আগস্ট মাসেও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। বরং ঘাটতি আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরিসংখ্যান বিভাগ জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) রাজস্ব প্রবৃদ্ধি প্রায় ২১ শতাংশ হলেও বড় ঘাটতির মুখে পড়েছে সংস্থাটি।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ে রাজস্ব ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা। আগস্টে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৭১৫ কোটি টাকায়। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬১ হাজার কোটি টাকা কিন্তু আদায় হয়েছে ৫৪ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা। খাতভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে ভ্যাট থেকে। এই খাত থেকে আদায় হয়েছে ২২ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। কাস্টমস থেকে এসেছে ১৭ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা এবং আয়কর থেকে ১৪ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা।
প্রবৃদ্ধির হিসাব অনুযায়ী, ওই সময়ে ভ্যাট খাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব এসেছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ২২ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। শুল্ক খাতে লক্ষ্যমাত্রা ২০ হাজার ২১ কোটি টাকা থাকলেও আদায় হয়েছে ১৭ হাজার ২৪৮ কোটি। আর আয়করে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ১৪ হাজার ৭৩৮ কোটি। এর মধ্যে ভ্যাটে প্রবৃদ্ধি ৩৩ দশমিক ১৩ শতাংশ, আয়করে ২০ দশমিক ০৯ এবং শুল্কে ৬ দশমিক ৬১ শতাংশ।
আগস্ট মাসে আলাদাভাবে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩০ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ২৭ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে আদায় হয়েছিল ২৩ হাজার ৮৯ কোটি টাকা। খাতভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, আগস্টে শুল্কের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৬১ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ৭ হাজার ৬৪৭ কোটি। ভ্যাটে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৬৬০ কোটি, আদায় হয়েছে ১১ হাজার ৮৫ কোটি। আর আয়করে ১০ হাজার ১৬৭ কোটির বিপরীতে আদায় হয়েছে ৮ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা।
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর থেকেই এনবিআরে আন্দোলন চলছিল। ধীরে ধীরে তা কলমবিরতি থেকে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউনে গড়ায়। এতে কাস্টমসের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। এর প্রভাব এখনো কাটেনি। ব্যবসা-বাণিজ্যে অস্থিরতা ও এনবিআরের অভ্যন্তরীণ অচলাবস্থার কারণে রাজস্ব আদায়ে সময় লাগবে স্বাভাবিক হতে।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। যা জিডিপির ৯ শতাংশ। এর মধ্যে এনবিআরের মাধ্যমে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে।

