আজকের বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে একটি প্রশ্ন বারবার উঠে আসে- সাধারণ মানুষের সঞ্চয় কমে যাচ্ছে কেন? নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যেভাবে বাড়ছে, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের ঘরে যে যন্ত্রণা জমছে, তাতে এই প্রশ্ন নিছক অর্থনীতির পরিসংখ্যান নয় বরং এটি একটি বাস্তব ও প্রতিদিনের অনুভব।
তাহলে কি মানুষ এখন আর আগের মতো উপার্জন করছে না? নাকি জীবনযাত্রার ব্যয় এত বেড়ে গেছে যে হাতে কিছুই থাকছে না? অথবা কি আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামোতে এমন কিছু পরিবর্তন হয়েছে যা সঞ্চয়ের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে?
সঞ্চয় শুধু ব্যক্তি বা পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নয়- একটি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার অন্যতম ভিত্তি। মানুষ যখন আয় থেকে খরচ বাদ দিয়ে কিছুটা হলেও ভবিষ্যতের জন্য জমাতে পারে, তখনই সমাজে আশার আলোর সঞ্চার হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে সেই চিত্র ক্রমেই বদলে যাচ্ছে। এখন মানুষ আয় করেও সঞ্চয় করতে পারছে না। মাসের শুরুতে যা আয়, তা মাসের মাঝামাঝি পৌঁছানোর আগেই ফুরিয়ে যাচ্ছে। ফলে হাতে কিছুই থাকছে না ভবিষ্যতের জন্য।
বাংলাদেশ ব্যাংক, পরিসংখ্যান ব্যুরোসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য বলছে—ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের হার বিগত কয়েক বছরে ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে অতিরিক্ত ব্যয়, আয়ের সঙ্গে খরচের অসামঞ্জস্যতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, এমনকি ডিজিটাল যুগে অপ্রয়োজনীয় খরচের প্রবণতা—সব মিলিয়ে সঞ্চয় এখন অনেকের কাছে বিলাসিতা মনে হচ্ছে।
সঞ্চয়ের বর্তমান চিত্র,পরিসংখ্যান যা বলছে: বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যক্তি ও জাতীয় উভয় পর্যায়েই সঞ্চয়ের হার কমছে, আর সেটাই দেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের হার আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। এই প্রবণতা অর্থনীতিবিদদের মতে ভবিষ্যতে সরকারি কোষাগারে চাপ তৈরি করতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন সঞ্চয় হ্রাসের পেছনে একাধিক কারণ কাজ করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—রাজস্ব আয় কমে যাওয়া, বিশেষ করে আমদানি থেকে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। অন্যদিকে স্বল্প আয়ের মানুষদের ব্যাংক হিসাবেও আমানতের পরিমাণ কমছে, যার ফলে সামগ্রিক সঞ্চয় কমে যাচ্ছে।
জাতীয় সঞ্চয় হার যা একটি দেশের জিডিপির গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ২০২০ সালে যেখানে ছিল প্রায় ২৯ শতাংশ, তা ২০২৪ সালে এসে কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৭ শতাংশে। এর মানে হচ্ছে—দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে সঞ্চয়ের হার কমে যাচ্ছে যা ভাবনার বিষয়।
ব্যাংকে ব্যক্তি আমানতের প্রবৃদ্ধিও এক বছরের ব্যবধানে স্পষ্টভাবে কমেছে। শুধু ব্যাংক নয় গ্রামীণ ব্যাংক, বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ডাকঘরের সঞ্চয় হিসাবেও একই ধারা দেখা যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ আগের মতো আর সঞ্চয়ের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে না বা দেখাতে পারছে না।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (BBS) জানাচ্ছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট দেশজ সঞ্চয় (Gross Domestic Saving) জিডিপির মাত্র ২৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ, যা আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ কম। এটি একটি স্পষ্ট সংকেত যে দেশের আর্থিক ভিত্তি কিছুটা দুর্বল হচ্ছে।
এই সমস্যা শুধু বাংলাদেশের নয়। প্রতিবেশী ভারতেও একই রকম প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। প্রথম আলো ও আনন্দবাজার-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতীয়দের পারিবারিক সঞ্চয় গত ৪৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। আর The Financial Express বলছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ এখন সঞ্চয় করতে পারছে না, বরং দিন দিন ঋণের উপর নির্ভরতা বাড়ছে।
সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে মানুষের সঞ্চয় কমে যাওয়ার পেছনে মূলতঃ কাজ করছে—পণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি, খরচের চাপ, অপ্রতুল আয় এবং বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশের অভাব। ফলে মানুষ এখন মাস পেরোতেই হিমশিম খাচ্ছে—সঞ্চয় তো দূরের কথা, অনেকে আবার আগের সঞ্চয়ই ভেঙে খরচ করতে বাধ্য হচ্ছে।
সঞ্চয় কমছে কারণ কী? বর্তমানে বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের সঞ্চয় করার ক্ষমতা আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছে। এর মূল কারণ হলো—জীবনযাত্রার ব্যয় যেভাবে বেড়েছে সেই হারে মানুষের আয় বাড়েনি। ফলে মাসের খরচ সামলাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে অধিকাংশ মানুষকে, সঞ্চয়ের কথা ভাবার সুযোগই থাকছে না।
বর্তমানে সঞ্চয় হ্রাসের অন্যতম বড় কারণ মূল্যস্ফীতি। যদিও সরকারি হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে দেশের সার্বিক মুদ্রাস্ফীতির হার ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে নেমে এসেছে, যা সাম্প্রতিক দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবুও বাস্তবতার সঙ্গে এর মিল খুঁজে পাওয়া কঠিন। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এখনও আগের মতোই চড়া। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে বাসাভাড়া, বিদ্যুৎ বিল—সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচের মুখে পড়েছে।
এই অতিরিক্ত ব্যয় সামাল দিতে গিয়ে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নআয়ের মানুষদের জীবন কঠিন হয়ে উঠছে। আগে যেখানে মাস শেষে কিছু টাকা সঞ্চয় করা যেত, এখন সেই আয় দিয়েই পুরো মাস চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে নিজেদের আগের সঞ্চয় ভেঙে দৈনন্দিন ব্যয় মেটাচ্ছেন। সরকারি পরিসংখ্যান হয়তো মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে বলে দেখাচ্ছে, কিন্তু বাস্তব জীবনের বাজারে এর খুব একটা প্রভাব পড়েনি। তাই অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করছেন পরিসংখ্যান আর বাস্তবতার মধ্যে এক ধরনের গ্যাপ তৈরি হয়েছে, যা নীতিনির্ধারকদের চিন্তার কারণ হওয়া উচিত।
আয়ের ক্ষেত্রে স্থবিরতা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS) তথ্য অনুযায়ী- গড় মাসিক আয় যতটা না বেড়েছে, ব্যয় তার চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে। বিশেষ করে যাঁদের আয় নির্দিষ্ট যেমন: চাকরিজীবী, শিক্ষক বা নিম্নবিত্ত শ্রমজীবীরা—তাঁদের ওপর চাপ সবচেয়ে বেশি। নতুন খরচ যেমন: ইন্টারনেট, মোবাইল ডেটা, শিক্ষাসামগ্রী প্রভৃতি যুক্ত হওয়ায় ব্যয়ের পরিমাণ আরও বেড়ে গেছে।
স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতেও খরচ বেড়েছে আগের তুলনায় অনেক বেশি। করোনা মহামারির পর থেকে চিকিৎসা ব্যয় ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। ডাক্তার ফি, ওষুধের দাম ও পরীক্ষার খরচ অনেকের পক্ষে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে। একইভাবে শিক্ষা খাতেও কোচিং, প্রাইভেট টিউশন এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা বাড়ায় পরিবারগুলোকে এখন আগের তুলনায় দ্বিগুণ ব্যয় করতে হচ্ছে। এই দুই খাতে খরচ কমানো প্রায় অসম্ভব। ফলে মানুষ সঞ্চয় বাদ দিয়ে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার খরচ মেটাতে বাধ্য হচ্ছে।
অন্যদিকে দেশে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা মানুষের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তুলছে। চাকরির নিরাপত্তা নেই, বাজারের অবস্থা প্রতিনিয়ত অস্থির, বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও অনেক ঝুঁকি। ফলে মানুষ এখন আর আগের মতো আত্মবিশ্বাস নিয়ে সঞ্চয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। অনেকেই ভাবছে—”আগে দেখি পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তারপর না হয় সঞ্চয়ের কথা ভাবা যাবে”।এর ফলে অনেকেই ভবিষ্যতের সঞ্চয় পরিকল্পনা পিছিয়ে দিচ্ছেন, যা অর্থনীতিতে এক ধরনের “ডেফার্ড সেভিং” প্রবণতা তৈরি করছে।
এছাড়াও প্রযুক্তির সহজলভ্যতা খরচের ধরনকেও বদলে দিয়েছে। ডিজিটাল পেমেন্ট, মোবাইল ব্যাংকিং, ক্রেডিট কার্ড, “বাই নাও পে লেটার”— এইসব ব্যবস্থা মানুষকে খরচে আরও উৎসাহী করে তুলেছে। ফলে আগে যে অর্থ সঞ্চয় হতো, তা এখন আগেই খরচ হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ফ্যাশন, ভ্রমণ বা বিলাসদ্রব্যে খরচ করার প্রবণতা বেড়েছে।
