Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Sun, Nov 9, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাণিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • শিক্ষা
      • স্বাস্থ্য
      • প্রযুক্তি
      • ধর্ম
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » চীন, ভারত, রাশিয়ার ৪৫২ বিলিয়ন ডলারের ত্রিপক্ষীয় বাণিজ্য
    অর্থনীতি

    চীন, ভারত, রাশিয়ার ৪৫২ বিলিয়ন ডলারের ত্রিপক্ষীয় বাণিজ্য

    মনিরুজ্জামানSeptember 3, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    বিশ্ব অর্থনীতিতে অ-পাশ্চাত্য শক্তির উত্থান এখন স্পষ্ট। এর প্রমাণ মেলে ভারত, চীন ও রাশিয়ার বাণিজ্য সম্পর্কের মধ্যে। ২০২৩ সালে এই তিন দেশের মধ্যে বাণিজ্য দাঁড়িয়েছে ৪৫২ বিলিয়ন ডলারে, যা এক বছর আগের ৩৫১ বিলিয়ন ডলার থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। অর্থাৎ মাত্র এক বছরে প্রায় ১০১ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে ত্রিপক্ষীয় বাণিজ্য। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক জটিলতা পর্যবেক্ষণ সংস্থা ওইসিই এর তথ্য অনুযায়ী, এ ধারা বৈশ্বিক বাণিজ্য কাঠামোয় নতুন ভারসাম্য তৈরি করছে।

    বিশ্ব অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তার করে আসছে। বিশেষ করে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, বিশ্ব ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-এর মতো প্রতিষ্ঠানে তাদের নেতৃত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি, বিশেষ করে উচ্চ শুল্ক আরোপ, বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা তৈরি করেছে। ২০২৩ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বেশ কয়েকটি দেশের পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ান। বিশেষভাবে ভারত ও চীনকে লক্ষ্য করে নেওয়া এসব সিদ্ধান্তকে অনেক দেশ “অন্যায় ও একতরফা” বলে সমালোচনা করেছে।

    এই প্রেক্ষাপটে অ-পাশ্চাত্য দেশগুলো বিকল্প বাণিজ্য কাঠামোর দিকে ঝুঁকছে। এ কারণেই সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) ক্রমশ গুরুত্ব পাচ্ছে। সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন  গঠিত হয় ২০০১ সালে। প্রথমে এর সদস্য ছিল চীন, রাশিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান। পরে ধাপে ধাপে যুক্ত হয় ভারত, পাকিস্তান, ইরান ও বেলারুশ। বর্তমানে এটি ১০ সদস্যের জোট।

    এসসিওর আঞ্চলিক পরিধি বিস্তৃত। মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া ও পূর্ব ইউরেশিয়ার দেশগুলো এতে অন্তর্ভুক্ত। এ জোট বিশ্বের প্রায় ৪৩ শতাংশ জনসংখ্যা ও ২৩ শতাংশ বৈশ্বিক জিডিপি কভার করে। শুধু জনসংখ্যা ও অর্থনীতির হিসাবেই নয়, জ্বালানি, খনিজ, কৃষি ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার দিক থেকেও এসসিও শক্তিশালী এক প্ল্যাটফর্ম। ২০২৩ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে চীনের তিয়ানজিনে এসসিওর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ২০টিরও বেশি অ-পাশ্চাত্য দেশের নেতা অংশ নেন। সোমবার সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার বক্তব্যে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কাঠামোয় পরিবর্তনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন—

    • বিশ্বকে একক আধিপত্য ও শক্তির রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
    • প্রকৃত বহুপাক্ষিক সহযোগিতা ছাড়া অর্থনৈতিক স্থিতি ফিরবে না।
    • দক্ষিণ গোলার্ধভুক্ত দেশগুলো বিশ্ব অর্থনীতির কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।

    এ বক্তব্য মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের চাপের বিরুদ্ধে পাল্টা অবস্থান। তিয়ানজিন সম্মেলনের বার্তা স্পষ্ট—

    • পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে।
    • বাণিজ্যে বৈচিত্র্য ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো হচ্ছে।
    • জ্বালানি ও নিরাপত্তা ইস্যুতেও সমন্বয় তৈরি হচ্ছে।

    চীন, ভারত ও রাশিয়া—এই তিন দেশের সম্মিলিত অর্থনৈতিক শক্তি বিশ্ব জিডিপির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। তাই তাদের বাণিজ্য সম্পর্ক কেবল আর্থিক নয়, রাজনৈতিক ভারসাম্যও নির্ধারণ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতি ও রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কার্যত এসসিও সদস্য দেশগুলোকে একে অপরের কাছে নিয়ে আসছে। এশিয়া-কেন্দ্রিক এই জোট ভবিষ্যতে বৈশ্বিক বাণিজ্যের একটি বড় বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হতে পারে।

