চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহত্তম প্রকল্প বে টার্মিনাল নিয়ে আগামী মাসেই সুখবর আসতে পারে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরের শহীদ মো. ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ তথ্য জানান।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বে টার্মিনাল হবে বাংলাদেশের গেম চেঞ্জার প্রকল্প। আগামী মাসের মাঝামাঝিতে প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে ৫০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে এবং যত দ্রুত সম্ভব প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে তা দেশের জন্য অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে।
তিনি বলেন, “গত সরকারের আমলে বন্দরে একাধিক সিন্ডিকেট সক্রিয় ছিল যা বন্দর পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। তবে বর্তমান প্রশাসনের উদ্যোগে আমরা এই সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে সক্ষম হয়েছি যার ফলে বন্দরের ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।” এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড গড়েছে বলেও জানান তিনি।
নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, “বন্দর পরিচালনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে এখন আর কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইএসপিএস (ইন্টারন্যাশনাল শিপ অ্যান্ড পোর্ট ফ্যাসিলিটি সিকিউরিটি) টিম চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং কোনো ধরনের আপত্তি বা পর্যবেক্ষণ দেয়নি।” তিনি আরো বলেন, “উন্নত দেশের গ্রিন বন্দরের মতো চট্টগ্রাম বন্দরকেও পুরোপুরি অটোমেটেড করা হচ্ছে।”
চট্টগ্রাম বন্দরের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির বিষয়ে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, “বর্তমানে কার্গো প্রবৃদ্ধির হার ৭-১০ শতাংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরকে প্রতি বছর পাঁচ মিলিয়ন টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক কনটেইনার) হ্যান্ডল করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। এ লক্ষ্য অর্জনে বন্দরের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন ও ওভারফ্লো ইয়ার্ড গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি বন্দরের কার্যক্রমকে আরও দক্ষ করতে ১৯টি অফডককে কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
রমজান উপলক্ষে খাদ্যপণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে বন্দরের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, গত দুই মাসে দেশে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টন ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে মোট তিন লাখ ৪২ হাজার ৫২৭ টন তেল আমদানি হয়েছে যা গত বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি।
তিনি বলেন, “রমজানের সময় চাহিদাসম্পন্ন পণ্যগুলোর পর্যাপ্ত আমদানির তথ্য আমাদের হাতে রয়েছে। আমদানি হওয়া তেল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শোধানাগারে সংরক্ষণ করা হয় এবং শিডিউলিং পদ্ধতি ব্যবহার করে বন্দরের পরিবহন ব্যবস্থা আরও গতিশীল করা হচ্ছে।”