Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Thu, May 22, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • খেলা
    • প্রযুক্তি
    • বিনোদন
    • মতামত
    • সাহিত্য
    • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম: বাংলাদেশের এক উদ্বেগজনক বাস্তবতা
    অর্থনীতি

    ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম: বাংলাদেশের এক উদ্বেগজনক বাস্তবতা

    এফ. আর. ইমরানNovember 13, 2024Updated:March 19, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    শিশুশ্রম বলতে বোঝায় সেইসব কাজ, যেখানে নির্দিষ্ট বয়সের নিচে শিশুরা বাধ্য হয়ে জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজে নিযুক্ত হয়। এটি শুধুমাত্র তাদের শিক্ষাজীবনই ব্যাহত করে না বরং শারীরিক, মানসিক বিকাশ এবং সামাজিক বিকাশের পথেও বাধা সৃষ্টি করে। শিশুদের সুন্দর ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার পরিবর্তে তাদের শৈশবকাল কেটে যায় কঠোর পরিশ্রমে। যা তাদের জীবনের সম্ভাবনাকে ক্রমেই সংকুচিত করে দেয়।

    বাংলাদেশে শিশুদের কাজের চাপ মূলত দুই ধরনের- সাধারণ শিশুশ্রম ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম। বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ কাজগুলো, যেমন: কারখানায় মেশিন পরিচালনা, নির্মাণশিল্প, রাসায়নিক কারখানা এবং ইটভাটায় কাজ- এগুলোতে তারা গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়ে। নির্দিষ্ট বয়সের নিচে শিশুদের এই কাজগুলো করানো আইনগতভাবে নিষিদ্ধ হলেও, সামাজিক ও আর্থিক চাপে অনেক পরিবারই তাদের সন্তানদের শ্রমে পাঠায়।

    বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশুশ্রম কেবল একটি সামাজিক সমস্যা নয় বরং এটি জাতীয় উন্নয়নের জন্যও একটি বড় প্রতিবন্ধক। এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে হলে দরকার সম্মিলিত প্রচেষ্টা- আইনের কঠোর বাস্তবায়ন, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য বিকল্প আয়ের সুযোগ তৈরি করা।

    বাংলাদেশ জাতীয় শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী, ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের কর্মে নিয়োজিত করা আইনত অপরাধ।

    বর্তমান পরিস্থিতি:
    শিশুশ্রমের পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগ জনক। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত “জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ ২০২২ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রায় ৩৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৭ শিশু শ্রমে নিযুক্ত, যা ২০১৩ সালের জরিপের তুলনায় প্রায় ৩ শতাংশ বেশি। এই বিশাল সংখ্যক শ্রমিকশ্রেণির শিশুদের মধ্যে প্রায় ১৭ লাখ ৭৬ হাজার ৯৭ জন শিশুশ্রমের আওতায় পড়েছে।

    শিশুশ্রমের এ ক্রমবর্ধমান হার আমাদের সমাজ ও জাতির জন্য এক গভীর সংকটের বার্তা বহন করে। প্রতিটি শিশু তার শিক্ষাজীবন এবং সুস্থ শৈশব কাটানোর অধিকার রাখে অথচ বর্তমান পরিস্থিতি বলে দেয় অনেক শিশু শৈশবের পরিবর্তে জীবিকার তাড়নায় কঠোর পরিশ্রমে নিমজ্জিত হচ্ছে। এর ফলশ্রুতিতে, এই শিশুরা তাদের ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে বিসর্জন দিয়ে যাচ্ছে।

    এই চিত্রটি কেবল দারিদ্র্যের পরিসংখ্যানই নয়; এটি সমাজের কাঠামোতে প্রচলিত আর্থসামাজিক বৈষম্যের একটি বাস্তব উদাহরণ। শিশুশ্রমের এই অগ্রহণযোগ্য বাস্তবতা থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হলে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা এবং আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে।

    কারণ সমূহ:
    দারিদ্র্য এবং শিক্ষার সুযোগের অভাবই মূলতঃ শিশুদের শ্রমে ঠেলে দেয়ার প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত। ইউনিসেফের তথ্যমতে, “ছেলে ও মেয়ে উভয়ই সমানভাবে শিশু শ্রমে জড়িত”, তবে তাদের ভূমিকা ভিন্ন। মেয়েদের ক্ষেত্রে অবৈতনিক গৃহশ্রম করার প্রবণতা বেশি দেখা যায়, যা তাদের শিক্ষা ও মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে।

    অন্যদিকে, বিশ্বব্যাংকের গবেষণা দেখা যায়- ১৯৬০ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী শিশু শ্রমের হার ২৫ শতাংশ থেকে কমে ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে এই অগ্রগতি সত্ত্বেও, শিশু শ্রম এখনো অনেক দেশের জন্য এক গভীর সংকট। শিশুদের উন্নত জীবনের সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য দরিদ্রতা দূরীকরণ এবং শিক্ষার সুযোগ সবার জন্য সহজলভ্য করা অপরিহার্য।

    শিশুশ্রম প্রতিরোধের উপায়:

    শিশুশ্রম রোধে শুধুমাত্র আইনি পদক্ষেপই যথেষ্ট নয়। এর পাশাপাশি সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা প্রসার, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শিশুদের নিজেদের অধিকার সম্পর্কে জানার সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন। প্রতিটি শিশু যেন শৈশব কাটানোর স্বাধীনতা পায়, সেই লক্ষ্যে কার্যকর কর্মসূচি চালানো জরুরি।