    • জ্বালানি সরবরাহে রাশিয়া,
    • শিল্প উৎপাদনে চীন,
    • মানবসম্পদ ও ভোগবাজারে ভারত।

    চীনের বাণিজ্য কাঠামো:

    চীন এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রধান শক্তি। দেশটির বাণিজ্য কাঠামো এমনভাবে বিস্তৃত ও প্রভাবশালী যে, আন্তর্জাতিক অর্থনীতি আজ চীনকে বাদ দিয়ে কল্পনা করা যায় না। উৎপাদন, রপ্তানি, আমদানি, আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং প্রযুক্তি খাতের বিকাশ—সব মিলিয়ে চীন এক অনন্য অবস্থানে পৌঁছেছে।

    বিশ্বের কারখানা হিসেবে পরিচিত চীন বৈশ্বিক শিল্প উৎপাদনের প্রায় ৩০ শতাংশের সমান পণ্য উৎপাদন করে। ২০২৩ সালে দেশটি ৩.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ও চিপসেট, শিল্প যন্ত্রাংশ, যানবাহনের খুচরা যন্ত্রাংশ, টেক্সটাইল ও পোশাক সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশসমূহ এবং আফ্রিকা চীনা পণ্যের প্রধান বাজার।

    রপ্তানির পাশাপাশি আমদানির ক্ষেত্রেও চীন বৈশ্বিক শীর্ষে রয়েছে। ২০২৩ সালে দেশটি ২.৬ ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। এর বড় অংশই অপরিশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস, লোহা ও তামার মতো খনিজ, সয়াবিন ও ভুট্টার মতো কৃষিপণ্য এবং উচ্চ প্রযুক্তির যন্ত্রাংশ। জ্বালানির জন্য মধ্যপ্রাচ্য ও রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল চীন কৃষিপণ্য আমদানি করে ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে, আর প্রযুক্তি সরঞ্জাম আসে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে।

    চীন শুধু আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে নয়, আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমেও শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে। বিশ্বের বৃহত্তম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আরসেপ এ দেশটি নেতৃত্ব দিচ্ছে। উদীয়মান অর্থনীতির জোট ব্রিকস এবং মহাসড়ক, বন্দর ও রেলপথ নির্মাণকেন্দ্রিক বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের মাধ্যমে চীন বৈশ্বিক বাণিজ্যে বিকল্প কাঠামো দাঁড় করিয়েছে। এর মাধ্যমে দেশটি পশ্চিমা বাজার ও নীতির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নতুন বাণিজ্য নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছে। বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে চীনের গুরুত্ব আরও স্পষ্ট। কোভিড-১৯ মহামারির সময় চীনা কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে ইলেকট্রনিকস, গাড়ি ও পোশাকশিল্পে বিশ্বব্যাপী সংকট দেখা দেয়। এতে প্রমাণ হয়, বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন চীনকে বাদ দিয়ে স্থিতিশীল রাখা সম্ভব নয়।

    চীনের অর্থনৈতিক শক্তি কেবল উৎপাদন বা বাণিজ্যে সীমাবদ্ধ নয়। প্রযুক্তি খাতেও দেশটি দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। হুয়াওয়ে, শাওমি, আলিবাবা ও টিকটকের মতো প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাপী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। একইসাথে আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের বিনিয়োগ দিন দিন বাড়ছে, যা দেশটির বাণিজ্য প্রভাব আরও বিস্তৃত করছে। তবে চীনের এই শক্তিশালী বাণিজ্য কাঠামো চ্যালেঞ্জমুক্ত নয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের শুল্ক নীতি ও নিষেধাজ্ঞা, সরবরাহ চেইনের বিকল্প খোঁজা, প্রযুক্তি যুদ্ধে সেমিকন্ডাক্টর সংকট, জনসংখ্যা হ্রাস এবং উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি—এসব চীনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। তবুও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আগামী এক দশক চীন বৈশ্বিক বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবেই প্রভাব বিস্তার করবে।

    ভারতের বাণিজ্য কাঠামো:

    ভারত বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতিগুলোর মধ্যে একটি। জনসংখ্যা, ভোক্তা বাজার, প্রযুক্তি খাত এবং শিল্প উৎপাদনের সংমিশ্রণে দেশটি বৈশ্বিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ২০২৩ সালে ভারতের বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিসংখ্যানে তা স্পষ্ট। ভারতের রপ্তানি প্রধানত ঔষধ, প্রযুক্তি পণ্য, মূল্যবান পাথর ও ধাতু, টেক্সটাইল এবং যন্ত্রপাতি। ২০২৩ সালে ভারতের রপ্তানি আকারে সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি ভারতের কাছ থেকে ৮১.৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য কিনেছে, যা ভারতের মোট রপ্তানির ১৭.৯ শতাংশ। মূল পণ্য হিসেবে ঔষধ ও ফার্মাসিউটিক্যালস শীর্ষে রয়েছে, পাশাপাশি মূল্যবান পাথর, যন্ত্রপাতি ও বস্ত্রও গুরুত্বপূর্ণ।

