প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের গৃহকর্ম ও যত্ন কার্যক্রমের অবৈতনিক অর্থনৈতিক অবদান নিরূপণ করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। আজ মঙ্গলবার বিবিএস এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানটি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন বিবিএসের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আকতার এবং ইউএন উইমেনের প্রতিনিধি গীতাঞ্জলী সিংহ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নারীরা বিনা বেতনে গৃহস্থালি এবং যত্নের কাজ করছেন। এসব কাজ অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানের বাইরে থাকলেও দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। রান্না, লন্ড্রি, গৃহস্থালি পরিচালনা, শিশু ও বয়স্ক, প্রতিবন্ধী বা অসুস্থদের যত্ন—এই সব অবৈতনিক কাজ নারীরা প্রধানত করে থাকেন।
বিবিএস সময় ব্যবহার জরিপ ২০২১ এবং শ্রমশক্তি জরিপ ২০২২-এর তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই হিসাব প্রকাশ করেছে। হিসাব অনুযায়ী ২০২১ সালে অবৈতনিক গৃহস্থালি ও যত্নের কাজের অর্থনৈতিক অবদান ৬ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন টাকা। এটি জিডিপির প্রায় ১৮.৯ শতাংশ। এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ অবদান নারীদের।
ইউএন উইমেন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম বিশ্লেষক নুবায়রা জেহিন কেয়ার ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে প্রতিবেদনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। এটি এমন একটি টুল যা ব্যক্তিদের দৈনন্দিন অবৈতনিক গৃহস্থালি ও যত্নের কাজে ব্যয় করা সময় পরিমাপ করতে সাহায্য করে। বিবিএসের ডেমোগ্রাফি ও স্বাস্থ্য শাখার ডেপুটি ডিরেক্টর আসমা আখতার এইচপিএসএ প্রতিবেদনের মূল ফলাফল উপস্থাপন করেন।
বিবিএস নির্দেশ দেয়, অবৈতনিক কাজকে আইন ও নীতিমালার সঙ্গে একীভূত করার জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। জাতীয় বাজেট ও উন্নয়ন কৌশলগুলিতে ঘরের কাজকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। উপযুক্ত যত্নের চাকরি এবং অবৈতনিক কাজের জন্য টেকসই অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, পুরুষ ও ছেলেদের যত্নের দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে সামাজিক রীতিনীতির পরিবর্তন আনা জরুরি।

