ভারত সরকার নন-বাসমতী চাল রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন শর্ত আরোপ করেছে। দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে কৃষিপণ্য ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রপ্তানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এপিডা) থেকে নিবন্ধন ছাড়া আর কোনো নন-বাসমতী চাল রপ্তানি করা যাবে না। বৈদেশিক বাণিজ্য মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফটি) সোমবার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে এই নতুন নিয়মের কথা জানানো হয়েছে।
এপিডায় নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত আসছে এমন সময়, যখন ভারতের কয়েকটি রাজ্যে অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে ফসলের ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ভারতের কাছে নন-বাসমতী চাল রপ্তানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত এই চাল রপ্তানি থেকে আয় ৬.৪ শতাংশ বেড়ে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, জানাচ্ছে সিএনবিসি টিভি ১৮।
বাংলাদেশের বাজারে এ সিদ্ধান্তের প্রভাব কতটা পড়বে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। অতীতের তুলনায় বাংলাদেশের চাল আমদানি এখন ভারতের ওপর একপাশে নির্ভরশীল নয়; অন্যান্য দেশ থেকেও চাল আনা হয়। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৩ লাখ টন চাল আমদানি করেছে, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর মধ্যে ভারত থেকে এসেছে ৮ লাখ টন, যা ভারতের মোট নন-বাসমতী চাল রপ্তানির মাত্র ৫.৫ শতাংশ।
আগের অর্থবছরে ভারত থেকে চাল আমদানির পরিমাণ ছিল তুলনায় বেশি; ২০২১-২২ সালে ১৬.২ লাখ টন চাল বাংলাদেশে গিয়েছিল, যা সেই বছরের রপ্তানির ১০ শতাংশের সমান। চলতি বছরে অতি বৃষ্টির আশঙ্কায় বাংলাদেশ সরকার আগেভাগেই চাল আমদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ৭ আগস্ট দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রায় ৯ লাখ টন চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়।
ভারতের বাজারে নতুন নিয়মের খবরের প্রতিক্রিয়ায় স্বর্ণা, মিনিকেট ও সোনামাসুরি ধরনের চালের দাম ৮ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য আমদানিকারক দেশকেও চালের বাজারের অস্থিরতার সঙ্গে মানিয়ে চলতে হবে।