বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষা ঘিরে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠার পর পরিস্থিতি নাটকীয় মোড় নিয়েছে। ফল পরিবর্তনের জন্য অর্থ লেনদেনের প্রমাণ এবং খোদ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যানের মেয়ের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর, কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত বিতর্কিত রিভিউ পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। এই পুরো ঘটনাটি দেশের আইনি পেশার নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তুলেছে।
- পদ্ধতি: সেলিম কক্সবাজার নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক থাকাকালীন সচিবের ঘনিষ্ঠ কর্মচারী হিসেবে নিজের পরিচয় ব্যবহার করেন।
- অর্থ লেনদেন: ফল প্রত্যাশীদের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এক অডিও রেকর্ডে সেলিমকে বলতে শোনা যায়, “সচিবের জন্য নগদ ৩ লাখ টাকা লাগবে, আমার জন্য ৫০ হাজার। কাজটা হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।” তিনি রোল নম্বর ফলাফল শীটে উঠিয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দেন। এই কথোপকথন উচ্চ পর্যায়ে ফল পরিবর্তনের অপচেষ্টার ইঙ্গিত দেয়।(সূত্র- দৈনিক দেশ রূপান্তর, ২৪ অক্টোবর ২০২৫ এবং আমার ব্যক্তিগত সোর্স)
• নম্বর গ্রেসের নাটক: অভিযোগ ওঠে যে বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যানের মেয়ে লিখিত পরীক্ষায় ফেল করলে তাকে পাশ করানোর জন্য বিশেষ বিবেচনায় ৩ নম্বর গ্রেস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত অন্যদেরও প্রভাবিত করে।

কাজী মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ-এর ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগৃহীত
• অসঙ্গতিপূর্ণ ফলাফল:
- ইতিমধ্যে পাশ করা দুইজনের রোল নম্বর রিভিউ ফলাফল শীটে পুনরায় আসে।
- পরীক্ষায় নকলের দায়ে বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীর রোল নম্বরও রিভিউ ফলাফলে অন্তর্ভুক্ত হয়।
- নেতা ও কোচিং সেন্টার: বিভিন্ন জেলার আইনজীবী নেতা এবং কোচিং সেন্টার ব্যবসায়ীরা ‘রিভিউয়ের নামে’ অর্থ সংগ্রহ করে এই দুর্নীতিতে ইন্ধন জোগান। অভিযোগ ওঠে, আসলে কোনো রিভিউই হয়নি, বরং অর্থের বিনিময়ে ফলাফল তৈরি হয়েছে।
৩. অর্থ ফেরত ও উত্তপ্ত পরিস্থিতি: অর্থ লেনদেনের বিষয়টি ফলাফলের পর আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে, ৬ লাখ টাকা ফেরত দাবি: ফল পরিবর্তনের জন্য টাকা দিয়েও কাজ না হওয়ায় পরীক্ষার্থীরা অর্থ ফেরত চাইতে শুরু করেন। সূত্র জানায়, দুজন পরীক্ষার্থী সুপ্রিম কোর্টের এক প্রভাবশালী আইনজীবী নেতার চেম্বারে গিয়ে তাদের দেওয়া ৬ লাখ টাকা ফেরত চেয়েছেন, যা উচ্চ পর্যায়ে অর্থ লেনদেনের প্রমাণ হিসেবে কাজ করছে।
বার কাউন্সিল পরীক্ষার এই ধারাবাহিক অনিয়ম, বিশেষ করে ক্ষমতার অপব্যবহার , উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে অর্থ সংগ্রহ , এবং আইনজীবী নেতার চেম্বারে অর্থ ফেরতের দাবি—বিচার ব্যবস্থার ভিত্তিকেই নাড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনা দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে আইনজীবী সমাজ ও সাধারণ জনগণ।
- সম্প্রতি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আইনজীবী তালিকাভুক্তি পরীক্ষা ঘিরে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে লিখেছেন কাজী মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ। সুত্র: লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

