বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দর। দেশের মোট বাণিজ্যের প্রায় ৯৫ শতাংশ এখান দিয়ে সম্পন্ন হয়। বছরে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলারের সমুদ্রবাণিজ্য পরিচালিত হওয়ায় বন্দরের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চলা শুধু অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য নয় বরং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দেশের অবস্থান টিকিয়ে রাখার জন্যও অপরিহার্য। বিশেষ করে বাংলাদেশ যখন এলডিসি বা স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পথে, তখন বন্দরের প্রতিটি কার্যক্রমকে ঘিরে রয়েছে বাড়তি সংবেদনশীলতা।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক কনটেইনার নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনা এ বন্দরকে নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে তিনটি কনটেইনারের খোঁজ মিলছে না। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী, আমদানিকারক, পরিবহন খাতের সংশ্লিষ্টরা এবং অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, কনটেইনারগুলো হয়তো এখনো বন্দরের ভেতরেই রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো—ঘটনার মাস পার হলেও সেগুলোর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। বিষয়টি এখন বন্দর নিরাপত্তা ও নজরদারির ঘাটতির স্পষ্ট প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
প্রথম দুটি কনটেইনারে ছিল মোট ৫১ টন কাপড়। এগুলো আমদানিকারকরা ছাড় করতে ব্যর্থ হওয়ায় শুল্ক কর্তৃপক্ষ ফেব্রুয়ারিতে নিলামে তোলে। কিন্তু নিলামের পর বিজয়ী ক্রেতারা কনটেইনারগুলো হাতে পাননি। নিলামে বিজয়ী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম রেজা জানান—“আমি নিজেই পণ্য পরীক্ষা করেছি। কিন্তু ২৫ ফেব্রুয়ারি বন্দর কর্মকর্তারা আমাকে বলেন কনটেইনারগুলো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।”
তৃতীয় কনটেইনারটির ঘটনা আরও রহস্যজনক। ৪০ ফুট দীর্ঘ এ কনটেইনারে ছিল ২৫ টন কাপড়। এটি ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর এমভি মায়ের্স্ক সংখলা নামের জাহাজে চীনের নিংবো বন্দর থেকে আসে। কনটেইনারটি নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে সংরক্ষিত ছিল। শিপিং এজেন্ট সিএমএক্স (প্রা.) লিমিটেড এটি আমদানির তালিকায় যুক্ত করে, যেখানে টঙ্গীর গাজীপুরভিত্তিক সিজনস ড্রেসেস লিমিটেডকে আমদানিকারক হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বাহাউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন—“আমার কোম্পানি প্রায় ১১ মাস ধরে বন্ধ। এই চালান সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না।” এ বক্তব্য নিখোঁজ কনটেইনারের ঘটনাকে আরও জটিল করেছে।
অতীতের ঘটনা মনে করাচ্ছে নতুন সংকট
চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার নিখোঁজের ঘটনা একেবারেই নতুন নয়। ২০১৮ সালে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, বন্দরের নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে ২৯৫টি চালান হাওয়া হয়ে যায়। সেগুলোও নিলামে তোলার কথা ছিল। বিষয়টি তদন্তে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু আজও এর কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা প্রকাশ করা হয়নি।
তখন যেমন প্রশ্ন উঠেছিল, এবারও একই প্রশ্ন ফিরে আসছে—একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বন্দরে, যেখানে প্রতিটি কনটেইনারের আগমন ও প্রস্থান নথিভুক্ত থাকে, সেখানে কীভাবে এমন ঘটনা সম্ভব? নিরাপত্তা, নজরদারি এবং জবাবদিহিতার ঘাটতি ছাড়া আর কী ব্যাখ্যা থাকতে পারে?
চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন হাজার হাজার কনটেইনার ওঠানামা করে। এর ভেতর থেকে কয়েকটি কনটেইনার হঠাৎ নিখোঁজ হওয়া শুধু পণ্যহানি নয় বরং পুরো বাণিজ্য প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা হারানোর মতো ঘটনা। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, বারবার এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশের বন্দর ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশে যখন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য দিন দিন বাড়ছে, তখন বন্দরের প্রতিটি কার্যক্রমে প্রযুক্তিনির্ভর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যথায় এ ধরনের অনিয়ম শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতিই করবে না বরং বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়ে দেবে।
অর্থনীতিবিদ ও বন্দর বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের ঘটনায় তদন্ত ও দায় নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের কঠোর অবস্থান নেওয়া প্রয়োজন। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, ট্র্যাকিং সিস্টেম আরও শক্তিশালী করা এবং বন্দরের প্রতিটি ধাপে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাই এখন সময়ের দাবি।
চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক বাণিজ্যের সঙ্গেও যুক্ত। তাই এখানকার দুর্বলতা কোনোভাবেই হালকাভাবে নেওয়া যায় না।
আমদানি পণ্য খালাস প্রক্রিয়া: নিয়ম বনাম বাস্তবতা
সাধারণ নিয়মে কোনো আমদানিকৃত পণ্য বন্দরে পৌঁছানোর আগে শিপিং এজেন্টকে রাজস্ব কর্তৃপক্ষের কাছে ইমপোর্ট জেনারেল ম্যানিফেস্ট (IGM) দাখিল করতে হয়। এরপর ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিএন্ডএফ) এজেন্টরা সার্ভারে বিল অব এন্ট্রি জমা দেন। এতে থাকে ব্যাংক সংক্রান্ত তথ্য এবং পণ্যের পূর্ণ বিবরণ।
এজেন্টরা সংশ্লিষ্ট সব নথি কাস্টমস কর্মকর্তাদের হাতে সরাসরি জমা দেন। এর মাধ্যমেই শুরু হয় পণ্য যাচাই ও শুল্ক নির্ধারণ প্রক্রিয়া। সব ধরনের শুল্ক ও কর পরিশোধ এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর আমদানিকারক পণ্য ডেলিভারি পাওয়ার যোগ্য হন।
তবে নির্ধারিত ৩০ দিনের মধ্যে যদি কোনো পণ্য খালাস না হয়, তা নিলামে তোলা হয়। নিলামের আগে আগ্রহী ক্রেতাদের পণ্য দেখার সুযোগ থাকে। প্রতিটি ধাপে নথি যাচাই, নজরদারি এবং শারীরিক পরিদর্শন থাকার কথা—যা দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার মূল ভিত্তি।
তবে কোনো গোপন তথ্য বা সন্দেহ পাওয়া গেলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যে কোনো পর্যায়ে পণ্য আটক করতে পারে। সেক্ষেত্রে পণ্যকে শতভাগ শারীরিক পরীক্ষার আওতায় আনা হয়। পরীক্ষা শেষে যদি মিথ্যা ঘোষণা প্রমাণিত হয়, তবে শুল্ক আরোপ বা পণ্য বাজেয়াপ্ত—দুই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তাত্ত্বিকভাবে এই কাঠামো অনিয়মের কোনো সুযোগ রাখে না। কিন্তু বাস্তবে বহু পর্যায়ে কনটেইনার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা প্রমাণ করছে, সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলো সবসময় কার্যকরভাবে কাজ করছে না।
বড় ঝুঁকির সতর্কতা-
বাংলাদেশ পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ মাসরুর রিয়াজ দেশের সুনাম ও নিরাপত্তার ওপর বড় ঝুঁকির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, “বিশ্বের যেকোনো আন্তর্জাতিক বন্দরে উচ্চ নিরাপত্তা জোন থেকে পণ্য বা পণ্যভর্তি কনটেইনার হারিয়ে যাওয়া অত্যন্ত বিরল ঘটনা। এটি স্বাভাবিক নয়।”
রিয়াজের মতে, এ ধরনের ঘটনার প্রভাব বহুমাত্রিক।
প্রথমত, সরকারি হেফাজতে থাকা মালামাল যদি অদৃশ্য হয়ে যায়, তবে প্রশ্ন ওঠে—নিরাপত্তা ঝুঁকিপূর্ণ কোনো সামগ্রীও কি এভাবে বেরিয়ে যেতে পারে?
দ্বিতীয়ত, এতে রাজস্ব ক্ষতি হয়। কারণ নিলামের জন্য নির্ধারিত পণ্য ক্রেতাদের কাছে পৌঁছায় না, ফলে সরকারের সম্ভাব্য আয় হারিয়ে যায়। পাশাপাশি, এই ব্যর্থতা বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড় দুর্বলতা প্রকাশ করে।
তৃতীয়ত, দীর্ঘমেয়াদে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয় দেশের ভাবমূর্তিতে। তিনি বলেন, “এমন ঘটনা আমাদের আন্তর্জাতিক সুনাম নষ্ট করে। বিদেশি ব্যবসায়ী ও বাণিজ্য অংশীদারদের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়।”
বিশ্বব্যাপী সাধারণত কনটেইনার হারানোর ঘটনা ঘটে সমুদ্র দুর্ঘটনায়। ওয়ার্ল্ড শিপিং কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে সমুদ্রে ৫৭৬টি কনটেইনার হারিয়েছে, যা ২০২৩ সালের রেকর্ড-নিম্ন ২২১টির চেয়ে বেশি। তবে সংস্থাটি কোথাও বন্দরের ভেতর থেকে কনটেইনার নিখোঁজ হওয়ার কোনো তথ্য দেয়নি।
কনটেইনার নিখোঁজে দায় এড়িয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ
চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার নিখোঁজের ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিজ্ঞ শিপিং এজেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ। চার দশকের অভিজ্ঞ এই ব্যবসায়ী বলেন, “আমার জানা মতে বিশ্বের অন্য কোনো বন্দরে এমন ঘটনা ঘটেনি। কনটেইনার তো ছোট কোনো জিনিস নয়। সব জায়গায় সিসিটিভি থাকলে এমনভাবে হারিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।”
আরিফের অভিযোগ, বন্দরের ভেতর থেকে কনটেইনার সরাতে হলে অবশ্যই টার্মিনাল অপারেটর, বন্দর কর্মকর্তা এবং কাস্টমস কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকতে হয়। তার মতে, “বড় ধরনের একটি চোরাচালান সিন্ডিকেট এ ঘটনার পেছনে সক্রিয়।”
বন্দর কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তিনটি কনটেইনার নিখোঁজ হয়েছে। অথচ কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে হালকাভাবে নিচ্ছে। এ কারণেই আসল দোষীদের শনাক্ত করা যায়নি।”
তিনি সতর্ক করে আরও বলেন, নিরাপত্তায় ফাঁক থাকলে এমনকি জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে ফেলতে পারে এমন চালানও বাইরে চলে যেতে পারে। তাই সরকারের উচিত অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করা।
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম সুজনও আরিফের বক্তব্যের সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, “বিশ্বের অন্য বন্দরে কনটেইনার হারিয়ে যাওয়ার খবর শোনা যায় না। তবে চট্টগ্রাম বন্দরের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন।”
তার মতে, বিশ্বের বেশিরভাগ বন্দর শুধু কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে সীমাবদ্ধ। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরকে একই সঙ্গে কনটেইনার পরিচালনা, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং পণ্য সংরক্ষণের দায়িত্বও নিতে হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার নিখোঁজ: কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানিয়েছেন, এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে কনটেইনারটি নিখোঁজ হয়েছে। তার ভাষায়, “আমরা আশাবাদী, কনটেইনারটি বন্দরের ভেতরেই কোথাও রয়েছে।”
বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, চলতি বছরের শুরুতে কনটেইনারভর্তি পণ্য চুরির চেষ্টা করার অভিযোগে দুটি সিন্ডিকেটের আটজনকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে এবং পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, এরপর থেকেই বন্দর কর্তৃপক্ষ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
ওমর ফারুক জানান, সাম্প্রতিক ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সিসিটিভি ফুটেজ, কনটেইনার ট্র্যাকিং সিস্টেমসহ বন্দরের সব সরঞ্জাম খতিয়ে দেখবে। নিখোঁজ কনটেইনার শনাক্ত না হলে, কে সরিয়েছে, কখন এবং কীভাবে সরানো হয়েছে—সবকিছুই তদন্তে বের করা হবে। তার ভাষায়, “তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা সম্ভব নয়।”
২০১৮ সালের কনটেইনার নিখোঁজের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি অনেক আগের হওয়ায় এ নিয়ে মন্তব্য করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।
এখানে আপনার দেওয়া টেক্সটটি আমি সাংবাদিকতার ভঙ্গিতে, সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় নতুন করে সাজিয়ে দিলাম। সব তথ্য রাখা হয়েছে, তবে বাক্যগুলো ছোট করা হয়েছে, পাঠকবান্ধবভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং SEO উপযোগী শিরোনামও যুক্ত করা হয়েছে।
স্বাধীন তদন্তের দাবি
চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার নিখোঁজের ঘটনায় তদন্ত হলেও কার্যকর ফল পাওয়া যায় না বলে সমালোচকরা অভিযোগ তুলেছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অর্থনীতি অধ্যাপক মইনুল ইসলাম মনে করেন, এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত হলেও প্রকৃত সত্য খুব কমই সামনে আসে। তার অভিযোগ, অনিয়মের সুবিধাভোগীরাই প্রায়শই তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে থাকেন। ফলে বাস্তব চিত্র গোপন থেকে যায়।
তিনি বলেন, স্বাধীন তদন্ত ও বিশ্বাসযোগ্য শাস্তি না হলে ব্যবস্থাগত দুর্বলতা কাটানো সম্ভব নয়।
একই মত প্রকাশ করেন অর্থনীতিবিদ রিয়াজও। তার মতে, বাংলাদেশের বন্দর ব্যবস্থাপনার আন্তর্জাতিক খ্যাতি আগে থেকেই খুব উজ্জ্বল নয়। নতুন এসব ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করবে।
অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলেন, এ সমস্যা শুধু কয়েকটি কনটেইনার নিখোঁজ হওয়ার বিষয় নয়। এর প্রভাব পুরো ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের ওপর পড়বে। কারণ চট্টগ্রাম বন্দরই দেশের প্রায় সব সামুদ্রিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে।
৪৫০ বিলিয়ন ডলারের বাংলাদেশি অর্থনীতি যখন এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন বন্দর ব্যবস্থাপনার দক্ষতা ও নিরাপত্তা রপ্তানি প্রতিযোগিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন সময়ে কনটেইনার উধাও হওয়ার ঘটনা দেশের বাণিজ্যিক বিশ্বাসযোগ্যতায় বড় আঘাত হানছে।

