ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সভায় দেশের ব্যাংকিং খাতের সংকট নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বিদেশে সম্পদ গড়া ও ব্যাংকের টাকা লুটপাটে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, দেশের বাইরে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা হবে। গভর্নর স্পষ্ট করেন যে, লুটেরাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রবাসী পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় গভর্নর জানান, ব্যাংকের লোপাট হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ কাজে সহায়তার জন্য ইতোমধ্যে ১০টি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের ব্যাংক খাতের দুর্নীতি ও অর্থ পাচার নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানান। উত্তরে গভর্নর বলেন, ব্যাংকিং খাতের এই চরম সংকটময় পরিস্থিতিতেও জনগণের ধৈর্য ও আস্থা প্রশংসনীয়। বর্তমান সংকটেও কোথাও কোনো ধরনের সহিংসতা বা হামলা হয়নি। তিনি এই পরিস্থিতিকে দেশের জন্য সৌভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করেন।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানান, দেশের ব্যাংকিং খাতের জরুরি সংস্কারের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। গত ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৯.৫০ থেকে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে, যা আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে। তবে গভর্নর আশা করেন, মূল্যস্ফীতি কমলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে সুদহার কমানোর সুযোগ সৃষ্টি হবে।
ওয়াশিংটনে আইএমএফের বার্ষিক সভায় যোগদানকালে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও তার প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার সঙ্গে একাধিক বৈঠকে অংশ নেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়ে তারা দেশের ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধির একটি রোডম্যাপ তুলে ধরেন। এই প্রক্রিয়ায় ব্যাংক খাতকে পুনরুদ্ধার ও সংস্কারে তারা নীতিসহায়তা চেয়েছেন।
গভর্নর জানান, আগামী মাস থেকে দেশের ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ সম্পদের মূল্যায়ন শুরু হবে, যার ভিত্তিতে ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।