আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রায় ১২০ কোটি তরুণ কর্মক্ষম বয়সে পৌঁছাবে। কিন্তু বর্তমান প্রবণতা অনুযায়ী তৈরি হবে মাত্র ৪০ কোটি চাকরি। অর্থাৎ প্রায় ৮০ কোটি তরুণ কাজের বাইরে থাকতে পারে। এই ফারাক বৈশ্বিক অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগও দিতে পারে, নয়তো কর্মসংস্থানের অভাবে সামাজিক অস্থিরতা ও অভিবাসনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বার্ষিক সভার এগ্রিকানেক্ট ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “কর্মসংস্থান সৃষ্টি এখন বিশ্বব্যাংকের মূল লক্ষ্য। বেশিরভাগ চাকরি বেসরকারি খাত থেকে আসে, কিন্তু শুরুটা প্রায়শই সরকারি খাত থেকেই হয়। সরকারি খাত চাকরির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে, পরে বেসরকারি বিনিয়োগ ও উদ্যোক্তা নেতৃত্ব নেয়।”
অজয় বাঙ্গা জানান, চাকরি সৃষ্টি করার সবচেয়ে বড় সম্ভাবনা রয়েছে অবকাঠামো, কৃষি, স্বাস্থ্য, পর্যটন ও মূল্য সংযোজনকারী শিল্পে। তবে কৃষি খাত শুধু চাকরির ক্ষেত্র নয়, বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তারও মূল ভিত্তি। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৫০ কোটি ক্ষুদ্র কৃষক ৮০ শতাংশ খাদ্য উৎপাদন করে। কিন্তু তাদের অনেকেই বিদ্যুৎ, অর্থায়ন, বাজার সংযোগ ও প্রশিক্ষণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাংক মাঠ পর্যায়ে কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, বাজার সংযোগ তৈরি এবং কৃষকদের জমি বিক্রির বাধ্যবাধকতা রোধে ঋণ ও বীমা সুবিধা সম্প্রসারণে কাজ করছে।
২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাংক কৃষি ও কৃষিভিত্তিক খাতে বিনিয়োগ দ্বিগুণ করে প্রতি বছর ৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত ৫ বিলিয়ন ডলার বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অজয় বাঙ্গা বলেন, “আমরা চাই ছোট কৃষকরা উৎপাদনশীলতা ও আয় বাড়াক এবং তাদের একটি সংগঠিত বাজার কাঠামোর সঙ্গে যুক্ত করতে পারি। এটি টেকসই কর্মসংস্থানের পথ খুলবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি এখন কৃষিখাতের মূল শক্তি। মোবাইল ফোনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সরঞ্জাম কৃষকদের ফসলের রোগ শনাক্ত, সার ব্যবহারের পরামর্শ, আবহাওয়ার সতর্কতা এবং ডিজিটাল পেমেন্টে সাহায্য করছে। এতে তৈরি হচ্ছে ডিজিটাল ক্রেডিট ইতিহাস, যা ঋণ গ্রহণ সহজ করছে এবং সুদের হার কমিয়ে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে।”