতে এবং ভয়াবহ ভুল করতে বাধ্য করে।

    ২০০৪ সালের আগস্টে প্রাণঘাতী গ্রেনেড হামলা থেকে তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে গেলেও ২৪ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী নিহত হন। হামলার তদন্ত বা বিচারে কোনো বিশ্বাসযোগ্য উদ্যোগ গ্রহণ করেনি তৎকালীন বিএনপি সরকার। সম্ভবত এখান থেকেই হাসিনার মনোভাব গড়ে ওঠে, যে বিরোধীদলে থাকলে তিনি সবসময় ঝুঁকিতে থাকবেন এবং একবার ক্ষমতায় গেলে আর কখনো ছাড়বেন না। আমাদের দৃষ্টিতে, এখান থেকেই বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ক্ষয় শুরু হয়।

    ২০০৮ সালে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে ক্ষমতায় ফিরে তিনি ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন। এরপর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের ফল নিজের মতো করে নেন। প্রতিবার কারচুপির পর তার আত্মবিশ্বাস বাড়তে থাকে। তিনি মনে করতে থাকেন রাজনৈতিক মিত্ররা তার ঘুঁটি, প্রতিপক্ষ সহজেই নিয়ন্ত্রণযোগ্য এবং ভিন্নমত দমন করা সম্ভব। ভুল স্বীকার না করার মানসিকতায় তিনি সীমাহীন অহংকারী হয়ে ওঠেন।

    ২০১৩ সালে সম্পাদকদের এক বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, “আমাকে হত্যার এত চেষ্টা সত্ত্বেও আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন তার ইচ্ছা পূরণের জন্য। কাজেই আপনারা যা খুশি লিখুন, আমি পরোয়া করি না।” তিনি বিশ্বাস করতেন, স্রষ্টাই তাকে পথ দেখাচ্ছেন। এভাবে একদিকে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন, অপরদিকে অসহিষ্ণু হয়ে ওঠেন। ফলস্বরূপ, তিনি জনগণ ও নিজের দলের কাছ থেকে ক্রমেই দূরে সরে যান।

    তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায় যে শেখ হাসিনা জাতীয় নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিজের হাতে নিতে যাচ্ছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রকাশ্যে নির্লজ্জ কারচুপি করা হয়। এটি সবার সামনে ছিল একেবারে স্পষ্ট। ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৫৩ আসনে একক প্রার্থী ছিলেন, কারণ বাকিরা ‘স্বেচ্ছায়’ সরে দাঁড়ান। নির্বাচন কমিশন তখন সেই একক প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করে, যারা সবাই আওয়ামী লীগের। অর্থাৎ ২০১৪ সালের নির্বাচনে একটি ভোটও পড়ার আগেই আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের জন্য সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যায়। এটি নির্বাচনের ইতিহাসে সবচেয়ে অগণতান্ত্রিক ও অযৌক্তিক হস্তক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা ছাড়া এটি সম্ভব নয়।

    হাসিনা সরকার এ ধরনের নির্বাচনী জালিয়াতি পার পেয়ে যাওয়ায়—যেখানে বিএনপির কার্যকর প্রতিবাদও ছিল না—তিনি ও তার অনুগতরা বিপজ্জনক কিন্তু ভ্রান্ত আত্মবিশ্বাসে চাঙ্গা হয়ে ওঠেন। এই আত্মবিশ্বাসই ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে আবারও কারচুপি করার পথপ্রদর্শক হয়। শেষ পর্যন্ত ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে তারা নিজেদের খোঁড়া গর্তে পড়ে।

    ২০২০-২০২২ সালের করোনা মহামারির সময় হাসিনা দল ও জনগণ থেকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। প্রশাসনের দৈনন্দিন কাজকর্ম অচিন্তনীয় রীতিতে পরিচালিত হয়। এর মধ্যে ২০২০ সালে আসে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের জাঁকজমকপূর্ণ এবং ব্যয়বহুল আয়োজন। সচেতন নাগরিক সমাজ ও সাধারণ মানুষের মনে এই আয়োজন গভীর আঘাত সৃষ্টি করে। এখান থেকেই স্পষ্ট হয়, জনগণের জরুরি প্রয়োজনগুলো প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিকোণ থেকে বাদ পড়েছে। বরং সরকারের সব মনোযোগ ও সম্পদ ব্যয় হয়েছে ব্যক্তিপূজার সংস্কৃতিতে।

