বিশ্বজুড়ে দ্রুত বাড়ছে ফাইভজি-নির্ভর ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) প্রযুক্তি ও পরিষেবার বাজার। উন্নত নেটওয়ার্ক ও সংযুক্ত ডিভাইসের ব্যবহার বাড়ার ফলে এই খাতের প্রবৃদ্ধি আগামী কয়েক বছর ধরে অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান এইচটিএফ মার্কেট ইন্টেলিজেন্স।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তত আগামী আট বছর বিশ্বব্যাপী ফাইভজি-সংশ্লিষ্ট আইওটি সলিউশনের বাজার প্রতিবছর গড়ে ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ হারে বাড়বে। চলতি ২০২৫ সালে এই বাজারের আকার ধরা হয়েছে ৩৪০ কোটি ডলার। ২০৩৩ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় চার গুণ, অর্থাৎ ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার।
বাজার ও প্রযুক্তির চিত্র
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, টেলিকম ফাইভজি আইওটি সলিউশন মূলত টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলোর উদ্যোগে পরিচালিত। এসব কোম্পানি ফাইভজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে স্মার্ট ডিভাইস ও প্রযুক্তি সরবরাহ করছে। এর মধ্যে রয়েছে—
- ফাইভজি আইওটি মডেম: যা ডিভাইসকে ফাইভজি নেটওয়ার্কে যুক্ত করে।
- ম্যাসিভ আইওটি প্ল্যাটফর্ম: যা বিপুল সংখ্যক ডিভাইসের তথ্য পরিচালনা করে।
- নেটওয়ার্ক স্লাইসিং সলিউশন: যা একাধিক নেটওয়ার্ক কার্যক্রম আলাদা আলাদাভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে।
বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রযুক্তি শিল্প, ব্যবসা, স্বাস্থ্য, পরিবহন ও স্মার্ট সিটি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আইওটি হলো এমন প্রযুক্তি যেখানে ফ্রিজ, গাড়ি, ঘড়ি, ক্যামেরা, লাইট এমনকি কৃষিযন্ত্রও ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একে অন্যের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করে। এর ফলে দৈনন্দিন জীবন হয়ে উঠছে আরো সহজ, স্মার্ট ও স্বয়ংক্রিয়।
বর্তমানে আইওটি ডিভাইস তথ্য আদান-প্রদানে টেলিকম নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভরশীল। ফাইভজি সেই সংযোগকে দ্রুততর, স্থিতিশীল ও অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন করে তুলছে। এতে একসঙ্গে বেশি সংখ্যক ডিভাইস তথ্য পাঠাতে ও গ্রহণ করতে পারে।
সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চলতি বছর বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ ফাইভজি নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে। তারা বলছেন, এ প্রবৃদ্ধি ভবিষ্যতে যোগাযোগ ব্যবস্থার ধরনই পাল্টে দেবে।
তবে বাজারে কিছু বড় চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ফাইভজি নেটওয়ার্ক স্থাপনে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন। পাশাপাশি নানা নিয়মকানুন, সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি এবং বিভিন্ন ডিভাইসের মধ্যে সমন্বয় জটিলতাও এ খাতকে চাপে ফেলছে।
তবু উন্নত সংযোগ, দ্রুত ডাটা আদান-প্রদানের সুবিধা ও স্মার্ট নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা শিল্প ও ব্যবসার উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে তুলবে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।