সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার গুলশানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আয়োজিত কপ২৯ অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
জলবায়ু পরিবর্তনের জটিল ও গভীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি জোর দেন।
অনুষ্ঠানে তিনি উন্নত দেশগুলোকে তাদের জলবায়ু অর্থায়ন ও প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রতিশ্রুতি পূরণের আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি পালন করা এখন অতীব জরুরি।”
তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। রিজওয়ানা বলেন,
“বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণের মাত্রায় সামান্য অবদান রেখেও জলবায়ুর প্রভাব বহন করছে। আমাদের বর্তমান বাস্তবতা উপলব্ধি করে একটি ন্যায়সংগত সমাধানের প্রয়োজন।”
রিজওয়ানা বিশেষভাবে বাংলাদেশে জলবায়ু কর্মের উন্নয়নে যুবসম্প্রদায়ের ভূমিকা তুলে ধরেন।
তিনি জানান, সরকার যুবকদের জলবায়ু কর্মকাণ্ডে যুক্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে।
তিনি বলেন, “যুবরা আমাদের ভবিষ্যৎ, তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা না হলে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমাদের প্রচেষ্টা সফল হবে না।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বাংলাদেশে জলবায়ু সংরক্ষণ ও সহনশীলতায় সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন।
তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ গ্লোবাল ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স নেটওয়ার্কে গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
এই দেশের অভিজ্ঞতা বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য শিক্ষা হিসেবে কাজ করতে পারে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূত, পরিবেশ সচিব, আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, পরিবেশ সংশ্লিষ্ট অংশীজন এবং যুব জলবায়ু কর্মীরা।
তাদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানের গুরুত্বকে বাড়িয়ে তোলে।
আলোচনার সমাপনীতে রিজওয়ানা পরিবেশের সুরক্ষায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর পুনরায় গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, “কপ২৯ সম্মেলন হচ্ছে একটি সুযোগ, যেখানে বিশ্বকে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গির দিকে ধাবিত করা যেতে পারে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত পৃথিবী নিশ্চিত করার জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য।
অনুষ্ঠানে উঠে এসেছে যে, বাংলাদেশসহ অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জলবায়ু অর্থায়নের জন্য উন্নত দেশগুলোর দায়িত্ব ও প্রতিশ্রুতির গুরুত্ব।
আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে এই আহ্বান যেন অবিলম্বে প্রতিধ্বনিত হয়, তা নিশ্চিত করা উচিত।