শেয়ারবাজারে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০ লাখ টাকা বা তার বেশি মুনাফা করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা চেয়ে স্টক এক্সচেঞ্জকে পাঠানো চিঠি স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) বিকেলে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে চিঠি না পাঠানোর বার্তা পাঠিয়েছে। তথ্যটি চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গত রোববার দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে এমন তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠায় শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। তবে বুধবার ডিএসইর পর্ষদ সভায় বিএসইসির সঙ্গে আলোচনার আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ব্রোকারেজ হাউসগুলোর কাছে চিঠি পাঠানো হবে না। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং বিনিয়োগকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য। এছাড়া চিঠি পাঠানোর কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমাও ছিল না।
বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এটি ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্যের মধ্যে পড়ে। কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা অনিয়ম ছাড়া কমিশন এমন তথ্য সংগ্রহ করবে কিনা, তা নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়।”
জাতীয় বাজেট অনুযায়ী, শেয়ারবাজার থেকে ৫০ লাখ টাকার বেশি মুনাফা হলে তার ওপর কর দিতে হয়। সংশ্লিষ্ট সব বিনিয়োগকারী কর দিচ্ছেন কিনা যাচাই করতে গত ২৫ আগস্ট এনবিআর থেকে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল বিএসইসি। কিছু ব্রোকারেজ হাউস জানিয়েছে, গতকালই সিএসই থেকে চিঠি পেয়েছিলেন, তবে বিকেলে তথ্য পাঠাতে হবে না মর্মে নতুন বার্তা এসেছে। ডিএসইর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি সংবেদনশীল হওয়ায় বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা না হওয়া পর্যন্ত তথ্য চাওয়ার কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে।
দরপতনে শেয়ারবাজারে চাপ
এদিকে দুই সপ্তাহ ধরে শেয়ারবাজারে দরপতন চলছে। সর্বশেষ ৯ কার্যদিবসের মধ্যে ছয়দিন দরপতনে ডিএসইএক্স সূচক ২৭৮ পয়েন্ট কমেছে। বাকি তিন দিনে সূচক বেড়েছে ৯২ পয়েন্ট।
গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৮ কোম্পানির মধ্যে ২৮২টির শেয়ারের দর কমেছে। ৩৭টি মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৯টির দর কমেছে। ক্রমাগত দরপতনের কারণে লেনদেনের পরিমাণ ৬৫৫ কোটি টাকার নিচে নেমেছে, যেখানে দুই সপ্তাহ আগে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা।
সাত নিরীক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ
আইপিও প্রসপেক্টাস ও নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর অসংগতির প্রমাণের কারণে সাতটি নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বিএসইসি তাদের পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করবে কি না, সে বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
নোটিশ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: এ হক, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস, আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক, আতা খান, সিরাজ খান বসাক এবং ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং।
বিএসইসি জানিয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, রিংসাইন টেক্সটাইল, আমান কটন ফাইব্রাস এবং ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের নিরীক্ষা এই প্রতিষ্ঠানগুলো করেছিল।

