বাংলাদেশের এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশের) তালিকা থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি যাচাই করতে ঢাকায় আসছে জাতিসংঘের একটি বিশেষ মিশন। রোনাল্ড মোলেরুসের নেতৃত্বাধীন এই মিশন ১০ থেকে ১৩ নভেম্বর সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবে এবং বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণের স্বাধীন মূল্যায়ন প্রদান করবে। মূল্যায়নে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, উত্তরণের প্রভাব এবং মসৃণ উত্তরণ কৌশল বাস্তবায়নকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ করবে। তবে ব্যবসায়ী নেতারা দেশকে প্রস্তুতিমূলক অভাব দেখিয়ে উত্তরণ ৩–৫ বছর পেছানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
জাতিসংঘের এলডিসি-বিষয়ক কার্যালয় ‘ইউএন-ওএইচআরএলএলএস’ পরিচালিত। মিশনটি ঢাকায় আসার আগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও মতামত জমা দেওয়ার মাধ্যমে বৈঠকগুলো সফলভাবে সম্পন্ন হবে।
বাংলাদেশ ২০১৮ সালে মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ, জলবায়ু ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হয়ে এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করে। এরপর ২০২১ সালে পুনর্মূল্যায়ন করা হয়। ২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অনুমোদন দিলে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে এলডিসি শ্রেণি থেকে উত্তরণ করবে।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, “বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা জানতে জাতিসংঘ মিশন আসছে। আমরা বলছি না উত্তরণ পিছিয়ে যাক, আবার বলছি না পিছিয়ে দেওয়া ভালো হবে। বিষয়টি সম্পূর্ণ জাতিসংঘের উপর নির্ভর করছে।” অন্যদিকে, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো বলছে, উত্তরণ পিছিয়ে না দিলে উৎপাদনশীলতা, উচ্চ সুদ এবং বিদ্যুৎ–গ্যাসের সমস্যা বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে।
জাতিসংঘের মিশন বাংলাদেশের প্রস্তুতি, সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণের প্রভাব মূল্যায়ন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সুপারিশ দেবে। সরকারের লক্ষ্য দেশের সুবিধা ও প্রস্তুতি নিশ্চিত করে মসৃণ উত্তরণের পথ সুগম করা।

