বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৫ সালে একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে পৌঁছেছে। যেখানে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবর্তন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপ এবং আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিলে একটি জটিল চিত্র তৈরি করেছে। বিশ্বব্যাংক এবং ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের (EIB) সাম্প্রতিক প্রতিশ্রুতিগুলি দেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এবং উন্নয়নে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। তবে, এই সহায়তা কার্যকরভাবে কাজে লাগাতে হলে বাংলাদেশকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে এবং সুদূরপ্রসারী সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিশ্রুতি এবং এর প্রভাব:
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের জন্য বর্তমান অর্থবছরে ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি নতুন অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই অর্থায়ন মূলতঃ দেশের চলমান সংস্কার প্রচেষ্টা, বন্যা প্রতিক্রিয়া, বায়ু মান উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে ব্যবহৃত হবে। বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এই ঘোষণা দেওয়া হয়। সেক উল্লেখ করেন, “আমরা আপনাকে যত দ্রুত এবং যতটা সম্ভব সহায়তা করতে চাই”। যা বাংলাদেশের আর্থিক চাহিদা পূরণে বিশ্বব্যাংকের প্রতিশ্রুতির প্রমাণ।
বিশ্বব্যাংক আরও ১ বিলিয়ন ডলার পুনর্বিন্যাসের পরিকল্পনা করছে, যা মোট সহায়তার পরিমাণ প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। এই তহবিলগুলি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা এবং অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রমে ব্যবহৃত হবে, যা প্রতি বছর কর্মবাজারে প্রবেশকারী ২ মিলিয়ন তরুণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেক আরও বলেন, “সংস্কারগুলির সম্পন্নকরণ বাংলাদেশ এবং এর যুবকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে”।
ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের (EIB) ভূমিকা: ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে, ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক (EIB) বাংলাদেশের জন্য তাদের অর্থায়ন দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে, যা ২ বিলিয়ন ইউরোতে পৌঁছাবে। তবে, EIB এর ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলা বেয়ার মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের আলোচনায় আমরা সর্বদা এই বিষয়গুলিতে দৃঢ় থাকি যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, মতামতের স্বাধীনতা… অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ”। EIB প্রধানত সবুজ জ্বালানি, নিরাপদ পানি, যোগাযোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে জড়িত।
রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ: ২০২৪ সালের আগস্টে, ছাত্র- জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ফলে ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। ডঃ ইউনুস ডিসেম্বর ২০২৫ বা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা বিভিন্ন খাতে সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতির উপর নির্ভর করবে। তবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, সংখ্যালঘুগোষ্ঠীর প্রতি আচরণ এবং অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে ডঃ ইউনুস সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছেন। বহু কারখানা, শ্রমিক বিক্ষোভ বা নিরাপত্তার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়ে জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে মাত্র ১ দশমিক ৮% এ নেমে এসেছে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং করণীয়: বাংলাদেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধার এবং স্থিতিশীলতার জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বব্যাংক এবং EIB এর প্রতিশ্রুতিগুলি দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রমে সহায়তা করবে। তবে, এই সহায়তা কার্যকরভাবে কাজে লাগাতে হলে সরকারকে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করতে হবে-
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা: নির্বাচন সময়মতো এবং সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনঃস্থাপন করা।
মানবাধিকার রক্ষা: মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা অর্জন করা।
অর্থনৈতিক সংস্কার: শ্রমবাজার, কর ব্যবস্থা এবং বিনিয়োগ পরিবেশে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা।
শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ: তরুণ জনগোষ্ঠীর দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগ করে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা।
পরিবেশ সুরক্ষা: বায়ু মান উন্নয়ন এবং সবুজ জ্বালানি ব্যবহারে উদ্যোগ গ্রহণ করা।
সার্বিকভাবে, আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং অভ্যন্তরীণ সংস্কার কার্যক্রমের সমন্বয়ে বাংলাদেশ একটি স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ অর্থনীতির পথে এগিয়ে যেতে পারে। তবে, এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে সরকার, বেসরকারি খাত এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা এবং সমন্বয় অপরিহার্য।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা ও বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান- ২০২৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক সংস্থার পূর্বাভাস মিশ্র। কিছু বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ৫ দশমিক ৮% থেকে ৬ দশমিক ২% হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে, তবে শর্ত হচ্ছে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করণ।
বিশ্বব্যাংক ও ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের (EIB) প্রতিশ্রুতির ফলে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। তবে এই সহায়তা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হলে কার্যকর নীতিগত সংস্কার ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার দরকার। বিশেষত: রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত না হলে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ ও ঋণ সুবিধাগুলি কাঙ্ক্ষিত ফল দেবে না।
বিনিয়োগ ও অবকাঠামো উন্নয়ন: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে টেকসই করতে হলে অবকাঠামো উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। বিশ্বব্যাংক ও EIB-এর অর্থায়নে নিম্নলিখিত খাতগুলোতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা সম্ভব:
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি: নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প, সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বিদ্যুৎ গ্রিড আধুনিকীকরণ।
