ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে আলোচিত প্রকল্প এমআরটি-৫ (গাবতলী-দাশেরকান্দি) দক্ষিণ রুটের ব্যয় ১৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রায় ৬ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। সংশোধিত বাজেট অনুযায়ী, প্রকল্পের বর্তমান মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৭২১ কোটি টাকা।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা গেছে, এই ব্যয় পুনর্মূল্যায়ন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের নির্দেশে করা হয়েছে। সংশোধিত প্রকল্পটি ইতোমধ্যেই সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে।
ডিএমটিসিএল ও পরিকল্পনা কমিশন ছাড়াও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং দক্ষিণ কোরিয়া এই প্রকল্পের অর্থায়নে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল ওহাব জানিয়েছেন-
ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য ঋণের সুদ পরিশোধের সময় কমিয়ে আনা, মূলধন ব্যয় হ্রাস এবং অতিরিক্ত ব্যয়ের পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ৫৪ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার বাজেট নিয়ে ২০১৯ সালে প্রকল্পটি শুরু হয়। চলতি বছরের এপ্রিলে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করা হলেও ব্যয় অপরিবর্তিত ছিল। পরে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বড় প্রকল্পগুলোর ব্যয় পুনর্মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে এমআরটি-৫ প্রকল্পের ব্যয় হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে।
ডিএমটিসিএল-এর মতে- প্রকল্পের প্রেক্ষাপট, ইউনিট রেট, বৈদেশিক ঋণের সুদ এবং সম্ভাব্যতা বিশ্লেষণের মাধ্যমে খরচ কমানো হয়েছে।
এমআরটি-৫ দক্ষিণ রুটটি ঢাকার গাবতলী থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। রুটের ১৩.১০ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ এবং ৪.১০ কিলোমিটার উঁচু মেট্রোলাইন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এটি গাবতলী, টেকনিক্যাল, কল্যাণপুর, শ্যামলী, কলেজ গেট, আসাদ গেট, রাসেল স্কয়ার, কারওয়ান বাজার, হাতিরঝিল, তেজগাঁও, আফতাবনগর, নাসিরাবাদ এবং দাশেরকান্দি এলাকাকে সংযুক্ত করবে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকার যানজট নিরসনে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশোধিত বাজেটের মাধ্যমে প্রকল্পের কার্যকারিতা আরও বাড়বে এবং নগরবাসীর যাতায়াত সহজতর হবে।
সরকারের এই উদ্যোগ রাজধানীর পরিবহন অবকাঠামোর জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পের আরও ব্যয় সাশ্রয়ের সুযোগ রয়েছে, যা ভবিষ্যতে বিবেচনা করা হতে পারে।