বাংলাদেশ ভারতের আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত বিরোধ মেটাতে আন্তর্জাতিক সালিসি প্রক্রিয়া নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি জানিয়েছেন বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আদানি পাওয়ারও এক বিবৃতিতে একই ধরনের পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে।
ভারতের শিল্পপতি গৌতম আদানির নেতৃত্বাধীন আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কয়েক মাস ধরে বকেয়া বিল নিয়ে মতবিরোধ চলে আসছিল। ২০১৭ সালে দুই পক্ষের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির শর্তের কারণে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। আদানির এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘কিছু ব্যয় ও বিল তৈরির পদ্ধতি নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। তাই দুই পক্ষই বিরোধ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া চালু করতে রাজি হয়েছে। আমরা আশা করি এই প্রক্রিয়া দ্রুত, মসৃণ ও উভয়ের জন্য লাভজনক সমাধান দেবে।’
বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, ‘আলোচনা এখনও চলছে। চূড়ান্ত সমাধান না হলে আন্তর্জাতিক সালিসি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।’ আদানির গোড্ডা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে সরবরাহ করা বিদ্যুৎ দেশের মোট চাহিদার প্রায় এক–দশমাংশ পূরণ করে। এই কেন্দ্রের ক্ষমতা ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার গত ডিসেম্বরে অভিযোগ করেছিল, আদানি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির শর্ত পূরণ করেনি। ভারতের গোড্ডা কেন্দ্র ভারতের কাছ থেকে কর-ছাড় সুবিধা পেয়েছে, যা বাংলাদেশকে দেওয়া হয়নি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য আদানিকে ১৪.৮৭ টাকা (০.১২২০ ডলার) দিয়েছে। অন্য ভারতীয় কোম্পানির বিদ্যুৎ ইউনিটপ্রতি গড় ৯.৫৭ টাকায় আসে।
গত সপ্তাহে আদানি পাওয়ার জানিয়েছে, বাংলাদেশের কাছ থেকে তাদের পাওনা কমে এসেছে। মে মাসে বকেয়া প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার ছিল। বছরের শুরুর দিকে তা ২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছিল। বর্তমানে এটি ১৫ দিনের ট্যারিফ সমপরিমাণে নেমে এসেছে। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ‘আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতি অটুট রাখবে। নির্ভরযোগ্য, প্রতিযোগিতামূলক ও উচ্চমানের বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।’

