গত ২০ আগষ্ট পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর থেকে সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ মিলতে থাকে। যাতে গ্রাহকরা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী অর্থ না পেয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে গ্রাহকরা বাকবিতন্ডায় জড়িয়েছে।
আব্দুল আউয়াল মিন্টু একজন ব্যবসায়ী নেতা। তিনি ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে তিনি ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন প্রায় দুই দশক। বর্তমানে তিনি ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের দ্বায়িত্বে ফিরেছেন। দীর্ঘ দিনের অনিয়ম ও দুর্নীতে ব্যাংকের অবস্থা খুবই শোচনীয়।
এমন অবস্থায় আব্দুল আউয়াল মিন্টু জানান, ব্যাংকে নগদ অর্থের তীব্র সংকট। আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতেও ব্যাংকের সেই অবস্থান নেই। এক সময় এই ব্যাংক সরকারকে ঋণের যোগান দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংকের অর্থের সল্পতা থাকে ধার দিতো। কিন্তু বর্তমানে ব্যাংকের দৈনিক নগদ অর্থের লেনদেন করা সম্ভব হচ্ছে না। নগদ অর্থের সল্পতার কারণে ক্যাশ কাউন্টার বন্ধ রাখতে হয়। গতকাল সিলেটে ব্যাংকটির হবিগঞ্জ শাখায় চাহিদা অনুযায়ী নগদ অর্থ না পাওয়ায় বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে জানা যায়।
গ্রাহকরা জানান, চাহিদা অনুযায়ী তারা অর্থ পাচ্ছে না। অর্থ তুলতে গেলে বিভিন্ন রকম হয়রানির শিকার হতে হয়। ১০ হাজার টাকার বেশি গ্রাহকদের তুলতে দিতো না ব্যাংকটি। গতসপ্তাহে ৩ হাজার টাকার বেশি তুলতে দেওয়া হবে না বলে ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান। এতে গ্রাহকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ব্যাংকে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং সেখানেই বিক্ষোভ করে।গত এক মাসে ন্যাশনাল ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে।
ন্যাশলান ব্যাংকের পরিচালক আব্দুল আউয়াল মিন্টু প্রতিষ্ঠাকালীন টানা ২০ বছর পরিচালক ছিলেন। গত ২১ বছর পরে পরিচালক হিসেবে দ্বায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনিও ব্যাংকের এমন দূরঅবস্থা দেখে হতাশ।
ন্যাশনাল ব্যাংকের বিগত কয়েক বছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রায় দুই বছর ধরেই আমানত স্থিতি কমেছে। গত বছরেও আমানত স্থিতি ছিলো ৪২ হাজার ৬১০ কোটি টাকা যা এবছর জুনে এসে দাঁড়ায় ৪০ হাজার ৭৬ কোটি টাকা। ২ হাজার কোটি টাকার আমানত কমেছে গত তিন মাসে। ব্যাংকটি বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৪২ হাজার কোটি টাকার বেশি। এই ঋণের বেশির ভাগই খেলাপি। ২০২৪ সালের প্রথম নয় মাসে ব্যাংকটি লোকসান গুনছে ৬৯৮ কোটি টাকা। এর আগেও গত দুই বছরে লোকসান গুতে হয়েছে ব্যাংকটিকে ৪ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।