ভারতে প্রতিকূল আবহাওয়া এবং গুজরাট, রাজস্থানসহ প্রধান উৎপাদন অঞ্চলে কীটপতঙ্গের আক্রমণের কারণে চলতি ২০২৪-২৫ মৌসুমে জিরা উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বাণিজ্য সূত্রগুলোর পূর্বাভাস, চলতি মৌসুমে দেশটিতে ৬৫-৯০ লাখ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৫৫ কেজি) জিরা উৎপাদন হতে পারে। এর আগে ২০২৩-২৪ মৌসুমে ১ কোটি ১৫ লাখ বস্তা উৎপাদন হয়েছিল।
আন্তর্জাতিক মসলা ব্রোকার প্রতিষ্ঠান স্পাইসএক্সিমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা যোগেশ মেহতা বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর জিরা চাষ প্রায় ২৫ শতাংশ কম হয়েছে। চলতি মৌসুমে প্রতিকূল আবহাওয়া ও দেরিতে বপনের মতো সংকট রয়েছে। আমরা আশা করছি, মোট উৎপাদন ৬৫-৭০ লাখ বস্তার মধ্যে থাকবে, যা স্বাভাবিক মাত্রার কাছাকাছি। এর সঙ্গে আগের বছরের সমাপনী মজুদ প্রায় ২০ লাখ বস্তা যুক্ত হবে। এতে মোট জোগান ৮৫-৯০ লাখ বস্তায় পৌঁছবে, যা দেশীয় ও রফতানি চাহিদা পূরণে যথেষ্ট হবে।
ভারতীয় স্পাইস বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩-২৪ মৌসুমে দেশটির জিরা উৎপাদন ৮ লাখ ৬০ হাজার টনে পৌঁছেছিল, যা আগের বছরের ৫ লাখ ৭৭ হাজার টনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বেশি ছিল।
সাউথ এশিয়া বায়োটেকনোলজি সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ভগীরথ চৌধুরী জানান, ‘চলতি বছরে রাজস্থানে জিরা উৎপাদন প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যেতে পারে।’
তিনি বলেন, মোট আবাদি এলাকার ৬০-৬৫ শতাংশে আগেভাগে বপন করা হয়েছিল। এসব ফসল এখন ভালো অবস্থায় রয়েছে। অক্টোবর-নভেম্বরে তাপমাত্রা বেশি থাকায় যেসব এলাকায় বপন দেরিতে করা হয়েছে, সেখানে গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে শস্যদানা গঠনের প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া কিছু জায়গায় দেরিতে বপন করা ফসলে ফুসেরিয়াম উইল্ট ও এফিড্সের ভয়াবহ সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, যা উৎপাদন ও গুণগত মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
মসলা ব্যবসায়ী ও রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান শ্রী শ্যাম ইন্টারন্যাশনালের দিনেশ সোনি বলেন, চলতি বছর জিরা উৎপাদন প্রায় ৯০ লাখ বস্তা হতে পারে, যা গত বছরের ১ কোটি ১৫ লাখ ব্যাগের তুলনায় কম। গুজরাটে জিরা চাষ প্রায় ২০ এবং রাজস্থানে প্রায় ৫ শতাংশ কমেছে।
তিনি আরো জানান, গত বছর ভালো ফলন হওয়ায় উৎপাদন বেড়েছিল। তবে এ বছর দেরিতে বপন এবং প্রতিকূল আবহাওয়ায় ফলন কম হতে পারে, যা মোট উৎপাদনে প্রভাব ফেলবে। বর্তমানে রাজস্থানের নাগোর এলাকায় মেঘলা আবহাওয়া বিরাজ করছে, যা জিরার আকার ও গুণগত মানে প্রভাব ফেলতে পারে। তাছাড়া চলতি মৌসুমে ফসল এক মাস দেরিতে হয়েছে। তাই আগামী দুই-তিন সপ্তাহ ফসলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