যোগাযোগ ব্যবস্থা: সড়ক ও রেলপথ উন্নয়ন, মেট্রোরেল সম্প্রসারণ, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর আধুনিকায়ন।
ডিজিটাল অবকাঠামো: ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক বিস্তার, ই-গভর্ন্যান্স ব্যবস্থার সম্প্রসারণ।
বিশ্বব্যাংক ও EIB-এর সহযোগিতায় দীর্ঘমেয়াদে এই খাতগুলোর উন্নয়ন হলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
রপ্তানি খাতের চ্যালেঞ্জ ও করণীয়:
বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত: রপ্তানিনির্ভর, বিশেষ করে তৈরি পোশাক (RMG) শিল্পের উপর। ২০২৫ সালে বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের জন্য নতুন কৌশল গ্রহণ করা অপরিহার্য।
বাজার বৈচিত্র্যকরণ: বর্তমানে ইউরোপ ও আমেরিকা বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি গন্তব্য। কিন্তু চীন, জাপান ও আফ্রিকার উদীয়মান বাজারগুলোর দিকে নজর দেওয়া দরকার।
পণ্য বৈচিত্র্যকরণ: কেবল পোশাক শিল্পের উপর নির্ভর না করে আইটি, চামড়াও চামড়াজাতপণ্য, কৃষিপণ্য, কুটির শিল্প এবং ইলেকট্রনিক্স শিল্পের উন্নয়ন খুবই জরুরি।
রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল (EPZ) সম্প্রসারণ: বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে উচ্চমানের অবকাঠামো ও সহজতর নিয়মনীতি তৈরি করতে হবে।
বাণিজ্য চুক্তি ও কূটনীতি: ইউরোপের জিএসপি সুবিধা ২০২৯ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে, তবে এর পর কী হবে তা নিশ্চিত নয়। তাই বিকল্প চুক্তির জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বাড়ানো দরকার।
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও করণীয়: বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যা মোকাবিলা করতে না পারলে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। মূল চ্যালেঞ্জগুলো হলো-
উচ্চ মূল্যস্ফীতি: খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি জনগণের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তুলেছে।
ডলার সংকট ও রিজার্ভ হ্রাস: আমদানি নির্ভরতা ও রপ্তানি আয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও সংকুচিত হবে।
কর্মসংস্থান সংকট: বেকারত্ব হ্রাসের জন্য বেসরকারি বিনিয়োগ ও উদ্যোক্তা বিকাশের উপর জোর দিতে হবে।
শিল্পখাতের চ্যালেঞ্জ: পোশাক খাতের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরতা কমাতে কৃষিভিত্তিক শিল্প, আইটি ও হাইটেক খাতকে এগিয়ে নিতে হবে।
বিদেশি বিনিয়োগ ও বাণিজ্য নীতি- ২০২৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিদেশি বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে, বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করতে হলে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি গ্রহণ করা দরকার-
শ্রম আইন সংস্কার: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের জন্য শ্রম আইন আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সংশোধন করা দরকার।
দুর্নীতি দমন: ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআইবি) এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে দুর্নীতির হার তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বড় প্রতিবন্ধকতা।
কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি: আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে প্রযুক্তি ও দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ বাড়াতে হবে।
ব্যাংকিং খাত ও ঋণ সংকট- ২০২৫ সালে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত বড় চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ইতোমধ্যে ১৪% ছাড়িয়েছে, যা আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি স্বরূপ।
ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা:
ডিজিটাল ব্যাংকিং বিস্তার: অনলাইন লেনদেন ও ফিনটেক সেবা সম্প্রসারণ করতে হবে।
খেলাপি ঋণ কমানোর উদ্যোগ: ঋণ পুনঃতফসিল প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে হবে।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ: বেশ কয়েকটি ব্যাংক রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও অস্বচ্ছতার কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা অর্থনৈতিক ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
শিল্পখাতের বিকাশ ও কর্মসংস্থান:
বাংলাদেশের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতি বছর ২০-২৫ লাখ নতুন কর্মসংস্থানের প্রয়োজন, যা অর্জন করা সহজ নয়। এজন্য করণীয়-
স্টার্টআপ ও উদ্যোক্তা বিকাশ: ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য সহজ ঋণ ও ভর্তুকি বাড়ানো।
টেকসই উৎপাদন: ইকো-ফ্রেন্ডলি প্রযুক্তি ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা।
অটোমেশন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা: উৎপাদনশীলতা বাড়াতে শিল্পকারখানায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো।
শিক্ষা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নয়ন:
বৈশ্বিক কর্মসংস্থান বাজারে টিকে থাকতে হলে শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। এইজন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তনসমূহ হলো নিম্নরূপ-
কারিগরি ও পলিটেকনিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব: ২০২৫ সালের মধ্যেই বাংলাদেশের শ্রমবাজারে প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতার চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার প্রসার: সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডাটা সায়েন্স প্রশিক্ষণ: আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তি দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ নীতি:
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্বব্যাংকের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, আগামী ২০ বছরে উপকূলীয় অঞ্চলের ১ দশমিক ৩ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে। এইজন্য সরকারের জরুরি করণীয় সমূহ হলো-
নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন বাড়ানো: সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধ ব্যবস্থা: জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে।
শিল্প কারখানার দূষণ নিয়ন্ত্রণ: কড়া পরিবেশ আইন প্রয়োগ করা দরকার।
২০২৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি নতুন সুযোগ ও চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বিশ্বব্যাংক ও ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের সহায়তা কাজে লাগিয়ে যথাযথ সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা গেলে বাংলাদেশ তার প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারবে। তবে এর জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নীতি সংস্কার, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর কৌশল অবলম্বন করতে হবে। বাংলাদেশ যদি সঠিক অর্থনৈতিক নীতিমালা গ্রহণ করে, তাহলে ২০২৫ সাল ও তার পরবর্তী সময়ে একটি শক্তিশালী, টেকসই ও সমৃদ্ধ অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারবে।