সরকার দেশের বাণিজ্য সংগঠনের বিধিমালায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে টানা দুবার পদে থাকার পর একবার বিরতির বিধান বাতিল, পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ নির্ধারণ, ফি কমানোসহ বেশ কিছু সংশোধনী অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে দেশের প্রভাবশালী বাণিজ্য সংগঠনগুলোর আপত্তি বিবেচনায়।
গত ২০ মে ‘বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা-২০২৫’ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। এতে দেশের বাণিজ্য সংগঠনগুলোর গঠন, কার্যক্রম, নিবন্ধন, তদারকি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর থেকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ জোট সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) এবং দেশের বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠন কিছু বিধি সংশোধনের দাবি জানিয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় সংশোধনী প্রস্তাবনা তৈরি করেছে। গত মাসে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, নতুন বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি টানা দুবার নির্বাহী কমিটি বা পর্ষদে থাকলে এবার থেকে একবার বিরতি দিয়ে পুনরায় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। নিয়মটি ভবিষ্যতের পাশাপাশি অতীত সময়ের জন্যও প্রযোজ্য হবে। এই বিধান বাতিলের ফলে এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতারা পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
বর্তমান বিধি অনুযায়ী, ফেডারেশনসহ সব বাণিজ্য সংগঠনের সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, সহসভাপতি ও পরিচালকেরা সরাসরি সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হতেন। নতুন সংশোধনী অনুযায়ী, ফেডারেশন ছাড়া অন্য বাণিজ্য সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সহসভাপতি সরাসরি ভোট বা পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হতে পারবেন।
এবারের বিধিমালায় ফেডারেশন ও অন্যান্য সংগঠনের নির্বাহী কমিটি বা পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ ২৪ মাস নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এমসিসিআইতে পাঁচ যুগ ধরে ৩ বছরের মেয়াদ থাকে এবং প্রতি বছর এক-তৃতীয়াংশ পরিচালক অবসর নেন। সংশোধনী প্রস্তাবে মেয়াদ ২৪ বা ৩৬ মাস নির্ধারণের সুযোগ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সদস্য হওয়ার নিয়ম এবং বার্ষিক চাঁদা বৃদ্ধির বিধানও সংশোধন করা হবে। মন্ত্রণালয় আরও কিছু বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।