    এশিয়ার বাজার ভারতের রপ্তানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৩ সালে এশিয়ার দেশগুলোতে রপ্তানি হয়েছে ১৭৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। সংযুক্ত আরব আমিরাত ছিল দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার, যেখানে ভারতের রপ্তানি ছিল ৩১.৪ বিলিয়ন ডলার। এখানে প্রধান পণ্য ছিল গহনা ও পরিশোধিত তেল। নেদারল্যান্ডস ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য, যেখানে রপ্তানির প্রধান অংশ পরিশোধিত তেল। চীন ভারতীয় পণ্যের চতুর্থ বৃহত্তম গন্তব্য এবং এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম।

    ভারতের আমদানি কাঠামোও বৈচিত্র্যময়। প্রধান আমদানি পণ্য হলো—জ্বালানি (তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস), যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক পণ্য এবং কৃষি ও খাদ্যপণ্য। ভারতের মূল আমদানি অংশীদাররা হলো রাশিয়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষভাবে রাশিয়ার কাছ থেকে ভারত ডিসকাউন্টে অপরিশোধিত তেল ও গ্যাস আমদানি করছে, যা দেশটির জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

    রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটও ভারতের বাণিজ্যে প্রভাব ফেলে। ২০২৩ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যুক্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয় ভারতের রাশিয়ার ডিসকাউন্ট তেল ক্রয়। ভারতের সরকার তা “অন্যায় ও একতরফা” বলে প্রতিহত করে এবং তার জ্বালানি নীতি স্বাধীনভাবে নির্ধারণের অধিকার নিশ্চিত করে। এ সিদ্ধান্তের পরও ভারত রাশিয়ার তেল আমদানি অব্যাহত রাখে। ভারতের বাণিজ্য কাঠামোতে বৈশ্বিক বাজারে স্থানীয় উৎপাদন, প্রযুক্তি ও ঔষধ খাতের গুরুত্ব বড়। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভারত শুধু পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে নয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বাণিজ্য নেটওয়ার্কে নিজস্ব অবস্থান তৈরি করছে। দেশের উদীয়মান অর্থনীতি, বৃহৎ ভোক্তা বাজার এবং বৈচিত্র্যময় রপ্তানি পণ্য ভারতকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বাণিজ্যিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

    রাশিয়ার বাণিজ্য কাঠামো:

    রাশিয়া এখন বিশ্ব বাণিজ্যে প্রধানত জ্বালানি রপ্তানির কারণে গুরুত্বপূর্ণ। দেশটির বাণিজ্য কাঠামো দীর্ঘদিন ধরে বৈচিত্র্যময় ছিল, তবে ২০২২ সালের ইউক্রেনে হামলার পর তা উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার পূর্বের ইউরোপীয় বাজারে প্রভাব কমে গেছে এবং এশিয়ার দিকে নজর আরও বাড়িয়েছে। ২০২১ সালে রাশিয়ার প্রধান বাণিজ্য অংশীদার ছিল চীন, নেদারল্যান্ডস এবং যুক্তরাষ্ট্র। চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৭২.১ বিলিয়ন ডলার, নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে ৩৯.৫ বিলিয়ন ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২৭.৩ বিলিয়ন ডলার। ইউরোপীয় বাজার, বিশেষ করে নেদারল্যান্ডস ও জার্মানি, রাশিয়ার রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখত।

    তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ার ইউরোপীয় ও পশ্চিমা অংশীদারদের সঙ্গে বাণিজ্য কঠোরভাবে কমে যায়। ২০২৩ সালের পরিস্থিতিতে দেখা যায়, চীন রাশিয়ার রপ্তানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ গ্রহণ করেছে, যা ১২৯ বিলিয়ন ডলার। দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা ভারত, যেখানে রাশিয়ার পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৬৬.১ বিলিয়ন ডলার, এবং তৃতীয় স্থানে তুরস্ক (৩১ বিলিয়ন ডলার)। মোট রাশিয়ার রপ্তানির প্রায় তিন-চতুর্থাংশ এখন এশিয়ার দেশগুলোতে যাচ্ছে। রাশিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য হলো জ্বালানি—তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস।