    শিক্ষার প্রসার ও সচেতনতার মাধ্যমে পরিবারগুলোকে বুঝতে হবে যে, শিশুশ্রম তাদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে পারবে না; বরং দীর্ঘমেয়াদে জাতির ভবিষ্যতকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাই শিশুদের সুরক্ষিত জীবন নিশ্চিত করতে হলে আমাদের দরকার আইনের কঠোর প্রয়োগ। পাশাপাশি সমাজব্যাপী শিশুদের অধিকার ও শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার ও সচেতনতার উদ্যোগ।

    শিশুশ্রম রোধে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও আন্তর্জাতিক এনজিওদের সম্মিলিতভাবে শিশু শ্রমিকদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই উদ্যোগের মাধ্যমে শিশুরা শিক্ষার আলোয় ফিরে আসতে পারবে এবং তাদের শৈশব পুনরুদ্ধারের সুযোগ পাবে।

    সকল শিশু যেন সুরক্ষিত ও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হলে দরকার পুনর্বাসন কেন্দ্র, শিক্ষার সুযোগ এবং মানসিক ও শারীরিক সহায়তার ব্যবস্থা। শিশুশ্রম বন্ধ করতে হলে সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতার পাশাপাশি পুনর্বাসনের এই প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করতে হবে।

    শিশুশ্রমের আইন:
    বাংলাদেশের শ্রম আইন অনুযায়ী, ১২ বছরের নিচে কোনো শিশুকে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোরদের ক্ষেত্রে কিছু শর্তসাপেক্ষে কর্মসংস্থানের অনুমতি থাকলেও, তাদের জন্য সর্বাধিক কর্মঘণ্টা সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে ৭ ঘণ্টায়। একই সঙ্গে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৪-এর অধীনে যে কোনো ধরনের জোরপূর্বক শ্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যা মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

    এই আইনি ব্যবস্থা শিশুদের সুরক্ষিত ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে সহায়ক হলেও, বাস্তবে এর সঠিক বাস্তবায়ন এবং সচেতনতার অভাবে অনেক ক্ষেত্রেই শিশুদের উপর শ্রমের চাপ অব্যাহত থাকে। তাই আইন প্রয়োগের পাশাপাশি দরকার ব্যাপক সচেতনতা ও কার্যকরী পদক্ষেপ, যা শিশুদের অধিকার ও স্বপ্নকে সুরক্ষিত রাখবে। তবে বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধিত-২০১৮) অনুযায়ী, ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের কোনো ধরনের শ্রমে নিয়োগ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীরা ঝুঁকিমুক্ত ও হালকা ধরনের কাজে অংশ নিতে পারবে।

    তবুও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ও ইউনিসেফের গবেষণায় উঠে এসেছে যে, দেশের শহরাঞ্চলে প্রায় ৩০০ ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে শিশুরা শ্রম দিতে বাধ্য হচ্ছে। এ পরিসংখ্যান শুধুমাত্র আইন প্রয়োগের সীমাবদ্ধতা নয় বরং আমাদের সামাজিক বাস্তবতার এক অপ্রিয় প্রতিচ্ছবি। এ সংকট থেকে উত্তরণে দরকার কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি শিশুদের জন্য বিকল্প আয়ের সুযোগ তৈরি করা, যাতে তারা শিক্ষা ও স্বাভাবিক বিকাশের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়।

    বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম একটি সংকটময় সমস্যা, যা শুধুমাত্র সামাজিক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই নয় বরং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকেও বাধাগ্রস্ত করছে। শিশুরা যদি তাদের শৈশবকে শ্রমের প্রহসনে হারিয়ে ফেলে, তবে তা ভবিষ্যতে জাতির সম্ভাবনাকে সংকুচিত করবে।

    এখন সময় এসেছে, আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে এই সংকটের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। আইনের কঠোর বাস্তবায়ন, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শিক্ষা ও বিকল্প আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করার মাধ্যমে শিশুশ্রম রোধ করা সম্ভব। প্রতিটি শিশু যাতে তাদের অধিকার, স্বপ্ন এবং শৈশবের আনন্দ উপভোগ করতে পারে, সেটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।

    একটি সমাজ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব কেবলমাত্র আইন মানা নয় বরং শিশুদের উন্নয়ন এবং সুরক্ষার জন্য একটি সমর্থনশীল পরিবেশ তৈরি করা। যদি আমরা সকলে একসাথে কাজ করি, তবে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারব।

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    অর্থনীতি

    ইউনিলিভার বাংলাদেশে ব্রিটিশ বাণিজ্যদূত ও হাইকমিশনারের সফর

    May 22, 2025
    অর্থনীতি

    গ্লোবাল লজিস্টিকস সম্প্রসারণে ২৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে ডিপি ওয়ার্ল্ড

    May 22, 2025
    অর্থনীতি

    ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় চরম অনিশ্চয়তায় বৈশ্বিক অর্থনীতি

    May 22, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025

    ২০২৬ সালে সোনার দাম ছাড়াবে ৪০০০ ডলার: জেপি মরগান

    অর্থনীতি April 23, 2025

    তরুণরাই অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের অগ্রদূত

    মতামত February 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy
    • About Us
    • Contact Us
    • Privacy Policy
    • Comment Policy

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2024 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.