ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) গ্লোবাল গেটওয়ে কর্মসূচির আওতায় ২০২৭ সালের মধ্যে ৪০০ বিলিয়ন বা ৪০ হাজার কোটি ইউরোরও বেশি বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইন এই প্রকল্পকে চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’র বিকল্প উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন অনেক বিশ্লেষক।
গত বৃহস্পতিবার এক বক্তব্যে ভন ডের লেইন বলেন, এই বিনিয়োগের মাধ্যমে ইইউ উন্নয়নশীল দেশ বা গ্লোবাল সাউথের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে চায়। তিনি জানান, গ্লোবাল গেটওয়ে মূলত দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির একটি উদ্যোগ। এর লক্ষ্য হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবকাঠামো, জ্বালানি, পরিবহন, শিক্ষা ও গবেষণা খাতে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্ব গড়ে তোলা।
প্রাথমিকভাবে ২০২১ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময়ের জন্য ৩০০ বিলিয়ন বা ৩০ হাজার কোটি ইউরো বিনিয়োগের পরিকল্পনা ছিল, যার অর্ধেকই আফ্রিকা মহাদেশে ব্যয় করার কথা ছিল। তবে সাম্প্রতিক ঘোষণা অনুযায়ী, সেই লক্ষ্য বৃদ্ধি করে ৪০০ বিলিয়ন বা ৪০ হাজার কোটি ইউরোরও বেশি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভন ডের লেইন বলেন, এই কর্মসূচি শুধু উন্নয়ন সহায়তার প্রকল্প নয়, এটি একটি কৌশলগত অংশীদারত্ব। এর মাধ্যমে ইইউ নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের সরবরাহ চেইনে টেকসই বিকল্প গড়ে তুলতে পারবে। তিনি আরও জানান, ইইউ এখন ‘গ্লোবাল গেটওয়ে ইনভেস্টমেন্ট হাব’ নামে একটি নতুন কেন্দ্র চালু করছে। এটি হবে একক বিনিয়োগ-প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বিশ্বজুড়ে কোম্পানিগুলো তাদের বিনিয়োগ প্রস্তাব জমা দিতে পারবে।
গ্লোবাল গেটওয়ে প্রকল্পকে অনেক বিশ্লেষক চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’র বিকল্প উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন। ইউরোপীয় কমিশন বলছে, এই কর্মসূচির মাধ্যমে তারা একদিকে বৈশ্বিক দক্ষিণে উন্নয়ন সহায়তা জোরদার করবে। অন্যদিকে, ইউরোপের সবুজ রূপান্তর প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় খনিজ সম্পদের জন্য চীনের ওপর নির্ভরতা কমানো সম্ভব হবে।