    ২০২৩ সালে চীনে রাশিয়ার রপ্তানি ১২৯ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে প্রায় তিন-চতুর্থাংশই ছিল জ্বালানি। রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যও প্রধানত এ খাতের ওপর নির্ভরশীল, যেখানে ভারতের কাছ থেকে আমদানি করা পণ্যের ৮৮ শতাংশই জ্বালানি। রাশিয়ার আমদানি ক্ষেত্রও পূর্বের মতো বহুমুখী। দেশটি চীনের কাছ থেকে যন্ত্রপাতি, পরিবহন সরঞ্জাম ও গাড়ি আমদানি করছে। এছাড়া খাদ্যপণ্য, কৃষি উপকরণ এবং কিছু কাঁচামালও আমদানি করা হয়। তবে আমদানি তুলনামূলকভাবে রপ্তানির তুলনায় কম। সারসংক্ষেপে, রাশিয়ার বাণিজ্য কাঠামো এখন জ্বালানি কেন্দ্রিক এবং এশিয়ার বাজারে বেশি নির্ভরশীল। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা দেশটিকে বাণিজ্যিক অংশীদারদের বিচ্যুতির দিকে ধাবিত করেছে। এশিয়ার বাজারে চীন ও ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাশিয়ার বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন ভারসাম্য সৃষ্টি করছে।

    চীন, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যকার বাণিজ্য ভারসাম্য: চীন, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য কেবল অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক ও ভূ-অর্থনৈতিক প্রভাবও রাখে। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, এই তিন দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য বা একে অপরের সঙ্গে লেনদেনের তুলনামূলক অবস্থা স্পষ্ট।

    চীন ও রাশিয়া: চীনের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্য দীর্ঘদিন ধরে শক্তিশালী। ২০২৩ সালে চীন রাশিয়ায় প্রায় ১১০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, প্রধানত যন্ত্রপাতি ও পরিবহন সরঞ্জাম। গাড়ি ও শিল্প যন্ত্রাংশ রপ্তানির শীর্ষে ছিল। অন্যদিকে, রাশিয়া চীনে ১২৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এর প্রায় তিন-চতুর্থাংশই ছিল জ্বালানি পণ্য—তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং খনিজ। ফলে রাশিয়ার চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সুপারিশিষ্ট অবস্থায় আছে, অর্থাৎ রাশিয়া চীনের তুলনায় বেশি রপ্তানি করছে, প্রধানত জ্বালানি খাতের কারণে। এই ভারসাম্যই চীনের শক্তিশালী শিল্প উৎপাদন ও রাশিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নির্ভরশীলতা প্রকাশ করে। বাণিজ্যিকভাবে চীন প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে এবং রাশিয়া শক্তিশালী জ্বালানি উৎস হিসেবে কাজ করে।

    রাশিয়া ও ভারত : ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্য মূলত জ্বালানি কেন্দ্রীক। ২০২৩ সালে রাশিয়া ভারতের কাছে ৬৬.১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যার ৮৮ শতাংশই জ্বালানি। ভারতের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের উপর ডিসকাউন্ট সুবিধা রয়েছে। অন্যদিকে ভারতের রাশিয়ার কাছে রপ্তানি মাত্র ৪.১ বিলিয়ন ডলার, প্রধানত রাসায়নিক, যন্ত্রপাতি ও ধাতু। অর্থাৎ ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্যে ভারসাম্য রাশিয়ার পক্ষে ব্যাপক, অর্থাৎ ভারত বড় বাণিজ্য ঘাটতি বহন করছে।

    ভারত ও চীন: ভারতের চীনের সঙ্গে বাণিজ্যও বড় ঘাটতির দিকে। ২০২৩ সালে চীন ভারতকে ১২৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, প্রধানত যন্ত্রপাতি ও রাসায়নিক পণ্য। ভারত চীনে মাত্র ১৮.১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যার মধ্যে প্রধান পণ্য হলো তেল ও জ্বালানির সঙ্গে সম্পর্কিত পণ্য। অর্থাৎ ভারত চীনের তুলনায় প্রায় সাতগুণ কম রপ্তানি করছে। ফলস্বরূপ, ভারতের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ভারসাম্যও চীনের পক্ষে অস্বাভাবিকভাবে উচ্চ।

    চীন, ভারত ও রাশিয়ার বাণিজ্য সম্পর্ক কেবল অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক ও কৌশলগত প্রভাবও রাখে। চীন শক্তিশালী শিল্প ও প্রযুক্তি দিয়ে প্রভাব বজায় রাখে, রাশিয়া জ্বালানি রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল, আর ভারত বড় বাজার ও বৈচিত্র্যময় পণ্যের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ। এই ত্রিপক্ষীয় বাণিজ্য ভারসাম্য বা ঘাটতি বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলে।

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    আইন আদালত

    মামলাজট: দেশের ন্যায়বিচারে বড় প্রতিবন্ধকতা

    November 8, 2025
    আন্তর্জাতিক

    রপ্তানি সংকটে চীনের অর্থনীতি

    November 8, 2025
    বাংলাদেশ

    সেন্ট মার্টিনে পর্যটক সংকট তীব্র, আট দিনেও যাননি একজন পর্যটক

    November 8, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত

    আইন আদালত October 7, 2025

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.