এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া কোম্পানির হিসাব বছরের প্রথম ৯ মাসে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড তাদের আয় ২ হাজার কোটি টাকার মাইলফলক ছুঁয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। গতকাল এক স্টক এক্সচেঞ্জ ফাইলিংয়ের মাধ্যমে বহুজাতিক এই প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এপ্রিল-ডিসেম্বর সময়ে তাদের মোট আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫২ কোটি টাকা। যা আগের বছরের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি।
কোম্পানিটির নিট মুনাফাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৪৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এর পাশাপাশি শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩.২৬ টাকা। যা প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক শক্তি এবং বাজারে স্থিতিশীলতা প্রদর্শন করে।
এদিকে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ তাদের তৃতীয় কারখানা নির্মাণের জন্য জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৩০৩ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যে রাইটস অফার ইস্যু করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কোম্পানির তথ্য অনুযায়ী, তারা ১ হাজার ১১০ টাকা দরে মোট ২৭.২৮ লাখ শেয়ার ইস্যু করবে। যার মধ্যে ১ হাজার ১০০ টাকা প্রিমিয়াম থাকবে। এই প্রস্তাবটি ইতোমধ্যে ২৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন লাভ করেছে।
এছাড়া, পুঁজিবাজারে ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার বৃদ্ধির বাধ্যবাধকতার কারণে বার্জারের স্পন্সর ও পরিচালকরা রাইটস অফারে অংশ নেবেন না। কোম্পানিটির প্রধান শেয়ারহোল্ডার জেঅ্যান্ডএন ইনভেস্টমেন্টস (এশিয়া) লিমিটেড—যারা বার্জারের ৯৫ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে- এখনো এই অফারে অংশ নেবে না। তবে রাইটস শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে এবং তাদের জন্য প্রতি শেয়ারের বিপরীতে একটি করে রাইটস শেয়ার দেওয়া হবে। বাকি রাইটস শেয়ার বার্জারের কর্মীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে।
এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানিয়ে একটি সিনিয়র কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, “রাইটস ইস্যুর নিয়ম অনুযায়ী, জেঅ্যান্ডএন ইনভেস্টমেন্টসে ২৩.১৮ লাখ শেয়ার পাওয়ার যোগ্যতা থাকলেও এগুলো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ করা হবে।”
এর আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বার্জার পেইন্টসকে তাদের স্পন্সর, পরিচালক এবং কোম্পানির ৫ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ারধারীদের রাইটস শেয়ার ইস্যু করা থেকে অব্যাহতি দেয়।
কোম্পানিটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে বলা যায়, ২০২২ সালের অক্টোবরে বার্জার পেইন্টস তাদের তৃতীয় কারখানা নির্মাণের জন্য ৪৮০ কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছিল। যা ২০২৫ সালের এপ্রিলের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। তবে পরবর্তীতে প্রকল্পের ব্যয় সংশোধন করে ৮১৩ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও উৎপাদন শুরুর নির্দিষ্ট তারিখ এখনো ঘোষণা করা হয়নি।
একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়ে বলেন, “বার্জার পেইন্টস একটি পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ হলেই নির্মাণকাজ শুরু হবে।” তৃতীয় কারখানায় উৎপাদন হবে ডেকোরেটিভ পেইন্ট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পেইন্ট, মেরিন কোটিংস, উড কোটিংস, কনস্ট্রাকশন কেমিক্যালস, অ্যাডহেসিভস ও অটোমোটিভ পেইন্ট-যার সবকটিরই বাজারে চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।