বিশেষ আদেশে আমদানি পণ্যে আরোপযোগ্য শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) হ্রাস বা বৃদ্ধি করতে বিদ্যমান অধ্যাদেশের আবারও সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। দ্বিতীয় দফার এ খসড়া আজ বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উপস্থাপন করা হবে। বিষয়টি অনুমোদিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সকাল ১০.৩০টায় সভা শুরু হবে। সভাপতিত্ব করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সূত্র জানিয়েছে, ২০১২ সালের মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইনে নতুন শুল্ক ও কর আরোপ করে চলতি বছরের ২৬ জুন সংশোধনী আনা হয়েছিল। যেহেতু বর্তমানে সংসদ কার্যকর নেই, তাই অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আইনি কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে ‘অর্থ-সংক্রান্ত কতিপয় আইন (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’-এর সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সরকারের আর্থিক প্রস্তাব কার্যকর করা এবং অর্থ-সংক্রান্ত কতিপয় আইন সংশোধনকল্পে প্রণীত অধ্যাদেশ (অধ্যাদেশ নং-৩৩, ২০২৫) দ্বিতীয় দফায় সংশোধন আনা হবে। খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যমান ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’ অনুযায়ী কোন কোন আমদানি পণ্যে শুল্ক ও কর হ্রাস বা বৃদ্ধি হবে তা বিশেষ আদেশ জারির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে সরকার। এ ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের লিখিত সুপারিশ বা মতামত নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, সংশোধনী প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে যেসব পণ্যের শুল্ক বা কর হ্রাস-বৃদ্ধি হতে পারে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে: গরু, ভেড়া, ছাগল, মুরগির তাজা বা হিমায়িত মাংস, মিঠা ও লবণাক্ত পানির বিভিন্ন মাছ, শুকনা মাছ, হিমায়িত চিংড়ি, খাওয়ার উপযোগী মাছের টুকড়া বা গুঁড়া, মাখন ও অন্যান্য দুগ্ধজাত চর্বি, তাজা বা ঠাণ্ডা টমেটো, তাজা বা শুকনা সুপারি, তাজা বা শুকনা আম, কমলালেবু ও লেবু জাতীয় ফল, তাজা বা শুকনা আঙুর, অন্যান্য তাজা ফল, বিভিন্ন মসলা, কোকোযুক্ত চকলেট ও অন্যান্য খাদ্য প্রিপারেশন, তামাক, বিভিন্ন প্রকার গ্রানাইট, সুগন্ধি, কেশ ও দাত পরিচর্যার পণ্য, বিস্ফোরক পাউডার, পিভিসি পাইপ ও বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্য, টয়লেট ও টিস্যু পেপার, বিভিন্ন প্রকার পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, সিরামিক, হীরা ও ইমিটেশন জুয়েলারি, স্টেইনলেস পণ্যসহ আরও শতাধিক ব্যবহার্য পণ্য।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশ সংশোধনের যৌক্তিকতা নিয়ে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ২৬ জুন ৩৫ নম্বর অধ্যাদেশের মাধ্যমে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২, আয়কর আইন, ২০২৩ এবং কাস্টমস আইন, ২০২৩ সংশোধন করা হয়েছিল।
সরকার কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি এবং কর অব্যাহতি প্রদানের পদ্ধতি সহজ করতে এই উদ্যোগ নিয়েছে। পাশাপাশি বাণিজ্যিক মোটরযান থেকে কর আদায় সহজ করতে এবং ভ্যাট ও আয়কর সংক্রান্ত আইন আরও কার্যকর করতে প্রস্তাবিত ‘অর্থ-সংক্রান্ত কতিপয় আইন (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ আজ উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে।

