চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে টিকে থাকতে দক্ষ ও প্রযুক্তিনির্ভর মানবসম্পদ তৈরি অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাসকীন আহমেদ।
গতকাল সোমবার রাজধানীর ডিসিসিআই মিলনায়তনে আয়োজিত ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে স্মার্ট মানবসম্পদ উন্নয়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এই মন্তব্য করেন। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর ড. এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ।
ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, “চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আর কোনো ভবিষ্যতের ধারণা নয়। এটি ইতোমধ্যেই আমাদের জীবন, কাজের ধরন ও অর্থনীতিতে প্রবেশ করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবট প্রযুক্তি, বৃহৎ তথ্যভাণ্ডার, ব্লকচেইন ও ইন্টারনেটের মতো প্রযুক্তি ইতোমধ্যেই কর্মক্ষেত্রের কাঠামো বদলে দিচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, এলডিসি-পরবর্তী প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে দক্ষ মানবসম্পদই হবে বাংলাদেশের প্রধান ভরসা। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, আগামী পাঁচ বছরে বৈশ্বিক চাকরির বাজারের এক-চতুর্থাংশ পরিবর্তিত হবে। ফলে যারা নতুন প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা অর্জনে পিছিয়ে থাকবে, তারা ঝুঁকিতে পড়বে।
তাসকীন আহমেদ বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে শুধু দক্ষতাই নয়, প্রয়োজন প্রযুক্তি ব্যবহার করার সক্ষমতা ও সৃজনশীল চিন্তা। দ্রুত পরিবর্তনশীল যুগে অভিযোজনক্ষমতাই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। দেশে প্রায় ১৭৬টি বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সীমিত। ফলে চাহিদাসম্পন্ন স্নাতকদের অনেকেই বিদেশে চলে যাচ্ছেন। এর কারণে দেশের শিল্পখাত দক্ষ জনবল সংকটে ভুগছে।
তিনি আরো বলেন, “এই ঘাটতি পূরণে প্রযুক্তিনির্ভর বিভাগ চালু, যুগোপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়াতে হবে। মানবসম্পদ উন্নয়নে ডিসিসিআই ইতিমধ্যেই দেশি-বিদেশি ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে। পাশাপাশি বেসরকারি খাতের কর্মীদের আপস্কিলিং ও রি-স্কিলিংয়ের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালাচ্ছে। দক্ষ মানবসম্পদই আমাদের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বাড়াবে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে অবস্থান আরও শক্তিশালী করবে।”