    জাতির মনস্তত্ত্ব ব্যক্তিপূজার বিরুদ্ধে, কিন্তু শেখ হাসিনা উল্টো পথে হেঁটেছেন। অসংখ্য অখ্যাত লেখক হাজার হাজার বই লিখলেও সরকার অস্বাভাবিক উচ্চ দামে সেগুলো কিনে নিয়েছে। এগুলো হয়ে ওঠে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা, শিক্ষক ও কথিত পেশাজীবীদের কাছে সরকারি অর্থ লুটের নতুন পথ। সবাই যেন প্রতিযোগিতায় নেমে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের তোষামোদ করে নিজেরাও কিছু অর্থ উপার্জনে সমৃদ্ধ হয়েছেন।

    জন্মশতবার্ষিকীর বড় আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে ভালো ও গবেষণনির্ভর বর্ণনা উঠে আসেনি। বরং স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দেওয়া হয় নিম্নমানের প্রকাশনা, যেগুলোর মূল্য কাগজের সমানও নয়। বঙ্গবন্ধুর শত শত ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে, কিন্তু এগুলো তার সম্পর্কে সত্যিকারের জ্ঞান বাড়ানোর বদলে সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে। সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হলে সেই ভাস্কর্যগুলোই আক্রমণের প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে। ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কাছে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য প্রথমবার দেখেই মনে ভেসে ওঠে সাদ্দাম হোসেনের মূর্তি ভাঙার দৃশ্য। অন্তর্দৃষ্টি বলছিল, সুযোগ পেলেই জনগণ এগুলো ধ্বংস করবে।

    এরপর আসে ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন। শেখ হাসিনা এটি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের ধারাবাহিকতা হিসেবে উদযাপন করেন। মুক্তিযুদ্ধের অগ্রণী এবং বর্তমান প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধারা স্তম্ভিত হয়ে দেখেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে অল্প। তাদের ত্যাগ, বীরত্ব ও দেশপ্রেমের গল্পগুলো উপেক্ষিত থাকে। সশস্ত্র বাহিনীর বিদ্রোহী সদস্যদের, যারা তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের কার্যকর যুদ্ধশক্তিতে রূপান্তরিত করেছিলেন, তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন প্রবাসী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আলোচনার বাইরে রাখা হয়। সবকিছু আবারও এক ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে দাঁড়ায়। জীবিত মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধে নিহতদের পরিবার অপমানিত বোধ করেন।

    দম্ভ ও দূরদৃষ্টিহীনতার আরেকটি উদাহরণ হলো—শেখ হাসিনা সরকারি অফিস, আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিও, ব্যাংক, বিমানবন্দরসহ সব জায়গায় ‘মুজিব কর্নার’ চালু করতে বাধ্য করেছেন। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ছবি ও বই রাখা হয়, যাদের অধিকাংশই নিম্নমানের। তবে যদি তিনি ‘মুক্তিযোদ্ধা কর্নার’ চালুর নির্দেশ দিতেন, যেখানে মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত সব ধরনের বই রাখা হতো, তাহলে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম, আমাদের গৌরবময় ইতিহাস সম্পর্কে আরও সচেতন ও শিক্ষিত হতে পারত। বাস্তবতা হলো—১৫ বছরের শাসনামলে হাসিনা সরকার জনগণের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে কার্যত কিছু করেনি। বরং এটি পরিণত হয়েছে ‘মুজিব পূজা’য়, যা মানুষের মনে ঘৃণা ও বিচ্ছিন্নতা তৈরি করেছে।

