ভারতে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্য মূল্যস্ফীতিও বৃদ্ধি পেয়েছে। পেঁয়াজ, আলু ও টমেটোর দাম অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে ভারতে এটাই পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পেঁয়াজের দাম বলে জানা যায়। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে সোনা, তবে কিছুটা রুপার দাম কমেছে।
সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের বাজার মহারাষ্ট্রের লাসালগাঁওতে, ৪ নভেম্বর পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজিতে ৪৭ দশমিক ৭০ রুপিত; ৭ নভেম্বর যা বেড়ে ৫৭ দশমিক ৭০ রুপিতে উঠে যায়।
ঐদেশের সরকারি পরিসংখ্যান মতে তথ্য পাওয়া যায় যে, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মাত্র চার দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে গত পাঁচ বছরের মধ্যে পেঁয়াজের দাম সর্বোচ্চ হয়েছে। খুচরা বাজারে গড়ে ৬০ রুপি কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী, অক্টোবর মাস থেকেই ধীরে ধীরে দাম বৃদ্ধি হচ্ছিল, তা নভেম্বরে এসে অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে।
নভেম্বরের শেষ দিকে পেঁয়াজের দাম কমার আশ্বাস দিয়েছে সরকার, এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থ সচিব। সূত্র : ইকোনমিক টাইমস
এমতাবস্থায় খারিফ ও রবিশস্যের জন্য অপেক্ষা করছে ভারতের বাজার। খারিফ মৌসুমের ফসল চলতি মাসেই বাজারে আসার কথা। রবি ফসল উঠবে এপ্রিল থেকে। পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হিসাবে খাদ্যপণ্যের গুরুত্ব খুচরা বাজারের মতো এতটা বেশি নয়। তারপরও ভারতের মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রার অর্থনীতিবিদ রাহুল আগরওয়ালের দাবি করে জানান, এককভাবে শুধু খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে এক মাসে পাইকারি মূল্যস্ফীতি ৬৩ ভিত্তি পয়েন্ট বেড়ে গেছে। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও তা মেনে নিয়েছে। প্রতিবেদন : ইকোনমিক টাইমস
ভারতের খুচরা মূল্যস্ফীতি অক্টোবরে ছিল ৬.২১ শতাংশ। এর মাঝে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৮৭ শতাংশ। গত এক বছরে গড় খুচরা মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশ ও খাদ্যপণ্যের ৮ শতাংশ।
খাদ্যপণ্যের খুচরা মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৮৭ শতাংশ ছিল অক্টোবরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাইকারি দামের সাথে সাধারণ ক্রেতার সরাসরি কোন সম্পর্ক নেই, তবে খাদ্যপণ্যের পাইকারি দাম যে গতিতে বেড়েছে, তাতে খুচরা বিক্রিতে আজ নয়তো কাল প্রভাব পড়তে বাধ্য। এতে দুর্ভোগ বাড়বে সাধারণ মানুষের মাঝে।
এদিকে অক্টোবর মাসে ভারতে সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে ৮০ হাজার রুপি বৃদ্ধি পেয়েছে, সেটি বর্তমানে এসে ৭৫ হাজারের অংকে এসে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভারতের শহরাঞ্চলের চাহিদা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে বলে সিটি ব্যাংকের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে। এমনকি উৎসবের মৌসুমেও চাহিদা বাড়েনি। ফলে প্রবৃদ্ধির হারে তার প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাজারে নতুন করে শীতের সবজি না আসা পর্যন্ত এই পরিস্থিতির উত্তরণের সম্ভাবনা কম। তবে ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে দাম অনেকটা কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন- ভারতের হর্টিকালচার প্রোডিউসার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি বিকাশ সিংহ।