ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে বাংলাদেশকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এ ধরনের উদ্যোগ শুধু দুই দেশের বাণিজ্য বাড়াবে না, বরং বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার নতুন দুয়ার খুলে দেবে।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে চলমান সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে এই প্রস্তাব দেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। আলোচনায় তিনি জানান, ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গেলেফু মাইন্ডফুলনেস সিটি (জিএমসি)-কে কুড়িগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করা গেলে দুই দেশই ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ভুটানের এ আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, উন্নত যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ–ভুটান সম্পর্ক এক নতুন অধ্যায়ে পৌঁছাতে পারে।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে আরও কয়েকটি প্রস্তাব রাখেন—
-
ধর্মীয় পর্যটন উন্নয়নে বাংলাদেশ ও ভুটানের যৌথ উদ্যোগ
-
বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পে বিনিয়োগকে ভুটানের স্বাগত
-
ভুটানের জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা ভাগাভাগি করার প্রস্তাব
-
দুই দেশের মধ্যে ফাইবার অপটিক সংযোগ স্থাপনে সহযোগিতা চাওয়া
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, বাংলাদেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুরাই প্রথম ভুটানে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেছিলেন, তাই ধর্মীয় পর্যটন উভয় দেশের জন্যই বিশেষ গুরুত্ব বহন করতে পারে।
বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুও আলোচনায় উঠে আসে। প্রধানমন্ত্রী তোবগে জানান, ভুটান আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের রোহিঙ্গা বিষয়ক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেবে।
অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তাকে ‘মাই প্রফেসর’ বলে সম্বোধন করেন এবং তার নেতৃত্বে বাংলাদেশে সু-শাসন প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করেন। তিনি থিম্পুতে সম্প্রতি নির্মিত বাংলাদেশের নতুন চ্যান্সারি ভবনের নকশাকেও অভিনব ও প্রশংসনীয় বলে মন্তব্য করেন।
আলোচনার শেষে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। শেরিং তোবগে আমন্ত্রণ গ্রহণ করে জানান, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগেই তিনি এই সফর সম্পন্ন করতে চান।

