যুক্তরাষ্ট্রে বাড়তি শুল্কের কারণে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে জাপানের শীর্ষ গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা মোটর। প্রতিষ্ঠানটি আশঙ্কা করছে, এই শুল্কের কারণে তাদের ৯৫০ কোটি ডলার ক্ষতি হতে পারে। এখন পর্যন্ত কোনো গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এটি সবচেয়ে বড় ক্ষতির পূর্বাভাস।
এ ক্ষতির প্রেক্ষিতে ২০২৬ সালের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরের জন্য পরিচালন মুনাফার পূর্বাভাস ১৬ শতাংশ কমিয়েছে টয়োটা। আগের ঘোষণা অনুযায়ী যেখানে তাদের মুনাফার লক্ষ্য ছিল ৩ লাখ ৮০ হাজার কোটি ইয়েন, সেখানে তা কমিয়ে এখন ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি ইয়েন (প্রায় ২৭০০ কোটি ডলার) করা হয়েছে।
টয়োটার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি, যন্ত্রাংশ, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপিত উচ্চ শুল্কের ফলে উৎপাদন খরচ বেড়েছে, ফলে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।
টয়োটার প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (হেড অব ফাইন্যান্স) তাকানরি আজুমা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা সত্যিই কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক যাই হোক, আমাদের গ্রাহকদের জন্য গাড়ি তৈরি অব্যাহত থাকবে।”
তিনি আরও জানান, শুল্কজনিত ক্ষতির হিসাব অনুযায়ী ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ইয়েন (প্রায় ৯৫০ কোটি ডলার) ক্ষতি হবে। এর মধ্যে জাপান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যন্ত্রাংশ রপ্তানিকারক সরবরাহকারীদের ক্ষতির পরিমাণও অন্তর্ভুক্ত। তবে টয়োটার সরাসরি ক্ষতির পরিমাণ কত, তা তিনি স্পষ্টভাবে জানাননি।
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে অন্য গাড়ি নির্মাতারাও ক্ষতির মুখে পড়ছে। তবে তাদের ক্ষতির পরিমাণ টয়োটার তুলনায় অনেক কম।
- স্টেলান্টিস জানিয়েছে, তাদের অতিরিক্ত ব্যয় হবে ১৭০ কোটি ডলার
- ফোর্ড বলেছে, তাদের ক্ষতি হবে ৩০০ কোটি ডলার
- জেনারেল মোটরস জানিয়েছে, তাদের ক্ষতি হতে পারে ৪০০-৫০০ কোটি ডলার
চলতি অর্থবছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে টয়োটা পরিচালন মুনাফা করেছে ১ লাখ ১৭ হাজার কোটি ইয়েন। আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি ইয়েন। যদিও এই আয় বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার চেয়েও ভালো।
তবে উত্তর আমেরিকায় টয়োটার ব্যবসা বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে। এই প্রান্তিকে সেখানে তাদের ক্ষতির পরিমাণ ৬ হাজার ৩৬০ কোটি ইয়েন। গত বছর একই সময়ে টয়োটা ওই অঞ্চলে ১০ হাজার ৭০ কোটি ইয়েন মুনাফা করেছিল।
সম্প্রতি জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এতে জাপানি গাড়ির ওপর শুল্ক ২৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশে আনার কথা বলা হয়েছে। তবে এ সিদ্ধান্ত কবে থেকে কার্যকর হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।

