সরকারের নতুন পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য সংগ্রহের জন্য প্রস্তাবনা অনুমোদন দিয়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে এলএনজি, গম, নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল এবং সার। সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ (এসিসিজিপি) কমিটির ১১তম সভায় এসব প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এ সময় খুচরা বাজারে পণ্যের চাহিদা এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সরকারের এই সংগ্রহ পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
গম সংগ্রহে অনুমোদন-
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাবের ভিত্তিতে, সরকার সিঙ্গাপুরের এমএস এগ্রোক্রোপ ইন্টারন্যাশনাল পিটি লিমিটেডের কাছ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম ক্রয়ের জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্রায় ১৮০ কোটি ৮২ লাখ টাকার চুক্তি করবে। প্রতি মেট্রিক টন গমের মূল্য নির্ধারিত হয়েছে ৩০১.৩৮ মার্কিন ডলার। এই গমের সরবরাহ বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়ক হবে, বিশেষ করে দেশের কৃষি উৎপাদন পরিস্থিতির সাময়িক সংকটের মধ্যে।
নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল সংগ্রহ:-
অন্যদিকে, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আরেকটি প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে, সরকার ভারতের এমএস পট্টাভী এগ্রো ফুডস প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয় করবে। এই চালের জন্য মোট খরচ হবে প্রায় ২৮৬ কোটি ২০ লাখ টাকা এবং প্রতি মেট্রিক টন চালের দাম হবে ৪৭৭ মার্কিন ডলার।
সারের সংগ্রহ:-
শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) চলতি অর্থবছরে চতুর্থ লটে কাতারের মুনতাজাত থেকে প্রায় ১৪০ কোটি ২৮ লাখ টাকার বিনিময়ে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক দানাদার ইউরিয়া সার সংগ্রহ করবে। প্রতি মেট্রিক টন সারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৮৯.৬৭ মার্কিন ডলার।
এলএনজি সংগ্রহের অনুমোদন:-
এছাড়া, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, সরকার সুইজারল্যান্ডের এমএস টোটালএনার্জিস গ্যাস এন্ড পাওয়ার লিমিটেডের কাছ থেকে এক কার্গো এলএনজির জন্য আন্তর্জাতিক কোটেশন সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় ৬১৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকায় চুক্তি করবে। প্রতি একক এলএনজির মূল্য হবে ১৩.১২ মার্কিন ডলার। পাশাপাশি, সরকারের আরেকটি প্রস্তাবে সিঙ্গাপুরের এমএস গানভর সিঙ্গাপুর পিটি লিমিটেডের কাছ থেকে আরও একটি কার্গো এলএনজির ক্রয় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার জন্য খরচ হবে ৬৩৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এবং প্রতি একক এলএনজির দাম হবে ১৩.৪৭ মার্কিন ডলার।
চাহিদা মেটাতে সরকারের এই পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং দেশের খাদ্য, সার এবং জ্বালানি সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।