আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’ বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যেই পরিবর্তন আনা হচ্ছে আইন ও বিধিতে। পাশাপাশি নতুন জনবল কাঠামো গঠন করা হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতায় চারটি বিভাগ রয়েছে—অর্থ বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি), অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। নতুন অধ্যাদেশ কার্যকর হলে এগুলো পুনর্গঠন করে পাঁচ বিভাগে রূপ দেওয়া হবে। তখন অর্থ বিভাগ, ইআরডি ও এফআইডি বহাল থাকবে। তবে বাদ পড়বে আইআরডি। এর জায়গায় যুক্ত হবে দুটি নতুন বিভাগ—রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ। ফলে এনবিআর নামের কোনো বোর্ড আর থাকবে না। চেয়ারম্যান ও সদস্যদের পদ বিলুপ্ত হবে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “আইন-কানুন সংশোধনের কাজ চলছে। আশা করছি, ডিসেম্বরের মধ্যেই অধ্যাদেশ বাস্তবায়ন করা যাবে। তখন নতুন দুই বিভাগে সচিব নিয়োগ দেওয়া হবে।” এনবিআর সূত্র জানায়, বিদ্যমান তিন আইন—মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, আয়কর আইন এবং শুল্ক আইন—সংশোধনের কাজ শুরু করেছে তিনটি বিশেষ দল। নতুন কাঠামো বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকও সহায়তা দেবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, “আইন, বিধি ও উৎস বিধি সংশোধন ছাড়া অধ্যাদেশ কার্যকর সম্ভব নয়। এগুলো নিয়ে কাজ চলছে। দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে খসড়া তৈরি হয়ে যাবে বলে আশা করছি।” রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনাকে আলাদা করার আলোচনা বহু বছর ধরে চললেও বাস্তব পদক্ষেপ নেয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। এর বিরোধিতা করে এনবিআরের কিছু কর্মকর্তা গত জুন-জুলাইয়ে টানা আন্দোলন করেছিলেন। পরে তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়।
এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ২৯ জুন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটি সমাধানের পথ বের করে এবং ২১ আগস্ট ১১টি ধারা সংশোধন করে খসড়া অনুমোদনের জন্য উপদেষ্টা পরিষদে পাঠায়।ন অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “কাজ এগোচ্ছে। সময় আর বেশি লাগবে না। ডিসেম্বরের আগেই অধ্যাদেশ বাস্তবায়িত হয়ে যেতে পারে।”