    ২০২২ সালের মধ্যে হাসিনার দম্ভ চরমে পৌঁছায়। রাজনৈতিক আলোচনায় প্রচলিত হয় ‘আমি সব জানি’, ‘সমালোচক মানেই শত্রু’, ‘আমি যা করি সেটাই দেশের জন্য সবচেয়ে ভালো’ ধরনের বক্তব্য। তোষামোদ এমন অযৌক্তিকতায় পৌঁছে যায় যে দলীয় নেতাকর্মীরা সত্যিই বিশ্বাস করতে শুরু করেন, কোনো সমস্যা নেই যা তাদের নেত্রী সমাধান করতে পারবেন না। এই পরিবেশে সুযোগসন্ধানীরা একে অপরকে ছাড়িয়ে যেতে থাকে নেত্রীর তোষামোদে। এভাবেই হাসিনা ও তার আশপাশের লোকজন বসবাস করতে থাকেন নিজেদের তৈরি এক অযৌক্তিক বুদবুদে।

    সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হাসিনা সরকারের আচরণ স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে তার দল ও সরকারের কার্যকারিতা কতটা হ্রাস পেয়েছে। একপর্যায়ে তিনি হঠাৎ ঘোষণা দেন, সব কোটা বাতিল। তবে এই সিদ্ধান্ত প্রতিবন্ধী, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য সংবিধানিক সুরক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল। ফলে উচ্চ আদালত তা বাতিল করে। এভাবে কোটা সংস্কারের দাবি আজও ঝুলে আছে।

    এই পর্যায়ে শেখ হাসিনা চাইলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলাপ করে পরিস্থিতি সমাধান করতে পারতেন। কিন্তু ২০২৪ সালের জুলাইয়ে পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে। ১৬ জুলাই থেকে রাস্তায় ব্যাপক হত্যাকাণ্ড শুরু হয়। দ্য ডেইলি স্টারের সাংবাদিকরা সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মরদেহের সংখ্যা গুনেছেন। ২০২৪ সালের ১ আগস্ট পর্যন্ত তারা ২০১টি মরদেহ গণনা করেছেন এবং প্রিয়জন হারানো শত শত পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রতিদিন যাচাই করা মৃত্যুর সংখ্যা দিয়েই দিনের প্রধান প্রতিবেদন ও শিরোনাম তৈরি করা হয়েছে।

    অসংখ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও হাসিনা দাবি করেছেন, তিনি আন্দোলনকারীদের ওপর গুলির নির্দেশ দেননি। তবে যদি সত্যিই তিনি নির্দেশ না দিয়ে থাকেন, তাহলে গুলি চালানো শুরু হলে তা বন্ধ করার নির্দেশ কেন দেননি? গণঅভ্যুত্থানের সময় প্রতিদিন পত্রিকা খুললেই দেখা যাচ্ছিল আগের দিনের মৃত্যুর সংখ্যা। সাধারণ মানুষ হত্যা হচ্ছে, অথচ প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না—এটা বিশ্বাস করার কোনো সুযোগ নেই। সত্য হলো, তিনি জানতেন এবং তিনিই এই হত্যাকাণ্ডের ‘হুকুম’ দিয়েছেন।

    আইনি দিকটি একপাশে রেখে যারা সেই ভয়াবহ দিনগুলো স্বচক্ষে দেখেছেন, প্রতিবেদন তৈরি করেছেন এবং সরকারকে সতর্ক করেছেন, তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হাসিনা নিজ জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধ করেছেন।

    মাহফুজ আনাম, সম্পাদক ও প্রকাশক, দ্য ডেইলি স্টার।

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    বিনোদন

    ভোটের আগে রাজনৈতিক জটিলতা

    November 25, 2025
    অপরাধ

    প্রতি ১০ মিনিটে একজন নারী হত্যার শিকার: জাতিসংঘ

    November 25, 2025
    মতামত

    গণ-অভ্যুত্থনের পর বিপ্লবের পথচ্যুতি

    November 25, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত

    আইন আদালত October 7, 2025

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.