এই অতিরিক্ত খরচ সামাল দিতে গিয়ে মানুষ এখন অনেক বেশি ঋণনির্ভর হয়ে পড়ছে। কেউ মোবাইল লোন নিচ্ছে, কেউ আবার ব্যক্তিগত ঋণ বা ক্রেডিট কার্ডে খরচ করছেন। মাসের শেষে এই ঋণ শোধ করতেই পুরো আয় চলে যাচ্ছে, ফলে সঞ্চয়ের কোনো সুযোগই থাকছে না।
সব মিলিয়ে বলা যায়, সঞ্চয় কমে যাওয়ার পেছনে একাধিক বাস্তব কারণ কাজ করছে। জীবনের খরচ বাড়ছে প্রতিদিন, অথচ আয় বাড়ছে ধীরে ধীরে—এই বৈষম্যই মানুষের হাতে সঞ্চয়ের জায়গা রাখতে দিচ্ছে না। সঙ্গে আছে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে অতিরিক্ত ব্যয় এবং আর্থিক অনিশ্চয়তা। ফলে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
এখান থেকে মুক্তির পথ কী? সঞ্চয় কমে যাওয়ার এই সংকট থেকে বের হয়ে আসতে হলে দীর্ঘমেয়াদী ও বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। সবচেয়ে আগে যেটা প্রয়োজন, তা হলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। বাজারে পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে, আর এর পেছনে সিন্ডিকেট ও বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা বড় ভূমিকা রাখছে। সরকারের উচিত কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করা এবং যারা ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের সঞ্চয়যোগ্য আয়ে আঘাত করছে, তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।
একই সঙ্গে মানুষের আয় বাড়ানোর জন্য কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। বিশেষ করে বেসরকারি খাতে ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। যেসব তরুণ উদ্যোক্তা হতে চায় বা ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী, তাদের সহজ শর্তে ঋণ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার। যেন তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। আয় বাড়লে সঞ্চয়েরও সুযোগ তৈরি হয়।
সঞ্চয়কে উৎসাহিত করার জন্য ব্যাংক ও ডাকঘরের সুদের হার বাস্তবধর্মী ও আকর্ষণীয় করতে হবে। বর্তমানে অনেক মানুষ সুদের হার কমে যাওয়ায় সঞ্চয়ের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। এর পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য বিনিয়োগ মাধ্যমের ওপর অযৌক্তিক বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
তবে শুধু সরকার বা নীতিনির্ধারকদের পদক্ষেপই যথেষ্ট নয়। ব্যক্তি পর্যায়েও পরিবর্তন জরুরি। প্রতিটি পরিবারকে তাদের মাসিক বাজেট বুঝে খরচ করতে হবে। কোথায় অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হচ্ছে, সেটা চিন্তা করে কমাতে হবে। আর্থিক সচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক প্ল্যাটফর্মগুলোর একটি সম্মিলিত উদ্যোগ দরকার। মানুষকে ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ের গুরুত্ব শেখাতে হবে।
আজকের কঠিন সময়ে সঞ্চয় শুধু ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা নয়, বরং এটি একটি অর্থনৈতিক নিরাপত্তাবলয়ের মতো। তাই ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্র—সবারই উচিত এই সংকটকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা এবং একসঙ্গে কাজ করা। যেন আবারও মানুষ সঞ্চয়ের প্রতি আগ্রহী হয় এবং দেশের আর্থিক ভিত্তিও শক্ত হয়।
সঞ্চয় হ্রাস কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়—এটি আমাদের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার দুর্বলতা, মূল্যস্ফীতির চাপ, আয়-ব্যয়ের ভারসাম্যহীনতা এবং ব্যক্তি ও রাষ্ট্র উভয়ের পর্যাপ্ত আর্থিক প্রস্তুতির অভাবকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। মানুষের আয় যখন দৈনন্দিন খরচ মেটাতেই হিমশিম খায়, তখন সঞ্চয় করা বিলাসিতা হয়ে দাঁড়ায়। অথচ একটি সুস্থ অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হলো ব্যক্তিগত ও জাতীয় পর্যায়ের সঞ্চয়। তাই এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দরকার বাস্তবসম্মত নীতি, আয় বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি এবং সর্বস্তরে আর্থিক সচেতনতা। মনে রাখতে হবে আজকের সঞ্চয়ই আগামী দিনের নিরাপত্তা। সুতরাং ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্র—সবাইকে এখনই গুরুত্বসহকারে বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।