পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের একীভূত কার্যক্রম বাস্তবায়নে আট সদস্যের একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করেছে সরকার। গতকাল সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক আদেশে এ কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়।
এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই ওয়ার্কিং কমিটি গঠিত হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন ব্যাংকের নাম হতে পারে ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’।
ওয়ার্কিং কমিটির দায়িত্ব হলো পাঁচ ব্যাংকের একীভূত কার্যক্রম বাস্তবায়নে একটি পূর্ণাঙ্গ কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা। কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. কবির আহাম্মদ। অন্য সদস্যরা হলেন—অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন, উপসচিব ফরিদ আহমেদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব শেখ ফরিদ ও মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংক রেজল্যুশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জহির হোসেন এবং একই বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক কাজী আরিফ উজ জামান ও মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, কমিটির সদস্যরা নিয়ম অনুযায়ী সভায় অংশগ্রহণের জন্য সম্মানী পাবেন। একীভূত হতে যাওয়া ব্যাংকগুলো হলো—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যেই এসব ব্যাংকের সঙ্গে শুনানি করেছে। এর মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক বিনা শর্তে একীভূত হতে সম্মত হয়েছে। তবে এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক আরও কিছু সময় চেয়েছে।
একীভূত নতুন ব্যাংকের মূলধন ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার সরাসরি দেবে ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকা, আর বাকি অর্থ ঋণ হিসেবে সংগ্রহ করা হবে। এক্সিম ছাড়া অন্য চারটি ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে এস আলম গ্রুপের মালিকানায় ছিল। এস আলমকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ বলে সমালোচনা রয়েছে। অপরদিকে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারও ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, ‘প্রথম দিন থেকেই বলে আসছি, একীভূত হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। প্রস্তাবিত ব্যাংকটির মাধ্যমে সারা দেশে সাড়া ফেলে দেওয়া সম্ভব।’