সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণের দায়িত্ব পরবর্তী সরকারের হাতে থাকবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে, তবে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের দাম এখনও বাড়তি।
আজ রবিবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত ও অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। গত ২৭ জুলাই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো তৈরির জন্য পে কমিশন গঠন করা হয়। সাবেক অর্থসচিব ও পল্লী কর্ম–সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানকে প্রধান করে গঠিত এই কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ২০১৫ সালের পে স্কেল অনুযায়ী প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন।
দুই বছরের বেশি সময় ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে, যার ফলে মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন পে কমিশন গঠন করা হয়। অর্থ উপদেষ্টা জানান, খাদ্যপণ্যের মধ্যে চালের দাম এখন সহনীয় পর্যায়ে আছে, তবে যাতায়াত খরচ ও বাড়িভাড়া বেড়ে গেছে। সরকারের নানা পদক্ষেপের ফলে বাজার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি জানান, সরকার ইউরিয়া ও টিএসপি সার আমদানি, পাশাপাশি সেদ্ধ চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। খাদ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রাখতে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বলে জানান সালেহউদ্দিন আহমেদ। ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে সরকার আমন ধান সংগ্রহ শুরু করবে। এবার প্রতি কেজি ধান ৩৪ টাকা, আতপ চাল ৪৯ টাকা ও সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা দরে সংগ্রহ করা হবে। সরকারের লক্ষ্য ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধান ও আতপ চাল এবং ৬ লাখ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহ করা।
আইএমএফ ঋণ প্রসঙ্গ:
অর্থ উপদেষ্টা আরও জানান, আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচির ষষ্ঠ কিস্তির অর্থছাড়ের সিদ্ধান্ত নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর নেওয়া হবে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফের আরেকটি মিশন বাংলাদেশে এসে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করবে। তিনি বলেন, “আমরা আইএমএফকে জানিয়েছি, এখনই আমাদের কিস্তির দরকার নেই। তারা আগে মূল্যায়ন করুক। নির্বাচিত সরকার কতটা ঋণ নিতে চায়, তা ফেব্রুয়ারির মিশন আলোচনা করে ঠিক করবে।”
আইএমএফ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে বলেও জানান তিনি। সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “নির্বাচিত সরকারের জন্য আমরা আইএমএফ ঋণ ও সংস্কার সংক্রান্ত সব বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা তৈরি করে দেব।”

